কোথাও ড্রাগনের বুক চিরে গুহা পেরিয়ে ধূসর দুর্গের মাঝে দেবী। কোথাও আবার সাদামাটা থিম, কিন্তু নানা রঙের আতসবাজির মধ্যে দিয়েই পুজো হচ্ছে শক্তির অধিষ্ঠাত্রীর। রকমারি মণ্ডপসজ্জা, নজরকাড়া থিম ও মনোরম আলোকসজ্জা দিয়েই এ বার বাজিমাত করতে চায় আসানসোলের বড় পুজোগুলি।
বার্নপুরের ইয়ং মেনস অ্যাসোসিয়েশনের মণ্ডপে এ বছরের থিম তিব্বতীয় সংস্কৃতি। শিল্পী গৌরাঙ্গ কোইলা জানান, ওই সংস্কৃতির সঙ্গে খুব একটা পরিচিত নন এখানকার মানুষজন। তাই তিনি উত্তর ভারতের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সংস্কৃতির সঙ্গে তিব্বতীয় সংস্কৃতির এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। ড্রাগনের বুক চিরে অন্ধকার গুহা পেরিয়ে ধূসর রঙের দুর্গের মাঝে মা কালীর দর্শন করতে পারবেন মণ্ডপে আসা দর্শনার্থীরা। এখানে প্রতিমার দশটি হাত। |
সেজেছে বার্নপুর ইয়ং মেন্স অ্যাসোসিয়েশনের পুজো মণ্ডপ। |
মণ্ডপ সাজানো হয়েছে তিব্বতীয় দেবদেবীর মডেল দিয়ে। মণ্ডপের চারিদিকে বানানো হয়েছে বহমান জলধারা। বার্নপুরের বাজার সংলগ্ন রাজস্থান ক্লাব আবার মিশরীয় সভ্যতার নানা দিক তুলে ধরেছে মণ্ডপে। রয়েছে মিশরের পিরামিড। আসানসোলের বিগ বাজেটের পুজোর মধ্যে চেলিডাঙার নির্ভীক ক্লাব সর্বজনীন এ বার মণ্ডপ তৈরি করেছে কাল্পনিক মন্দিরের আদলে।
দীপাবলির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত আলোকসজ্জা। ঘরে ঘরে জ্বলতে দেখা যায় মাটির প্রদীপ বা মোমবাতি। মনোরম আলোকসজ্জায় মণ্ডপ সাজানোর থেকে পিছিয়ে থাকেনি শিল্পাঞ্চলের পুজোগুলিও। কুলটির বন্ধুমহল ক্লাব এ বার চন্দননগর ও হুগলির কারিগর নিয়ে এসে বাহারি আলোকসজ্জায় সাজিয়েছে মণ্ডপ। সিঙ্গাপুরের প্যাগোডার আদলে তৈরি হয়েছে এ বারের মণ্ডপ। হঠাও প্যাগোডা কেন? উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, সিঙ্গাপুরে কালীকে শক্তি রূপে দেখা হয়। জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয় কালীপুজোর দিনটি। তাঁরা আরও জানান, বিসর্জনের দিন রয়েছে আতসবাজির খেলা। আসানসোলের আপকার গার্ডেন সর্বজনীন পুজো মণ্ডপেও রয়েছে বাহারি আলোকসজ্জা। |
বার্নপুরেরই রাজস্থান ক্লাবের সুসজ্জিত মণ্ডপ। |
শহরের বিগ বাজেটের পুজো বলে পরিচিত এই পুজোয় সিংহভাগই খরচ হয় আলোকসজ্জায়।
পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড সীমান্তের রূপনারায়ণপুরের আপার কেশিয়া মাঠে সর্বজনীন পুজো কমিটির উদ্যোগে শ্যামাপুজো উপলক্ষে দক্ষিণ ভারতের আদলে একটি মণ্ডপ বানানো হয়েছে। বসেছে একটি বড় আকারের মেলাও। রূপনারায়ণপুরের সামডিহি রোডে অগ্রতি পরিচালিত সর্বজনীনে এ বছর প্রধান আকর্ষণ আধুনিক আলোকসজ্জা। কুলটির সাংস্কৃতিক সংগঠন অনির্বানের উদ্যোগে জাকজমকপূর্ণ মণ্ডপ বানানো হয়েছে এ বারও। রয়েছে নজরকাড়া আলোকসজ্জা।
দুর্গাপুজোর পরে আলোর উৎসবে মাততে শনিবার থেকেই এই সব মণ্ডপে ভিড় জমাবেন শিল্পাঞ্চলের মানুষ, আশায় উদ্যোক্তারা। |