জলে ভেসেছে দুর্গাপুজো, চুটিয়ে মজা দীপাবলিতে
র্ষা পিছু না ছাড়ায় দুর্গাপুজোয় ঠাকুর দেখা মাটি হয়েছিল অনেকেরই। কিন্তু আবহাওয়া ভাল থাকায় সেই দুঃখ ভুলে দলে দলে পথে নামলেন হাজার হাজার দর্শনার্থী। শনিবার রাত পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে দর্শনার্থীরা পুজো দেখেন। একই চিত্র দেখা গেল রবিবারেও।
রবিবার সকাল থেকেই প্রতিমা দেখতে দর্শনার্থীদের ঢল নামল উলুবেড়িয়ার খলিসানিতে। উলুবেড়িয়ার এই গ্রামেই রয়েছে শতাব্দী প্রাচীন কালীমন্দির। এই কালীমন্দিরকে কেন্দ্র করেই খলিসানি ছাড়াও আশেপাশের বাসুদেবপুর, তেহট্ট-কাঁটাবেড়িয়া, দশভাগা, বলরামপোতা, শ্যামসুন্দরচক প্রভৃতি ১০টি গ্রামে অন্তত ২০০টি সর্বজনীন কালীপুজো হয়েছে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকটি পুজো আলোকসজ্জা, মণ্ডপ বা প্রতিমা তৈরির মুন্সিয়ানায় টেক্কা দিচ্ছে একে অপরকে।
বাগনানের ইয়ুথ ক্লাবের মণ্ডপ। —নিজস্ব চিত্র।
এই সব পুজোগুলির একটি বৈশিষ্ট্য আছে। প্রতিটি পুজো কমিটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করে প্রথমে আসে খলিসানি কালীমন্দিরে। এখানে পুজো দিয়ে তবেই তারা নিজেদের পুজো শুরু করে। বিভিন্ন পুজো কমিটির কর্তারা জানান, বহু বছর ধরে প্রথাটি তাঁরা অনুসরণ করে আসছেন।
এখানকার উল্লেখযোগ্য পুজোগুলির মধ্যে রয়েছে নেতাজি সংগ্রামী সঙ্ঘ, আর জি পার্টি, সত্যনারায়ণ শান্তি সঙ্ঘ, ছাত্র সঙ্ঘ, শুড়িখালি শান্তি সঙ্ঘ, দশভাগা কোলেপাড়া আমরা সবাই প্রভৃতি। মুম্বই রোডের ধারে নেতাজি সংগ্রামী সঙ্ঘের মণ্ডপ তৈরি হয়েছে মহারাষ্ট্রের নর্মদা মন্দিরের অনুকরণে। আবার অন্য দিকে, দশভাগা কোলেপাড়া আমরা সবাই-এর শুধু প্রতিমা দেখতেই ভিড় করছেন বহু মানুষ। আমরা সবাই-এর সৌম্যদ্বীপ কোলে, রাকেশ পোড়েলরা বললেন, “আমাদের পুজোয় বাইরে থেকে চাঁদা তোলা হয় না। আমরা অনেকেই চাষাবাদের কাজ করি। পুজোর ঠিক আগের এক মাসের রোজগার জমিয়ে পুজো করি।” অন্যদিকে, নেতাজী সংগ্রামী সঙ্ঘ তাদের পুজোয় এ বার স্মরণ করেছে প্রয়াত শিল্পী মান্না দে-কে। শনিবার পুজো উদ্বোধনের দিনে মান্না দে-কে কেন্দ্র করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে। মণ্ডপে বাজছে শুধুই প্রয়াত গায়কের গাওয়া গানের সিডি। শুড়িখালি শান্তি সঙ্ঘের এবারের আকর্ষণ পাহাড়ের গুহা। পাহাড়ের গুহা অনেকটা পেরিয়ে দেখা মিলবে টেরাকোটার ঠাকুরের। অন্য দিকে, উলুবেড়িয়ার ছাত্র সঙ্ঘের মণ্ডপ এবার তৈরি হয়েছে প্রায় পঁচিশ ফুট উঁচু ময়ূরের অনুকরণে।
খলিশানির পুজোর পাশাপাশি উলুবেড়িয়া, বাগনানের বিভিন্ন পুজোতেও পাল্লা দিয়েছে বেড়ে চলেছে দর্শনার্থীদের ভিড়। উলুবেড়িয়ার নোনা অ্যাথলেটিক ক্লাবের আকর্ষণীয় মণ্ডপ ও প্রতিমা অথবা উলুবেড়িয়া অতুল স্মৃতি সঙ্ঘের নজরকাড়া আলোকসজ্জা দেখতে দলে দলে ভিড় করছেন সাধারণ মানুষ। বাগনানের মুরলীবাড় নাইস ক্লাবের এ বারের নিবেদন গামছার প্রতিমা এবং ঢাকের মণ্ডপ। বাগনানের খাদিনান বিবেকানন্দ সঙ্ঘের এ বারের থিম বাঁকুড়ার শবর সম্প্রদায়ের গ্রাম। এই সম্প্রদায়ের বাস্তবতা ফুটিয়ে তুলতে আয়োজন করা হয়েছে ঝুমুর নাচ, শবর নাচ এবং মুণ্ডা নাচের। বাঁকুড়া থেকে আসা প্রায় ৫০ জন আদিবাসীর এই নাচ তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করছেন দর্শনার্থীরাও। ভিড় হচ্ছে বাগনান ইয়ুথ ক্লাবের ব্রিটিশ মিউজিয়ামের মণ্ডপ দেখতেও। ভিড় হচ্ছে জগৎবল্লভপুরের ইসলামপুর প্রভাত সঙ্ঘের মণ্ডপেও।
দর্শনার্থীদের ভিড় দেখে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি পুজো উদ্যোক্তারা। সংগ্রামী সঙ্ঘের সভাপতি তাপস কোদালি বলেন, “দুর্গাপুজোর আনন্দ অনেকটা মাটি হয়েছে খারাপ আবহাওয়ার জন্য। কালীপুজোয় চমৎকার আবহাওয়া। দুর্গাপুজোর আনন্দের ঘাটতি দর্শনার্থীরা পুষিয়ে নিচ্ছেন কালীপুজো দেখে।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.