নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে, ডিসেম্বরে
বাগনানে রেল উড়ালপুল চালুর ইঙ্গিত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বাগনান |
লেভেল ক্রসিংয়ে নিত্য যানজট, দীর্ঘ প্রতীক্ষায় তিতিবিরিক্ত সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল একটি উড়ালপুলের। সেই দাবি মেনে দশ বছর ধরে চলছে নির্মাণকাজ। বর্তমানে ওই কাজ একেবারে শেষ পর্যায়ে। সব কিছু ঠিকঠাক চললে চলতি বছরের শেষে হাওড়া-খড়্গপুর শাখার বাগনানে ওই রেল উড়ালপুল চালু হতে চলেছে বলে ইঙ্গিত মিলেছে রাজ্যের পূর্ত (সড়ক) দফতর এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেলের তরফে।
পূর্তমন্ত্রী সুদর্শন ঘোষদস্তিদার বলেন, “বাগনানে রেলওয়ে উড়ালপুল তৈরির কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক। উড়ালপুলটি নিয়ে আমরা প্রতি সপ্তাহেই পর্যালোচনা করি। ডিসেম্বরের মধ্যেই কাজটি শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তার পরেই তা সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হবে। নির্ধারিত সময়সীমা মেনেই সমস্ত কাজকর্ম চলছে।” |
ক’দিন বাদেই এই সেতুর উপর দিয়ে চলবে গাড়ি।—নিজস্ব চিত্র। |
দক্ষিণ-পূর্ব রেল এবং রাজ্যের পূর্ত (সড়ক) দফতরের যৌথ উদ্যোগে উড়ালপুলটি তৈরি হচ্ছে। তাদের তরফে নির্মাণকাজের সিংহভাগ হয়ে গিয়েছে বলে দাবি পূর্ত (সড়ক) দফতরের। বাকি রয়েছে শুধু রেলপথের উপরের অংশের কাজ। দক্ষিণ-পূর্ব রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই কাজ তারাই করবে। তার জন্য বড়জোর ৮-১০ ঘণ্টা লাগার কথা। তবে, ওই সময়ের জন্য ট্রেন চলাচল পুরো বন্ধ রাখতে হবে। হাওড়া-খড়্গপুর শাখা ব্যস্ত রেলপথ। ফলে, কী ভাবে রেল চলাচল কয়েক ঘণ্টার জন্য পুরো বন্ধ রাখা যায়, তা রেলের বাস্তুকারের চিন্তাভাবনা করছেন বলে দক্ষিণ-পূর্ব রেল সূত্রের খবর।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সৌমিত্র মজুমদার বলেন, “নির্মাণকাজের জন্য কোন সময়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখলে যাত্রীদের অসুবিধা কম হবে সে বিষয়টি মাথায় রেখেই আমাদের পরিকল্পনা করতে হচ্ছে। আশা করছি, এ মাসেই কোনও এক দিন কয়েক ঘণ্টার জন্য ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখে ওই কাজ করা হবে। এ ব্যাপারে বিজ্ঞাপন দিয়ে যাত্রীদের জানিয়ে দেওয়া হবে। ওই কাজ হয়ে গেলেই উড়ালপুল চালু করে দেওয়া যাবে।” পূর্ত (সড়ক) দফতরের এক বাস্তুকার বলেন, “রেল তার অংশটুকু জুড়ে দিলে আমাদের অংশে যেটুকু পড়েছে তার সঙ্গে রেলের অংশটি মেলানো হবে। এই কাজটি কতটা সুষ্ঠু ভাবে করা যায়, সে ব্যাপারে আমরা রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।”
বছর দশেক আগে এই উড়ালপুলটি তৈরির কাজ শুরু হলেও জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতার কারণে রাজ্য সরকারের কাজের অগ্রগতি প্রথম দিকে কার্যত হয়নি। অন্য দিকে, তাদের অংশে স্তম্ভ-সহ অন্যান্য অংশের কাজ রেল অনেক আগেই সেরে ফেলে। তবে, জমির সমস্যা মিটে যাওয়ায় ২০১০ সালের শেষের দিকে পূর্ত (সড়ক) দফতর জোরকদমে কাজ শুরু করে। ২০১২ সালের মধ্যেই কাজটি শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু নকশায় কিছু ত্রুটি ধরা পড়ায় কাজটি ফের বন্ধ হয়ে যায়। সেই ত্রুটি অবশ্য সংশোধন করে কাজ শুরু করেছে রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতর। এর ফলে অবশ্য রাজ্য সরকারের খরচও বেশ বেড়ে যায়।
|