নতুন সাজে সেজে উঠছে নজরুল মঞ্চ। সাড়ে ১০ মিটার উঁচু এই প্রেক্ষাগৃহের মঞ্চ হবে নতুন করে। শীতাতপনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ছাড়াও থাকবে উচ্চ মানের শব্দব্যবস্থা। রবীন্দ্র সরোবরের এই অনুষ্ঠানস্থলটিকে কলকাতার সবচেয়ে আকর্ষণীয় প্রেক্ষাগৃহ করে তুলতে ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই প্রথম এ ব্যাপারে উদ্যোগী হন।
১৯৮০ সালে দক্ষিণ কলকাতায় ‘মুক্তমঞ্চ’ নামে সাড়ে তিন হাজার আসনের এই প্রেক্ষাগৃহ তৈরি করে কেআইটি। এর পরে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পরামর্শে ‘মুক্তমঞ্চ’-এর নাম বদল করে নাম রাখা হয় নজরুলের নামে। ১৯৯১ সালে রাজ্য সরকার আয়োজিত চলচ্চিত্র উৎসবের সময়ে এর মঞ্চের উপর ধাতব আচ্ছাদন দেওয়া হয়েছিল। তবে নয়া ব্যবস্থায় এ বার ওই আচ্ছাদন এবং গ্যালারির মাঝের অংশও পুরো ঢেকে দেওয়া হবে। পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কেএমডিএ-কে। কাজ শেষ হতে ৬ মাস লাগার কথা।” প্রকল্প রূপায়ণের জন্য ৭ সেপ্টেম্বরের পর থেকে ওই মঞ্চে অনুষ্ঠান বন্ধ আছে। |
তবে নতুন ব্যবস্থায় প্রেক্ষাগৃহে আসনসংখ্যা কমে যাবে প্রায় এক হাজার। নয়া প্রেক্ষাগৃহের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ হবে ৬৪ মিটার ও ৭৪ মিটার। স্থপতি পলাশ মৈত্র বলেন, “প্রায় আড়াই হাজার আসন থাকবে এখানে। পুরনো আসন বাতিল করা হচ্ছে শব্দবিন্যাসের কথা মাথায় রেখে।” পুরমন্ত্রী চেয়েছিলেন ভিতর থেকে বাইরের দৃশ্য দেখার জন্য স্বচ্ছ আবরণে ঢাকা হোক মঞ্চ। এ কথা জানিয়ে পলাশবাবু বলেন, “সে ক্ষেত্রে ভিতরে শব্দের গুণগত মান মার খেত। তাই ধাতব পাত দিয়েই খোলা অংশ ঢাকতে হচ্ছে।”
এ ছাড়া, বর্তমানে এই প্রেক্ষাগৃহের ভিতরে যাতায়াতের জন্য ৬টি পথ থাকলেও আপৎকালীন সতর্কতার জন্য তৈরি হচ্ছে আরও তিনটি নতুন পথ। রাখা হচ্ছে বাড়তি অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাও। কেএমডিএ-র সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার দেবব্রত ঘোষ বলেন, “গোটা কাজটি হবে দু’টি পর্যায়ে। মঞ্চ-সংলগ্ন বিভিন্ন হাঁটাপথেরও মানোন্নয়ন হবে। তবে কোনও গাছ কাটা হবে না।”
কলকাতায় এখন পর্যন্ত আধুনিক প্রেক্ষাগৃহ বলতে সায়েন্স সিটি, যার আসনসংখ্যা ১৭০০। ১৯৬৫ সালে তৈরি রবীন্দ্র সদনের আসনসংখ্যা ১১০০। এ দিক থেকে এ শহরে অনুষ্ঠানের জন্য নয়া সাজের নজরুল মঞ্চের বিশেষ চাহিদা থাকবে বলে মনে করছেন কেএমডিএ কর্তারা। উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজ্য সরকারের নির্দেশে কেআইটি অহীন্দ্র মঞ্চের মানোন্নয়ন করেছে। দক্ষিণ কলকাতার প্রায় পরিত্যক্ত এই মঞ্চটির আধুনিকীকরণের জন্য খরচ হয়েছে প্রায় পৌনে চার কোটি টাকা। |