|
|
|
|
পাঁচ দিনের ‘তিওহার’ শুরু পাহাড়ে
রেজা প্রধান • দার্জিলিং |
প্রথা মেনে সমারোহে ‘কুকুর-পুজো’ হল দার্জিলিঙে। পাহাড়ে দেওয়ালির সময়ে ৫ দিন ধরে উৎসব হয়। স্থানীয় মানুষ যাকে ‘তিওহার’ বলে থাকেন। ওই উৎসবের প্রথম দিন ‘কাক’কে পুজো করা হয়ে থাকে। দ্বিতীয় দিন, কুকুরকে পুজো করা হয়। গত শুক্রবার ছিল ওই তিওহারের প্রথম দিন। যদিও স্থান-কাল-পাত্র ভেদে উৎসবের রীতি, রেওয়াজ কিছু বদলে যায়। পাহাড়ের বাসিন্দারা জানান, কথিত রয়েছে দীর্ঘ বনবাসের পর রাম, লক্ষ্মণ এবং সীতা অযোধ্যায় ফিরে আসেন। তাঁরা যে জঙ্গল থেকে ফিরে আসছেন তা অযোধ্যাবাসী জানতে পারেন কাক ও কুকুরদের মাধ্যেই। তাই এই কদিন তাদের পুজো করা হয়। তবে অন্য মতও রয়েছে। প্রবীণদের মতে, “কাক মৃত্যুর দূত। তাই ওঁদের মারা যায় না। ওঁরা জীবনের জল খেয়ে নেয়। তাই ওদের পুজো করে সন্তুষ্ট রাখতে হয়।” দার্জিলিং, কালিম্পং ও কার্শিয়াঙের তিন মহকুমায় সর্বত্র দীর্ঘদিন ধরে এই উৎসব প্রচলিত রয়েছে। যারমধ্যে ‘কাক তিওহার’ অন্যতম। দীপাবলি বা কালীপুজোর আগের দিন পাতার থালায় রকমারি খাবার ভোরবেলা বাড়ির সামনে কাকদের জন্য রাখা হয়। এই খাবার দেওয়ার আগে অবধি বাড়ির কেউ খাবার বা জল পর্যন্ত খান না। কাকদের পরেই পালা কুকুরদের। শনিবার কুকুরদের পুজো হয়েছে। বাসিন্দাদের জানান, কুকুরদেরও অনেকে ধ্বংস দেবতা, ভৈরব হিসাবে পুজো করে থাকেন। একে বলা হয় ‘কুকুর তিওহার’। সাতসকালে প্রথমে কুকুরদের স্নান করানো হয়। পরে কপালে লাল তিলক কেটে গলায় ফুলের মালা পরানো হয়। সবশেষে তাদের নানা খাবার খাওয়ান বাড়ির লোকেরা। বাড়িতে কুকুর না থাকলে রাস্তার কুকুরকে টিকা, মালা পরিয়ে ভক্তিমনে খাবার দেন বাসিন্দারা। তিওহারের তৃতীয় দিন রবিবার হয় লক্ষ্মীপুজো। চতুর্থ দিনে গোবর্ধন পুজো। এই পুজোয় গোবার দিয়ে ছোট পাহাড়ের আকৃতি তৈরি করা হয়। কথিত রয়েছে, কৃষ্ণ গোবরধন পর্বত তুলে নিয়ে পৃথিবীবাসী এবং গরুদের বন্যা-প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন। আজ, সোমবার এই পুজো হবে। উৎসবের শেষ দিন মঙ্গলবার পাহাড়ে পালিত হবে ‘ভাইটিকা’। বোনেরা দাদা এবং ভাইয়ের মঙ্গলকামনা করে উৎসব পালন করে। মালা পড়িয়ে দাদা-ভাইয়ের পুজো করেন পাহাড়িরা। |
|
|
|
|
|