এ বারেও ডাক পেলেন না আজহার |
ইডেনে সচিনের জন্য সৌরভ-স্টিভ জুটি |
সচিন উৎসবে ইডেনে যখন বসবে চাঁদের হাট, তিনি থাকবেন বহু দূরে কোথাও।
কুড়ি বছর আগে সচিনের প্রথম ইডেন টেস্টে যিনি ছিলেন তাঁর অধিনায়ক, সেই মহম্মদ আজহারউদ্দিন এ বারও ব্রাত্য।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের কালো তালিকা থেকে আজহারের বেরিয়ে আসা নিয়ে ধোঁয়াশা না কি এখনও কাটেনি। এই যুক্তিতেই তাঁকে সচিন উৎসবে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণই জানাল না সিএবি। সোজা কথাটা সোজা করলে দাঁড়ায়, আজহারকে ডেকে নিয়ে এসে আর নতুন করে বিতর্কে জড়াতে চান না সিএবি কর্তারা। আইনের দরবারে তাঁর শাস্তি অবৈধ প্রমানিত হওয়ার পর কর্নাটক ক্রিকেট সংস্থা তাদের ৭৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম সেরা অথচ বিতর্কিত টেস্ট অধিনায়ককে ডেকেছিল। সিএবি অবশ্য কোনও ঝুঁকি নিল না। |
কে আসছেন না ইডেনে, এটাই এখন বড় প্রশ্ন। সিএবি-র আমন্ত্রিত প্রাক্তন ক্রিকেটাররা তো রয়েছেনই, এ ছাড়াও এই টেস্টে টিভির ধারাভাষ্যকারদের বক্সে তারকাদের ছটায় চোখ ধাঁধিয়ে যেতে পারে। সচিনের শেষ টেস্ট সিরিজের ‘আঁখো দেখা হাল’ শোনাতে সেখানে থাকবেন সুনীল গাওস্কর, কপিল দেব, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, রাহুল দ্রাবিড়, শেন ওয়ার্ন থেকে শুরু করে রবি শাস্ত্রী, ওয়াসিম আক্রম, রামিজ রাজা-সহ এক ঝাঁক অতীতের তারকা। চমক হিসাবে উড়িয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে স্টিভ ওয়কে। এর আগে কমেন্ট্রি বক্সে বসলেও স্টিভ সাধারণত বিশেষজ্ঞের মতামত দেন। ‘বল বাই বল’ ধারাভাষ্য দিতে সম্ভবত এই প্রথম দেখা যাবে তাঁকে।
সব কিছু ঠিকঠাক চললে সচিন ব্যাট করার সময় সৌরভ-স্টিভ ওয় পাশাপাশি বসে ধারাভাষ্য দিচ্ছেন, এমন বিরল দৃশ্য দেখার সৌভাগ্যও হতে পারে ক্রিকেটপ্রেমীদের। এই ইডেনেই এক যুগ আগে স্টিভকে টস করার সময় অপেক্ষায় রেখে বিতর্ক তৈরি করেছিলেন সৌরভ। যে ঘটনার কথা আজও বলেন প্রাক্তন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক। সচিনের বিদায়ী সিরিজ আবার এক মঞ্চে নিয়ে আসতে চলেছে দু’দেশের দুই কিংবদন্তি অধিনায়ককে।
স্টার স্পোর্টসের এক কর্তার মুখে শোনা গেল বীরেন্দ্র সহবাগ, হরভজন সিংহদের কমেন্ট্রি বক্সে হাজির করানোর পরিকল্পনার কথাও। কিন্তু রঞ্জি ট্রফির ম্যাচ ছেড়ে তাঁরা সচিন-উৎসবে সামিল হতে আসবেন? প্রশ্নটা রয়েই গেল। |
জনাকুড়ি তারকা ধারাভাষ্যকারের পাশাপাশি সিএবি-র আমন্ত্রণে ইডেনে উপস্থিত থাকবেন দিলীপ বেঙ্গসরকর এবং ভিভিএস লক্ষ্মণও। অনিল কুম্বলে পুরোপুরি সম্মতি না দিলেও তাঁর আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানালেন সিএবি শীর্ষকর্তারা। এক আন্তর্জাতিক সংগঠনের দূত হিসেবে ব্রায়ান লারারও আসা প্রায় পাকা।
আজহারকে আমন্ত্রণ জানানোর কথা আগে ভাবা হলেও শেষে সেই ভাবনায় সিলমোহর লাগাতে পারেননি বলে জানান সিএবি-র কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে। তাঁর বক্তব্য, “ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড যে হেতু এখনও আজহারের বিষয়টি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে আসেনি, তাই এই ব্যাপারে আমরাও কিছু ঠিক করতে পারিনি।” ১৯৯৩-এর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে সচিনের প্রথম ইডেন টেস্টে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আজহারের ১৮২-র ইনিংসই ভারতের আট উইকেটে জয়ের ভিত গড়ে তুলতে সাহায্য করেছিল। সে দিনের সেই জয়ের স্থপতিকে এই ঐতিহাসিক টেস্টে ব্রাত্য করে রাখার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সিএবি যুগ্মসচিব সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আজহারকে আমন্ত্রণ জানানোর কোনও যুক্তি খুঁজে পাচ্ছি না আমরা। বিসিসিআই এই ব্যাপারে কিছু না বললে আমরা কী করব?” কিন্তু কর্নাটক ক্রিকেট সংস্থা যে আজহারকে এনেছিল তাদের অনুষ্ঠানে? সুবীরবাবু বললেন, “সেটা ওদের ব্যাপার। ওরা যা বুঝেছে, করেছে। আমরা কেন ওদের অনুসরণ করব?”
|
ছবি: শঙ্কর নাগ দাস, পিটিআই |