গভীর রাত থেকে কাঁপল শহর, বহু শব্দবাজিও আটক
কালীপুজোর রাতে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু শব্দবাজি উদ্ধার করল পুলিশ। শনিবার গভীর রাতে শুধু কাটোয়া থেকেই ২৫ কিলোগ্রাম নিষিদ্ধ বাজি মিলেছে। শব্দবাজির দাপট রুখতে নজরদারির ব্যবস্থা করেছিল পুলিশ। কিন্তু শনিবার গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত শব্দবাজির তাণ্ডব চলেছে বলে অভিযোগ বর্ধমান শহরের বাসিন্দাদের। যদিও পুলিশ জানায়, কেউ কোনও অভিযোগ দায়ের না করায় কাউকে ধরা যায়নি।
শনিবার রাতেই জুয়া খেলার অভিযোগে জেলা জুড়ে মোট ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার টাকা। পুলিশ জানায়, বর্ধমান শহর থেকে ৮ জন, কাটোয়ায় ৭ জন, কালনায় ৪ জন ও ভাতার থেকে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তবে গত বারের তুলনায় কালীপুজোর রাতে এ বছর আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে শব্দবাজির দাপট অনেকটা কম ছিল বলে দাবি করেছে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। নানা জায়গায় বসানো দূষণ পরিমাপের যন্ত্র থেকেই এই তথ্য মিলেছে বলে জানানো হয়েছে। শনিবার রাতে শব্দবাজি সংক্রান্ত কোনও অভিযোগও জমা পড়েনি বলে পর্ষদ ও পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে। তবে দীপাবলি ও তার পরের রাতে শব্দদানবের তাণ্ডব ফিরে আসে কি না, সেটাই এখন আশঙ্কা ওই দুই শহরের বাসিন্দাদের।
পুলিশ কমিশনারেট ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরে রাতভর পর্ষদের কন্ট্রোল রুম খোলা ছিল। পুলিশ ও পর্ষদের যৌথ উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ দল ঘুরে বেড়িয়েছে শহরে। আসানসোলে ৫টি জায়গায় দূষণ পরিমাপের যন্ত্র বসিয়েছিল পর্ষদ। কিন্তু কোনও জায়গায় শব্দের কম্পাঙ্ক মাত্রা ছাড়ায়নি বলে জানিয়েছে তারা। শব্দবাজি নিয়ে একটিও অভিযোগ জমা পড়েনি পর্ষদের ঘরে। পর্ষদের দুর্গাপুর অফিসের এক আধিকারিক জানান, দু’একটি বিক্ষিপ্ত ক্ষেত্র ছাড়া কোথাও শব্দবাজি মাত্রা ছাড়ায়নি। কোনও ঘটনার খবর পেলেই আমাদের দল গিয়ে বাজি ফাটানো বন্ধ করেছে।
পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, দীপাবলিতে বাজি পোড়ানোর ফলে বাতাসে কী ধরনের প্রভাব পড়ে তা ২০০৯ সাল থেকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। বাজি পুড়লে বাতাসে সালফার-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বাড়ে। ২০১১ সালের হিসেব বলছে, কালীপুজোর রাতে বেনাচিতির বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে সালফার-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ ছিল ২৬.৩ মাইক্রোগ্রাম, বিসি রায় রোডে ২৪.৪ এবং বিধাননগরে ২০.২ মাইক্রোগ্রাম। সেখানে ২০১২ সালের কালীপুজোর রাতে শহরের প্রতি ঘনমিটার বাতাসে সালফার-ডাই-অক্সাইডের গড় পরিমাণ ছিল ১০.১২ মাইক্রোগ্রাম। পর্ষদের ওই আধিকারিক বলেন, “এ বার এখনও হিসেব সম্পূর্ণ হয়নি। তবে মাত্রা যে বেশ কিছুটা কমবে, সে ব্যাপারে আমরা একপ্রকার নিশ্চিত।”
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আসানসোল শাখার এক আধিকারিক জানান, আসানসোলের বস্তিন বাজার, আপকার গার্ডেন, রানিগঞ্জ, হিরাপুর, বরাকর, নিয়ামতপুর এলাকায় বিশেষ নজরদারি চালানো হয়েছে। এডিসিপি (সেন্ট্রাল) সুরেশ চাডিয়া জানান, শব্দবাজি প্রতিরোধে নজর রাখা হচ্ছে। কোনও অভিযোগ মেলেনি। শব্দবাজি নিয়ে কোনও অভিযোগ না মেলায় পর্ষদ এতটাই অবাক যে এক কর্তা বলেই ফেলেন, “যা হল তা প্রায় অপ্রত্যাশিত!”
শহরবাসীর আতঙ্ক অবশ্য যাচ্ছে না। দুর্গাপুরের বি-জোনের বিদ্যাপতির বাসিন্দা কিঙ্কর দাস রবিবার বিকেলে বলেন, “গত বার শব্দবাজির দাপটে টেকা দায় উঠেছিল। এ বার এখনও পর্যন্ত অন্তত সে রকম হয়নি।” বেনাচিতির দীপঙ্কর বাগচিরও বক্তব্য, “আগামী দু’রাতও শনিবারের মতো পরিস্থিতি থাকলে বাঁচি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.