লগান-এর ক্রিকেট ম্যাচটা দেখেও নখ কাটছিল: আমির |
বলিউডের ব্যস্ত অভিনেতা হয়েও আদ্যন্ত ক্রিকেট ফ্যান। সেই সঙ্গে সচিন অনুরাগীও বটে! তা এতটাই যে, দু’বছর আগে পেরি ক্রস রোডে সচিন তেন্ডুলকরের প্রতিবেশী হওয়ার জন্য বাংলো খুঁজতেও শুরু করেছিলেন!
সেই আমির খান বন্ধু সচিনের বিদায়লগ্নে আবেগরুদ্ধ। সিএনএন-আইবিএন-এ সাক্ষাৎকারে সে কথা গোপনও করেননি ‘লগান’-এর ‘ভুবন’। তেন্ডুলকর সম্পর্কে তাঁর মূল্যায়ন, “সচিন দেশের গর্ব।”
আমির বলছেন, “প্রথম সচিনকে দেখি শিবাজী পার্কের নেট প্র্যাকটিসে। একটা ছোট ছেলে সব বোলারকে খুব মারছিল। অন্য ক্রিকেটারদের থেকে জানতে চাইলাম, ছেলেটা কে? একজন জানায়, ছেলেটা সচিন তেন্ডুলকর। ও একদিন ভারতের হয়ে খেলবেই।”
আর প্রথম আলাপ? আমির জানাচ্ছেন সেটা তাঁর ছবি ‘আন্দাজ আপনা আপনা’-র মহরতে। “আমি আর সলমন আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম সচিনকে। ও এসেছিল। ওখানেই সচিনের সঙ্গে প্রথম কথা বলেছিলাম। তখন ও খুব লাজুক ছিল।” সঙ্গে এটাও জানাতে ভোলেননি, সচিনের ইনিংস গোটা ভারতের হতাশা কাটানোর একটা বড় দাওয়াই। আমির বলছেন, “সচিন যখনই মাঠে নামে তখনই গর্ববোধ হয়। সচিন সেঞ্চুরি পেলে গোটা দেশ খুশি। অফিসে, বাড়িতে কেউ তিরস্কৃত হলেও সে দিনই সচিন সেঞ্চুরি করলে প্রায় সব ভারতীয়ের জীবনেই আচমকা খুশি চলে আসে। সবাই দুঃখ ভুলে যায়।” |
গোটা দেশ জানে সচিন টেনশনে থাকলে দাঁত দিয়ে নখ কাটতে থাকেন। কিন্তু তা বলে ‘লগান’ ছবিতে ভুবনদের ক্রিকেট ম্যাচ দেখেও! মজার এই মুহূর্তটি জানাতে গিয়ে আমির বলেন, “সচিনকে ‘লগান’-এর স্পেশ্যাল শো দেখিয়েছিলাম। সিনেমার ক্লাইম্যাক্সে ক্রিকেট ম্যাচে যখন আমার দলের বিরুদ্ধে ব্রিটিশদের কোনও উইকেট পড়ছিল না, দেখলাম সচিন টেনশনে দাঁত দিয়ে নখ কাটছে।” এখানেই না থেমে আমির আরও বলছেন, “আমার মজা লাগছিল এই ভেবে যে, সচিন সিনেমার ক্রিকেট ম্যাচেও টেনশনে ভুগছে। তার পর যখন ব্রিটিশদের একটা উইকেট পড়ল, সচিন ‘আউট’ বলে চিৎকার করেও উঠেছিল।”
সচিন নিয়ে স্মৃতি হাতড়াতে গিয়ে এখানেই থেমে যাননি আমির। বলছেন, “সচিন অবসর নিলেও, ও সর্বদা আমাদের হৃদয়ে থাকবে। কারণ, ও একজন দুর্দান্ত ক্রিকেটার শুধু নয়, ভাল মানুষও।”
গত বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল তো বটেই, আইপিএলে সচিনের ‘মুম্বই ইন্ডিয়ান্স’-এর খেলা দেখতে প্রায়শই আমিরকে দেখা গিয়েছে গ্যালারিতে। তাঁর কথায়, “সচিনের ভবিষ্যদ্বাণী মুগ্ধ করার মতো। প্রথম আইপিএল ফাইনাল আমি সচিনের পাশে বসে দেখেছিলাম। সে দিন দেখেছিলাম, প্রতিটা বল কেমন হবেবাউন্সার না ইয়র্কার না স্লোয়ার তা বোলার বল করার আগেই বলে দিচ্ছিল সচিন। মাঠেও ঠিক তাই হচ্ছিল!” |
সুনীল গাওস্কর |
স্যর ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানের পর নিশ্চিত ভাবে সচিন তেন্ডুলকরই
হল সবচেয়ে বড় ঘটনা যা ক্রিকেট দেখেছে। |
টম মুডি |
গোটা ভারত মঙ্গলবার বিনিদ্র রজনী কাটাচ্ছে। কারণ,
সচিন শেষ সিরিজ খেলতে নামছে। |
ভিভিএস লক্ষ্মণ |
কলকাতায় যে উৎসব চলছে, সেটা সচিনকে উৎসাহই যোগাবে।
আর মাঠে নামার পর ওর ফোকাসটা ক্রিকেটই থাকবে। |
|
বন্ধুত্বের কথা জানাতে গিয়েও আমির মোহিত সচিনে। বলছেন, “যখনই সচিনের সঙ্গে দেখা হয় আমরা খাবার, ক্রিকেট আর সিনেমা নিয়ে কথা বলি। কখনও-সখনও আমরা টেবল টেনিসও খেলি। কিন্তু সেখানেও সচিন শক্ত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় সব সময়। হারতে চায় না কোনও মতেই।”
বলিউডের ‘গ্ল্যামার বয়ের’ ধারণা সচিনের বিদায়ে ক্রিকেটের গ্ল্যামারও কমবে বেশ খানিকটা। তবে সঙ্গে এটাও বলছেন, “সচিন আমাদের যা দিয়ে যাচ্ছে তা হাজার বছর পরেও বিরাজ করবে। ক্রিকেট থেকে অবসরের পরেও ও যাই করুক তাতে আমাদের নতুন করে গর্বিত করবে।” |