রাতে ব্যাঙ্কে অ্যালার্ম, হুলস্থূল হাসনাবাদে
বিপত্তি বাধাল ইঁদুর!
কালীপুজো দেখার ভিড়টা জমছিল সন্ধে থেকেই। বাজছিল মাইক। চলছিল হই-হুল্লোড়। রাস্তায় গাড়ির লম্বা লাইন।
রাত তখন ১১টা পেরিয়ে গিয়েছে। আচমকা সব শব্দকে ছাপিয়ে শোনা গেল অ্যালার্ম। প্রথমে কয়েক সেকেন্ডের জন্য। তার পরে একটানা। মিনিট খানেক বাজার পরে থামল সেই শব্দ।
কালীপুজোর আনন্দ তখন অনেকটাই ফিকে। এতক্ষণ ভিড় সামলাতে ব্যস্ত থাকা পুলিশের কপালে ভাঁজ পড়ল। চারপাশের লোকজন তটস্থ। অ্যালার্ম বেজেছে ব্যাঙ্কে। তা হলে কি ডাকাত পড়েছে? রব উঠল চারদিকে।
আর এই প্রশ্ন ঘিরেই সোমবার রাতে প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে হুলুস্থুল বাধল উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার হাসনাবাদের মুরারিশা চৌমাথা এলাকায়। ডাকাতেরা যাতে পালাতে না পারে সে জন্য রাস্তায় দাঁড় করিয়ে দেওয়া হল গাড়ি। বন্দুক উঁচিয়ে পাহারায় দাঁড়িয়ে পড়ল পুলিশ। শেষমেশ অবশ্য ডাকাতের খোঁজ মেলেনি। পুলিশ ও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হলেন, তাঁদের চিন্তায় ফেলে দেওয়া এই কাণ্ড ইঁদুরের। কোনও ইঁদুর নিশ্চয়ই ব্যাঙ্কের অ্যালার্মের ‘সেন্সর’-এর কাছাকাছি চলে এসেছিল। আর তার জেরেই অ্যালার্ম বেজে উঠেছে বলে মনে করছেন তাঁরা।
ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন সাতেক আগে সেখানকার দেওয়াল কেটে একটি ল্যাপটপ চুরির ঘটনা ঘটেছিল। সেই চুরির এখনও পর্যন্ত কোনও কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। সেই সময়ে অবশ্য ব্যাঙ্কের সিসি টিভি এবং অ্যালার্ম খারাপ ছিল। তার পরে পুলিশের কথামতো দিন দুয়েক আগে সিসিটিভি বসানো হয়। চালু করা হয় অ্যালার্ম। সোমবার রাতে সেই অ্যালার্মই বেজে উঠেছিল।
রাস্তায় তখন কয়েকশো মানুষ। এলাকার অনেকেই ব্যাঙ্কে দিন কয়েক আগের চুরির কথা জানতেন। তাই ব্যাঙ্ক থেকে অ্যালার্মের শব্দ শুনে তাঁরা চমকে ওঠেন। অনেকেই দাঁড়িয়ে পড়েন। নিমেষে পুলিশ ব্যাঙ্ক ঘিরে ফেলে। ঘটনাস্থলে বিশাল বাহিনী নিয়ে পৌঁছে যান বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাঁরা কোনও ডাকাতের খোঁজ পায়নি। ব্যাঙ্কের শাটারও ছিল বন্ধ। শেষমেশ ডেকে আনা হল ওই শাখার ম্যানেজার অমরেশ বিশালকে। তিনি চাবি নিয়ে এসে ব্যাঙ্ক খোলেন। সোমবার সকালে ব্যাঙ্কের তরফে ডেকে পাঠানো হয় অ্যালার্মের টেকনিশিয়ানদের।
অমরেশবাবু বলেন, “ব্যাঙ্কে ইঁদুর আছে জানতাম। কিন্তু তার জন্য যে এত কাণ্ড হবে বুঝিনি। অবশ্য টিকটিকি-আরশোলাও হতে পারে। টেকনিশিয়ানরাও বলেছেন, অ্যালার্মের সেন্সরের কাছে কোনও কিছু চলে আসার জন্য এই কাণ্ড হতে পারে।” একই বক্তব্য এসডিপিও-রও।
যদিও ওই রাতে শেষমেশ ব্যাঙ্কে ডাকাত না থাকায় হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন পুজো উদ্যোক্তারাও। ব্যাঙ্কের উল্টো দিকেই মুরারিশা ব্যবসায়ী সমিতির পুজো দেখে তখন বেরোচ্ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা সৌরেন পাল। তিনিই পুলিশকে পরিস্থিতির কথা ফোনে জানান।
সৌরেনবাবু বলেন, “রাস্তায় তখন অনেক লোক ছিল। সত্যিই যদি ব্যাঙ্কে ডাকাত থাকত, তা হলে পালানোর জন্য তারা বোমা-গুলি ছুড়ত। লোকজন হতাহত হতেন। একটা ভয় করছিল ঠিকই। যাই হোক, কিছু যে হয়নি, এটাই ভাল।” একটি পুজো কমিটির উদ্যোক্তা বলেন, “কিছু দিন আগে মিনাখাঁর একটি ব্যাঙ্কেও রাতে একই ঘটনা ঘটেছিল। সোমবার রাতে সে কথাই মনে পড়ছিল। এ ক্ষেত্রেও দেখা গেল ইঁদুর।”
মঙ্গলবারেও আগের রাতের কথা ঘুরেছে লোকজনের মুখে মুখে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.