ভাঙা রাস্তার জন্য মোটরবাইক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল চারজনের। সোমবার রাতে প্রথম ঘটনাটি ঘটে জগদ্দলের কেউটিয়ায় কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে। পুলিশ জানিয়েছে, রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ নৈহাটিতে ঠাকুর দেখে মোটরবাইকে চেপে ফিরছিলেন তিন বন্ধু। ভাঙাচোরা এক্সপ্রেসওয়েতেও গতি বেশি ছিল বাইকের। অন্য গাড়ির চালকেরা জানান, জগদ্দলের কেউটিয়ার কাছে গর্ত বাঁচাতে গিয়ে উল্টোদিকের একটি দূরপাল্লার বাসের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় মোটরবাইকটির। ছিটকে পড়েন তিনজনেই। বাসটি তাঁদের পিষে দিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম মিঠুন মণ্ডল (২৭), কমল বিশ্বাস (৩৪) এবং তরুণ রায় (২৮)। তিনজনেই শ্যামনগরের বাসিন্দা। স্থানীয় বাসিন্দা ও অন্য গাড়ির চালকেরাই তিনজনকে ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তিনজনকেই মৃত বলে জানান। এ দিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বাসিন্দারা। অবরোধ করা হয় কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে। পরে পুলিশ কর্তাদের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে।
অন্যদিকে, সোমবারই রাত দু’টো নাগাদ ঘোলায় কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের কদমতলা মোড়ের কাছে মোটরবাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় সুমন দে (৩১) নামে এক বাইকআরোহীর। আগরপাড়ার উষমপুরের বাসিন্দা সুমনের দুই সঙ্গীও গুরুতর জখম হন। এক্ষেত্রেও ভাঙা রাস্তার জন্যই দুর্ঘটনা বলে দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের। পুলিশ জানিয়েছে, ট্রাকের ধাক্কায় মোটরবাইক থেকে ছিটকে পড়ে মৃত্যু হয় সুমনের।
দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে। বহু অভিযোগ, ক্ষোভ-বিক্ষোভেও সরকারের টনক নড়েনি। ঠিকাদারদের বরাত দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই রাস্তা সারানো হবে বলে শুধু আশ্বাসই দেওয়া হয়েছে কেএমডিএ-র পক্ষ থেকে। কিন্তু কাজ কিছুই হয়নি। কোথাও গর্ত বোজাতে খামচা খামচি করে কিছু পিচ নয় ঝামা ফেলা হয়েছে দায়সারা ভাবে। কিন্তু মাস ঘুরতে না ঘুরতে রাস্তার হাঁ মুখ দ্বিগুণ হয়েছে। তার মধ্যে আলো না থাকায় ভাঙা রাস্তায় নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে ছোট বড় সব গাড়ি। যদিও এই রাস্তায় যান চলাচলে কর নেওয়ায় কোনও খামতি নেই সরকারের।
রাস্তার শোচনীয় দশায় অবশ্য দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম যারপরনাই উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, ‘‘অনেকদিন ধরে রাস্তাটি খারাপ হয়ে আছে। যদি অবিলম্বে রাস্তা সারানো না হয় তাহলে ওই দফতরের মুখ্য বাস্তুকারকে সরিয়ে দেওয়া হবে। এ ভাবে চলতে পারে না।’’ কিন্তু সাধারণ মানুষ বা এ পথের গাড়ির চালকদের মুখ্য বাস্তুকারের অপসারণ নিয়ে মাথাব্যথা নেই। ভাল রাস্তাই একমাত্র দাবি তাঁদের। |