বরাদ্দ আইএপি-তে
জঙ্গলমহলের উন্নয়নে দুই অর্থবর্ষে মিলবে ৬০ কোটি
মাওবাদী এলাকার উন্নয়নে বিশেষ প্রকল্প ‘ইন্টিগ্রেটেড অ্যাকশন প্ল্যান’ (আইএপি)-এ পরপর দুই আর্থিক বছরে ৬০ কোটি টাকার বরাদ্দ নিশ্চিত করল কেন্দ্রীয় সরকার। তবে এক সঙ্গে এই অর্থ মিলবে না। ধাপে ধাপে ১০ কোটি করে ওই টাকা দেওয়া হবে। ৭৫ শতাংশ খরচের হিসাব দিতে পারলেই মিলবে পরের ধাপের টাকা। তা ছাড়া এ বার খরচের ক্ষেত্রে একটি শর্তও আরোপ করা হয়েছে। প্রাপ্য টাকার ১০ শতাংশ অর্থ খরচ করতে হবে ‘স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’-এ। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, সরকারি নির্দেশিকা মেনেই প্রকল্প রূপায়ণে পদক্ষেপ করা হবে।
মাও-উপদ্রুত এলাকায় উন্নয়নের লক্ষ্যে আইএপি শুরু করেছিল কেন্দ্র। ২০১০-১১ আর্থিক বছর থেকে এই প্রকল্প শুরু হয়। প্রথমে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দেয়, এই প্রকল্পে ‘চোখে দেখা যায়’ এমন প্রকল্প রূপায়ণ করতে হবে। অর্থাৎ পানীয় জল, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, সেচ খাল প্রভৃতি কাজ করতে বলা হয়েছিল। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন প্রকল্পে প্রশিক্ষণ দেওয়া, আলোচনা সভা করা প্রভৃতি বিষয়ে প্রচুর টাকা খরচ করা হত। তাতে আখেরে যে কাজের কাজ কিছুই হত না, তা প্রশাসনিক কর্তারাও বুঝেছিলেন। তাই কেন্দ্রীয় সরকার ‘চোখে দেখা যায়’ এমন প্রকল্প রূপায়ণের নির্দেশ দিয়েছিল। এই প্রকল্পে ২০১০-১১ আর্থিক বছরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ২৫ কোটি টাকা পেয়েছিল। পরের দু’টি আর্থিক বছর অর্থাৎ ২০১১-২০১২ ও ২০১২-২০১৩ আর্থিক বছরে ৩০ কোটি করে ৬০ কোটি টাকা পেয়েছিল।
আইএপির অর্থে জামশোলে তৈরি হয়েছে কমিউনিটি হল।—নিজস্ব চিত্র।
৩ বছরের পাওয়া ৮৫ কোটি টাকার মধ্যে ৭১ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা ইতিমধ্যেই খরচ হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ প্রাপ্য টাকার ৮৩.৭৩ শতাংশ খরচ হয়েছে। ওই টাকায় মোট ২০৯০টি প্রকল্প করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। যার মধ্যে ১৯০৪টি প্রকল্প রূপায়িত হয়ে গিয়েছে বলেও প্রশাসনের দাবি। অর্থাৎ ৯১ শতাংশ কাজ শেষ। স্বাভাবিকভাবেই চলতি আর্থিক বছরের টাকা চেয়েও আবেদন জানানো হয়ে গিয়েছিল আগেই। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই চলতি আর্থিক বছরের ১০ কোটি টাকা এসেছে। দ্রুত সেই টাকায় প্রকল্প রূপায়ণে পদক্ষেপ করা হবে।
এই টাকায় এত দিন স্কুলের অতিরিক্ত ক্লাসঘর তৈরি, সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ, কমিউনিটি হল, নলকূপ তৈরি, অঙ্গনওয়াড়ি বাড়ি তৈরি, মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরি, ঢল বাঁধ, সেচ খাল তৈরি, স্কুল হস্টেল নির্মাণ-সহ বিভিন্ন কাজ করা হত। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনও তা-ই করে এসেছে। কিন্তু এ বার তারই সঙ্গে ১০ শতাংশ অর্থ স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামে খরচ করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তার জন্যও পরিকল্পনা গ্রহণ করছে জেলা প্রশাসন। প্রশাসন জানিয়েছে, এই প্রকল্পে এ বার উৎসাহী যুবক-যুবতীদের মোটর ড্রাইভিং, টেলারিং, শালপাতার থালা তৈরি, টিভি ও মোবাইল রিপেয়ারিং-সহ বিভিন্ন কাজ হাতে কলমে শেখানোর ব্যবস্থা করা হবে। যাতে কাজ শিখে তাঁরা নিজেরাই রোজগার করতে পারেন। কারও টাকা থাকলে তিনি নিজেও দোকান করতে পারবেন, নতুবা অন্যের দোকানে কাজ করেও অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে এখন ঋণ দেওয়া ছাড়াও নানা ধরনের সরঞ্জাম দেওয়া হয়ে থাকে। সেলাই মেশিন, শালপাতার থালা তৈরির যন্ত্র প্রভৃতি। যাঁরা ওই কাজ শিখবেন, তাঁদের ওই সমস্ত প্রকল্প থেকে ভবিষ্যতে যাতে ঋণ দেওয়া যায় সে ব্যাপারেও পরিকল্পনা রয়েছে প্রশাসনের।
প্রশাসন সূত্রে খবর, এখন প্রধান লক্ষ্য দ্রুত প্রকল্প রূপায়ণ। যাতে পরপর দু’টি আর্থিক বছরের ৬০ কোটি টাকা থেকে জেলা বঞ্চিত না হয়। এমনিতেই জঙ্গলমহলের উন্নয়নের জন্য নানা প্রকল্পে টাকা আসে। তার উপরে এই ৬০ কোটি টাকা পেলে আরও অনেক কিছুই করা যাবে বলে প্রশাসনিক কর্তাদের আশা।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.