|
জিমে না গেলে...
হবে না ভাল ছেলে...
বেনিয়মের উৎসব শেষে শরীরচর্চা করে তৈরি
হোন নিউ ইয়ার্স পার্টির জন্য। লিখছেন চিন্ময় রায় |
|
কাল ভাইফোঁটা। আর তার পরই শেষ। শেষ আপাতত উৎসবের মরসুম। ঠাকুর। প্যান্ডেল। হইচই। খানাপিনা। গোটা বছরের জমিয়ে রাখা আনন্দ একসঙ্গে সেরে ফেলতে গিয়ে শরীর বাবাজির দফারফা। কিছু অন্য রকম ওয়ার্কআউট তাই করে ফেলুন ফেস্টিভ মুড পার হয়ে চটজলদি নিজেকে তন্-দুরস্ত করে ফেলতে। আর হ্যাঁ, গড়িমসি না করে জিমে যাওয়াটা কিন্তু এ সময় মাস্ট। |
আউট অব দ্য বক্স |
একঘেয়েমি নয়, বৈচিত্র আনুন ওয়ার্কআউটের শিডিউলে। ডাম্বেল, বারবেল বা ট্রেডমিল নয়, করুন ফিউশন ওয়ার্কআউট। ব্যাপারটা খুবই সহজ। দু’টো ওয়ার্কআউট, কার্ডিও মানে দৌড় বা হাঁটার সঙ্গে কোর অর্থাৎ পেটের গভীরের পেশির জোর বাড়ানোর ব্যায়ামকে জুড়ে দিয়ে যে ওয়ার্কআউট, সেটাই ফিউশন ওয়ার্কআউট। এই ওয়ার্কআউটের গোটা দু’য়েক নমুনা দিচ্ছি। কিন্তু তার আগে জিমে ঢুকেই সকালের আলস্য বা বিকেলের ক্লান্তি তাড়াতে আপনাকে বাছতে হবে কয়েকটা ইন্টারেস্টিং ওয়ার্ম আপ। |
সুইস বলে ওয়ার্ম আপ |
৫ মিনিটের সাইক্লিং বা ট্রেডমিলে জগিং ভুলে যান। একটা ফুটবলের মাপের হালকা বল জোগাড় করুন। অনেক জিমেই বাস্কেটবল থাকে। ওই বলটা পেলে ভাল। না হলে সব জিমেই আছে সুইস বল। বলটা নিয়ে মাটিতে ড্রপ দিয়ে দিয়ে জিমের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে আপনার ফিটনেস অনুযায়ী হাঁটুন বা জগিং করুন। চেষ্টা করুন এক হাতে বলটা বাউন্স করাতে। না পারলে করুন দু’হাতে। ১-২ মিনিট পর পাশাপাশি বা সাইডওয়েজ জগিং করুন বা হাঁটুন। বলটাও বাউন্স করাতে হবে। ওটাই চ্যালেঞ্জ। এ বার চার পা জগিং করে সামনে এগিয়ে যান। আবার চার পা জগিং করে পিছিয়ে যান। মিনিট তিন-চার বলকে বশ মানানোর পর পায়ের আর কোমরের কয়েকটা স্ট্রেচিং করে মূল ফিউশন ওয়ার্কআউটের জন্য আপনি রেডি। |
দৌড়/লাফ/প্ল্যাঙ্ক |
ড্রিল ১. কুড়ি পা দূরত্ব মেপে দু’টো জলের বোতল দু’দিকে রাখুন। আপনার ফিটনেস অনুযায়ী দৌড়ে বা জগিং করে বা জোরে হেঁটে উল্টো প্রান্তে পৌঁছে করুন পাঁচটা জাম্পিং জ্যাক। আবার ফেরত আসুন শুরুর প্রান্তে। প্রতি দু’বার যাওয়া-আসার পর শুরুর প্রান্তে করুন প্ল্যাঙ্ক হোল্ড। ১০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এর পর আবার ফিরে যান দৌড়, জগিং বা জাম্পিং জ্যাক করাতে। এ ভাবে ২-৩ মিনিট করুন। ট্রেনার সময় দেখবেন।
এই ড্রিলটায় ক্যালোরি ঝরার পাশাপাশি পেটের গভীরের পেশির জোরও বাড়বে। মুড এলিভেট করতেও এই ড্রিলটার জুড়ি নেই। বৈচিত্রের দিক থেকে তো বটেই, ড্রিলটা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিংও। হয়ে গেলে ৩ বার রিপিট করে নিন ড্রিলটা। |
|
|
ফিগার এইটের আটঘাট |
ড্রিল ২. এই ড্রিলটা করতে দরকার একটা ৩ মিটার লম্বা দড়ি। জিমে স্কিপিং রোপ থাকে। দু’টো স্কিপিং রোপ জুড়ে দিলেই ৩ মিটারের বেশি হয়ে যাবে। দড়িটাকে ইংরাজি সংখ্যা ৮-এর আকারে তৈরি করুন। এ বার ফিগার এইটের লাইন বরাবর হাই নি করে পাক দিন। এক বার পাক দিন ঘড়ির কাঁটার দিকে। তো আরেক বার ঠিক তার বিপরীত দিকে। এর পর করুন ৫-টা পুশ আপ আর রোটেশন। একটা পুশ আপ দেওয়ার পর এক হাতে ভার রেখে সিলিংয়ের দিকে শূন্যে অন্য হাতটা তোলাটাই হল রোটেশন। এর পর উঠে দাঁড়িয়ে আবার হাই নি করুন। পর্যায়ক্রমে হাই নি আর পুশ আপ চলবে ২-৩ মিনিট। ট্রেনারকে বলবেন চেঁচিয়ে আপনাকে উৎসাহ দিতে। উৎসাহ দিলে আপনি ২ মিনিটের জায়গায় ওয়ার্কআউটটা ৩ মিনিট করতে পারবেন। এই ড্রিলটা করলে আপনার হার্ট এবং ফুসফুস দুই-ই সুস্থ সবল থাকবে। আবার কাঁধের পেশির আর কোর পেশির জোর বেড়ে তারাও শক্তিশালী হবে। মহিলারা যাঁদের স্বাভাবিক পুশ আপ দিতে অসুবিধে হয়, তাঁরা হাঁটুর ওপর ভর দিয়েও পুশ আপ করতে পারেন। |
জিম-দুরস্ত |
• একেক দিন একেক রকম ওয়ার্ম আপ করুন। কোবরা, ক্যাট, পিজিয়নের মতো নানা স্ট্রেচিংকে কম্বাইন করে ওয়ার্ম আপ সারুন
• ট্রেনারকে বলুন আপনাকে যেন চেঁচিয়ে উদ্দীপ্ত করেন। বিশেষ করে যখন আপনি আর পারছেন না। এটা করলে ওয়ার্কআউটটা করতে গিয়ে এনার্জি হারাবেন না
• সকালে যদি ওয়ার্কআউট করেন, তা হলে মনঃসংযোগ বাড়াতে সাহায্য করে এমন কিছু খান। পাকা পেঁপে, কফি খেলে খুবই ভাল
• বিকেলে ওয়ার্কআউট করলে ভেজানো ছোলা-মুড়ি, ভুট্টা সেদ্ধ, চিকেন স্যুপ খেয়ে শুরু করতে পারেন ওয়ার্কআউট
• প্রতিটা ওয়ার্কআউটই করুন ৩০-৩৫ মিনিটের মধ্যে। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি সময় ওয়ার্কআউট করলে কর্টিসল হরমোনের অতিরিক্ত ক্ষরণে দেহে অবসাদ আসতে বাধ্য |
|
|