কালীপুজো-দেওয়ালির ৪৮ ঘণ্টা পরেও শহরের বিভিন্ন এলাকায় নোংরা, আবর্জনা জমে থাকায় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরেও শহরের সেবক রোড, বিবেকানন্দ রোড, বর্ধমান রোড, স্টেশন ফিডার রোড, চার্চ রোডের মত গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় আবর্জনার স্তূপ চোখে পড়েছে। ব্যবসায়ী এবং বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতি বছর পুজোর আগে শিলিগুড়ি পুরসভা শহরের জঞ্জাল সাফাইয়ের জন্য বিশেষ পরিকল্পনা নেয় বলে শোনা যায়। এবারও নিশ্চয়ই তাই হয়েছিল। তার পরেও কেন এই হাল, সেই প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন শহরবাসী।
শুধু বাসিন্দারাই নন, সরব পুরসভার বিরোধী বাম ও তৃণমূল কাউন্সিলরেরা। তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর তথা প্রাক্তন মেয়র পারিষদ কৃষ্ণ পাল বলেন, “পুরসভার সঠিক পরিকল্পনার অভাবে কালীপুজোর দুই দিন পরে শহরের এই পরিস্থিতি হয়েছে। যাঁরা দায়িত্বে আছেন, তাঁরা পুরোপুরি ব্যর্থ। এরফল শহরবাসীকে ভুগতে হচ্ছে।” সিপিএম কাউন্সিলর তথা পুরসভার প্রাক্তন মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল) মুকুল সেনগুপ্ত বলেন, “শুধু শহরের প্রধান রাস্তাগুলি নয়, অলিগলিতে আবর্জনা চোখে পড়েছে। আমার নিজের ওয়ার্ডে ঠিকমত সাফাই হয়নি। পুজোর আগে বোর্ড মিটিঙে বিষয়গুলি মাথায় রাখার জন্য পুর কর্তৃপক্ষকে বলেছিলাম। আসলে ওঁরা তো আমাদের কথা কান দেয় না। তাই যা হওয়ার হয়েছে।” |
পুরসভা সূত্রের খবর, গড়ে শিলিগুড়ি শহরে প্রতিদিন ৩৫০ মেট্রিক টন ময়লা, আবর্জনা তৈরি হয়। পুজোর মরশুমে তা বেড়ে যায়। দুর্গাপুজোর সময় পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৫০০ মেট্রিক টনের মত। আর কালীপুজো দেওয়ালির সময় তা দাঁড়ায় প্রায় ৮০০ মেট্রিক টনের মত। বিশেষ করে সব্জি বাজারের নোংরা ছাড়াও কলাগাছ, দেবদারু গাছের পাতা এবং বাড়ির ঘাস, গাছপালার জঞ্জালের পরিমাণ বেড়ে যায়। বর্তমানে পুরসভার অধীণে নিজের এবং ভাড়ার গাড়ি মিলিয়ে সাফাইয়ের জন্য ৫০টি গাড়ি রয়েছে। সঙ্গে ব্যবহার করা হয় ৬টি ক্রেন বা জেসিভি মেশিন। যদিও এ দিনই একটি ক্রেনও খারাপ হয়ে গিয়েছে।
বাসিন্দারা জানান, এ দিন সকাল থেকে ওয়ার্ডের অলিগলিতে সাফাই কর্মীদের একাংশের দেখা মিললেও বড় রাস্তাগুলির আবর্জনা খুবই কম পরিস্কার হয়েছে। বিশেষ করে কলাগাছ, পাতা এবং আবর্জনার স্তূপ থেকে দুর্গন্ধ এবং দূষণ ছড়াতে থাকে। বেলা বাড়তে কয়েকটি এলাকায় বড় সাফাইয়ের ট্রাকের দেখা মেলে। শহর কালীপুজোর ৪৮ ঘণ্টা পরেও শহর যে পুরোপুরি পরিস্কার করা যায়নি তা মেনে নিয়েছেন পুরসভার মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল) স্বপন চন্দ। তিনি বলেন, “আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। এ দিন ভোর থেকে বিকাল অবধি সাফাইয়ের কাজ হয়েছে। সেবক রোড থেকে শালুগাড়া, কয়েক কিলোমিটার এই বাণিজ্যিক এলাকার সাফাই করতে অনেক সময় লেগেছে। আজ, বুধবার দুপুরের মধ্যে গোটা শহর পরিষ্কার হয়ে যাবে।”
তিনি জানান, শহরের সাফাইরে পাশাপাশি সমস্ত ছট পুজোর জন্য সমস্ত নদীঘাট পরিষ্কারের কাজ এদিন দুপুর থেকেই শুরু করা হয়েছে। তাঁর দাবি, “প্রতিটি গাড়িকে দ্বিগুণ কাজ করানো হয়েছে। তবে পুরবোর্ডের বিরোধিতা করার জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এসব অভিযোগ করা হচ্ছে। |