|
|
|
|
চানুর সাক্ষাৎপ্রার্থীদের জেলের নিয়মেই অনুমতির নির্দেশ
রাজীবাক্ষ রক্ষিত • গুয়াহাটি |
হাসপাতালে বন্দি ইরম শর্মিলা চানুর সঙ্গে সাধারণ জেল হাজতের নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎপ্রার্থীদের দেখা করতে দিতে হবে বলে মণিপুর সরকারকে নোটিশ পাঠালো জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। ১৩ বছরের অনশনের পরে কয়েক দিন আগে, এই প্রথমবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা জওহরলাল নেহরু হাসপাতালে এসে শর্মিলার সঙ্গে দেখা করেন।
উল্লেখ্য, ২০০০ সালের ২ নভেম্বর মণিপুরের মালোম গ্রামের বাস স্ট্যান্ডে, জঙ্গি সন্দেহে ১০ জন গ্রামবাসীকে হত্যা করে নিরাপত্তাবাহিনী। তারপর থেকেই গাঁধীর একনিষ্ঠ অনুগামী শর্মিলা আফস্পা তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। দিল্লি গিয়ে যন্তর-মন্তরের সামনে প্রতিবাদ জানাবার পর এইম্স ও রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালে ‘বন্দি’ ছিলেন তিনি। ২০০৭ সালে ইম্ফলে ফেরেন। তখন থেকেই জওহরলাল নেহরু হাসপাতাল তাঁর স্থায়ী ঠিকানা। কমিশনের প্রতিনিধিদের শর্মিলা জানিয়েছিলেন, অন্যায় ও অমানবিক সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন প্রত্যাহার করা ভিন্ন অন্য কোনও শর্তে তাঁর আন্দোলন থামবে না। সেই সঙ্গে তিনি জানান, তাঁর পরিবারের সদস্য ও অনুগামীদের তাঁর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয় না। দিল্লি থেকে অনুমতি ও রাজ্য সরকারের বিস্তর বাধা টপকে তাঁর সঙ্গে দেখা করা বেজায় কঠিন ও সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তাঁর অভিযোগ ছিল, এটা মানবাধিকার ভঙ্গের সামিল। কমিশনের রিপোর্ট বলছে, তারা যখন শর্মিলার সঙ্গে দেখা করেন, তখন তাঁর চেহারা পাণ্ডুর হয়ে গিয়েছিল। যদিও তিনি কোনও দৈহিক অত্যাচারের অভিযোগ তোলেননি।
কমিশনের ক্ষোভ, সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে শর্মিলাকে যে ভাবে একাকীত্বের মধ্যে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে শর্মিলার বেঁচে থাকাটাই সরকারের কাছে বিড়ম্বনা। তিনটি কারণে শর্মিলার বিষয়টি কমিশনের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়েছে। প্রথমত, তিনি একজন হাজতে থাকা নারী, যাঁর সঙ্গে হওয়া মানবাধিকার ভঙ্গের বহু অভিযোগ কমিশনে জমা পড়েছে। দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রসঙ্ঘের বিশেষ প্রতিনিধি ভারত ঘুরে গিয়ে রিপোর্ট দিয়েছেন, শর্মিলা মানবাধিকার কর্মী হওয়ায় তার সঙ্গে ভারত সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে কঠোরতা দেখাচ্ছে। তৃতীয়ত, শর্মিলা শান্তিপূর্ণভাবে সরকারের চালু করা এক দমননীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছিলেন।
কমিশন এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছিলেন চানুকে। গত সপ্তাহেই দিল্লিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এক বিবৃতি প্রকাশ করে জানায়, মণিপুর সরকারকে বলা হয়েছে, শর্মিলার সঙ্গে দেখা করার ব্যাপারে যে অতিরঞ্জিত বাধানিষেধ আরোপ করা রয়েছে তা অবিলম্বে সরিয়ে ফেলতে হবে। একজন জেল হাজতে থাকা ব্যক্তির সঙ্গে আইন মেনে সকলে যেমন দেখা করতে পারেন, এক্ষেত্রেও তার অন্যথা হওয়া উচিত নয়। রাজ্যের মুখ্য সচিবকে কমিশনের নির্দেশ: কমিশনের পরামর্শ কার্যকর করে সরকার কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে কমিশনকে জানাতে হবে। |
|
|
|
|
|