দেব-কে দিয়ে ‘ব্রডওয়ে শো’
সন্ন কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের মহড়া নিয়ে ব্যস্ত তিনি। নিয়নরঙা জ্যাকেটের মাঝে কেবলই চোখ চলে যাচ্ছে তাঁর চুলের বাহারি পালকের দিকে। ‘নটবর নট আউট’ ছবির ‘মেঘের পালক চাঁদের নোলক’ গানের কোরিওগ্রাফার সুকল্যাণ ভট্টাচার্যকে কি পালক এখনও ছাড়েনি? নাকি ময়ূরপালকে কৃষ্ণের লাস্যকে ধরে রাখতে চান? “আমি কৃষ্ণ চরিত্র করতে সব চেয়ে ভালবাসি,” একরাশ হাসি ছড়িয়ে জানালেন টলিপাড়ার ‘সুকি’। ওই সম্বোধনই তাঁর সব চেয়ে পছন্দের।
এই মেয়েলি সম্বোধন কেন? “প্রথাগত শাস্ত্রীয় নৃত্যের তাণ্ডব আর লাস্য দু’টোই আয়ত্তে এনেছি। আমি তো মুখোশ পরতে পারব না। কিন্তু আমি যেমন আমার ইচ্ছেমতো রাধা বা কৃষ্ণ চরিত্র করতে পারি, হৃতিক রোশন সেটা পারবেন না,” জানান সুকল্যাণ।
ছবি: কৌশিক সরকার
সুকল্যাণ শাস্ত্রীয় নৃত্যের সঙ্গে সমসাময়িক নৃত্যভঙ্গিকে মিলিয়ে বাংলা ছবির গাছের তলার, নদীর ধারের গান বা বেনারসি শাড়ি আর জুঁই মালার স্টেজ পারফর্ম্যান্সের একঘেয়ে ক্যানভাসে নাচের নতুন আঙ্গিক তৈরি করেছেন সুকল্যাণ। ভাঙাগড়ার খেলায় বিশ্বাসী তিনি তাই দেবকে দিয়ে ‘ব্রডওয়ে শো’ করাতে চান। কিন্তু দেবের সময় কই? আফশোস সুকল্যাণের। রাবীন্দ্রিক নৃত্য বলে যে কিছু হয় না, প্রয়াত মঞ্জুশ্রী চাকী সরকারের অনুগত এই শিষ্য সেটা খুব ভাল করেই জানেন। আর সেই জন্যেই রবীন্দ্রনাথের ‘কালমৃগয়া’-য় বনদেবীদের রোলেক্সের শাড়ি ছেড়ে বডি আর্টের আলপনায় বন্য লুকটাকে ফিরিয়ে আনতে পারেন তিনি। এখানেই তার মৌলিকত্ব। ইচ্ছে রয়েছে ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনকে নিয়ে কাজ করারও। আর এটাও মানেন শুধু সাধনা নয়, ভাল পিআর না হলে সেখানে পৌঁছনো কঠিন। সেটাও তিনি নিজেই করেন।
বলিউডে ‘গুরুদক্ষিণা’ ছবির জন্যে সম্প্রতি গিরীশ কারনাড আর রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে নাচ শিখিয়ে আপ্লুত সুকল্যাণ।
তবে আপাতত ব্যস্ত তাঁর ড্রিম প্রজেক্ট নিয়ে। ‘চণ্ডালিকার মা’ হতে চান তিনি। ‘দেহপট সনে নট সকলি হারায়’ ফুরিয়ে তো যেতেই হবে। তবু কাজের মধ্যেই বেঁচে থাকা। আত্মবিশ্বাসী শোনায় সুকল্যাণ ভট্টাচার্যকে।
টলিউডে ঋতুপর্ণা থেকে কোয়েল সকলেই তাঁর ছন্দে পা মিলিয়েছেন। ‘পরিচয়’ ছবিতে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে প্রসেনজিতের ডিটেলিং দেখে মুগ্ধ তিনি। কিন্তু টলিউডে তাঁর সমসাময়িক কোনও বিশেষ কোরিওগ্রাফারের নাম জানতে চাইলে স্পষ্ট জবাব, “কোরিওগ্রাফারদের নিজস্বতা বলে কিছুই নেই। কারণ সবই তো দক্ষিণ ভারতীয় বাণিজ্যিক ছবির নাচের অনুকরণ”তাঁর মতে “টলিউডের বেশির ভাগ পরিচালকই চান না ক্যামেরার কাজ, লাইটের ব্যবহার, শট ডিভিশন জানা কোরিওগ্রাফার আসুক ইন্ডাস্ট্রিতে। সেই কারণে ইচ্ছেমতো নাচের দৃশ্যে কাঁচি চালান তাঁরা,” সাফ বক্তব্য সুকল্যাণের। বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে মনে কিছুটা ক্ষোভ থাকলেও আশা ছাড়তে নারাজ তিনি।
তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস একদিন না একদিন শুধু নাচকে কেন্দ্রবিন্দু রেখেই আস্ত সিনেমা তৈরি করবে টলিউড।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.