পুজোর রাতে মন্দির-মণ্ডপে গিয়েছিলেন বাড়ির লোকজন। সেই ফাঁকে রেল আবাসনে পরপর লুঠপাট চালাল দুষ্কৃতীরা। চিত্তরঞ্জনে শনিবার রাতের এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, বারবার এমন ঘটনা ঘটছে। কিন্তু পুলিশ বা আরপিএফের কোনও হেলদোল নেই। পুলিশ জানায়, দুষ্কৃতীদের খোঁজ চলছে। পার্শ্ববর্তী ঝাড়খণ্ডের সীমানার থানাগুলিকে জানানো হয়েছে।
ওই রাতে রেল আবাসনের দু’টি বাড়িতে তালা ভেঙে টাকা, গয়না-সহ নানা জিনিসপত্র লুঠ হয়েছে বলে অভিযোগ। আরও একটি বাড়িতে লুঠপাটের চেষ্টা হয়। কিন্তু আশপাশের লোকজন তা টের পেয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি করলে চোরেরা পালায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এর আগেও এ ভাবে চুরির ঘটনা ঘটেছে এই আবাসনে। কয়েক দিন আগে ৩৫ নম্বর রাস্তার একটি আবাসনে দরজার তালা ভেঙে চুরি করে পালায় দুষ্কৃতীরা। অথচ, বহু গেটে আরপিএফের পাহারা রয়েছে। একটি থানাও রয়েছে। তা সত্ত্বেও কী ভাবে চুরি হচ্ছে, সে প্রশ্ন তুলেছেন আবাসিকেরা। |
তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, দু’টি বাড়িতে চুরি হয়েছে কাছাকাছি সময়ের মধ্যে। শনিবার রাত ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে লুঠপাট চালায় দুষ্কৃতীরা। আবাসন এলাকার ৬৮ নম্বর রাস্তার বাসিন্দা তড়িৎকান্তি মুখোপাধ্যায় পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, রাত ১০টা নাগাদ তিনি সপরিবারে সামনে একটি কালীমন্দিরে পুজো দিতে যান। রাত ১২টা নাগাদ বাড়ি ফিরে দেখেন, দরজার তালা ভাঙা। ঘরের আলো নেভানো। আলমারি ভাঙা। সমস্ত জিনিসপত্র মেঝেতে ছড়িয়ে। খোয়া গিয়েছে নগদ টাকা ও গয়না। তড়িৎবাবু বলেন, “চুরি হয়েছে বুঝে আশপাশের লোকজন ডাকি।” এর কিছু পরেই জানা যায়, ৬৫ নম্বর রাস্তার বাসিন্দা অলোক ভট্টাচার্যের বাড়িতেও চুরি হয়েছে। অলোকবাবুর অভিযোগ, শনিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ বাড়ির সবাইকে নিয়ে ঠাকুর দেখতে বেরোন। ঘণ্টা তিনেক পরে ফিরে দেখেন, তালা ভাঙা টাকা, গয়না-সহ জিনিসপত্র নিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। ৬৫ নম্বর রাস্তার আরও একটি আবাসনে এই রাতেই দরজার তালা ভাঙার চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। কিন্তু এলাকাবাসী বুঝতে পেরে যাওয়ায় সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
চিত্তরঞ্জন রেল কারখানার অনুমোদিত কর্মী সংগঠন স্টাফ কাউন্সিলের সদস্য নেপাল চক্রবর্তীর অভিযোগ, “শহরের নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। পার্শ্ববর্তী রাজ্য থেকে দুষ্কৃতীরা পুলিশ এবং আরপিএফের নজর এড়িয়ে এ রাজ্যে ঢুকছে। তার পরে অপকর্ম সেরে পালিয়ে যাচ্ছে।” নেপালবাবু আরও অভিযোগ করেন, আরপিএফ এবং পুলিশকে জানিয়েও দুষ্কৃতীদের ঠেকানো যাচ্ছে না।
আরপিএফের টাউন পোস্টের তরফে অবশ্য জানানো হয়, পুলিশের সঙ্গে যৌথ ভাবে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে খামতি থাকায় দু’একটি চুরির ঘটনা ঘটছে। তাদের দাবি, সীমানা এলাকায় আরও কিছু কড়া পদক্ষেপ করা হলে এ সব আটকানো যাবে। তার ব্যবস্থা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। |