হরতাল উঠল, তারেকের প্রত্যর্পণ চেয়ে চিঠি
নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিরোধী বিএনপি-জামাতে ইসলামি জোটের ডাকা দ্বিতীয় দফার ৬০ ঘণ্টা হরতাল বুধবার সন্ধ্যায় শেষ হয়েছে। আলোচনা শুরু না-হওয়ার জন্য সরকার ও বিরোধীরা একে অপরকে দোষারোপ করা ছাড়া বিষয়টি নিয়ে নতুন কোনও অগ্রগতি হয়নি। এই পরিস্থিতিতে দুর্নীতির একটি মামলার আসামি বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানকে দেশে ফেরাতে নতুন তৎপরতা শুরু করল বাংলাদেশ সরকার।
আদালতের পরোয়ানা-সহ প্রত্যর্পণের আর্জি জানিয়ে একটি চিঠি মঙ্গলবার কূটনৈতিক মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকারের ‘ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো’র কাছে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এর আগে জুনেও একটি চিঠি পাঠানো হয়েছিল। অর্থ পাচার ছাড়া শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলার একটি মামলারও আসামি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান। আগের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে পুলিশ হেফাজতে তাকার সময়ে মেরুদণ্ডে গুরুতর আঘাত পান তারেক। চিকিৎসার জন্য তিনি এখন লন্ডনে। সেখানে আইন নিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি বিএনপি-কে নেতৃত্বও দিচ্ছেন সাবেক সেনাশাসক জিয়াউর রহমানের এই পুত্র। বিএনপি-র কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কবির রিজভি বুধবার বলেন, তারেকের জনপ্রিয়তাকে ভয় পেয়েই সরকার তাঁকে নানা মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছে। নির্বাচনের আগে তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই নতুন করে তৎপরতা শুরু হয়েছে।
জানুয়ারিতে মেয়াদ ফুরোচ্ছে শেখ হাসিনা সরকারের। তার মধ্যেই বাংলাদেশে নির্বাচিত নতুন সরকার গঠন হওয়ার কথা। কিন্তু কোন সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে তা নিয়ে সরকার ও বিরোধী পক্ষের ঐকমত্য না হওয়ায় রাজনৈতিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলোচনার ভিত্তিতে একটি সর্বদলীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু বিএনপি চায় নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার। প্রধানমন্ত্রী ফোন করে বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়াকে আলোচনায় ডাকলেও সঙ্কট কাটেনি। নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে নেওয়ার শর্ত চাপিয়ে তারা আলোচনা এড়িয়ে হরতালের পথ নিয়েছে। এর মধ্যেই মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তা স্টিভ শ্যাবট ঢাকায় এসে বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বলেছেন, বাংলাদেশে সব পক্ষের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু ও অবাধ ভোটই তাঁদের কাম্য।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বুধবারও বলেছেন, সরকারের তরফে নিঃশর্ত আলোচনার প্রস্তাব দেওয়াই রয়েছে। বিরোধীরা এলেই তা শুরু হতে পারে। ইনু আশা প্রকাশ করেছেন, দ্বিতীয় দফার হরতাল কর্মসূচি শেষ করে এ বার নিশ্চয়ই তারা আলোচনায় বসার ফুরসত পাবে। উল্টো দিকে বিএনপি-র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বুধবারও বলেছেন, সরকার আবার আলোচনায় ডাকলে তাঁরা যাবেন। প্রধানমন্ত্রীর আগের আলোচনার প্রস্তাব সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য তিনি একটি নির্দিষ্ট দিন দিয়েছিলেন। বেগম জিয়া জানিয়েছিলেন, পূর্বনির্ধারিত হরতালের কর্মসূচি থাকায় ওই দিন আলোচনায় বসা যাবে না। সুতরাং, সেই প্রস্তাব খারিজ হয়ে গিয়েছে। সরকারকে আবার আলোচনায় ডাকতে হবে। এই পরিস্থিতিতে বিএনপি-র ওপর চাপ সৃষ্টির জন্যই তারেককে প্রত্যর্পণে নতুন করে উদ্যোগ শুরু করা হল বলে মনে করা হচ্ছে।
বিএনপি-জামাত জোটের পর পর দু’বার ডাকা ৬০ ঘণ্টার হরতালে অন্তত ২৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। বুধবার শেষ হওয়া দ্বিতীয় দফার হরতালে প্রাণ হারিয়েছেন ৬ জন। আহতের সংখ্যা প্রায় ৫০০। অজস্র বাড়ি-গাড়ি পুড়েছে। রেল লাইন উপড়ে, ট্রেনে আগুন লাগিয়েছে হরতালকারীরা। ফলে সন্ধ্যায় হরতাল উঠে গেলেও বাংলাদেশের জনজীবন স্বাভাবিক হতে পারেনি। বিএনপি নেতৃত্ব জানিয়েছেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে শীঘ্রই আবার তারা রাস্তায় নামছে।
সুতরাং আরও হরতালের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.