পুরনো রীতি মেনে আজও বিসর্জনের আগে দেবী প্রতিমাকে দুধ ও খই খাওয়ানো হয়। পুরনো প্রথা মেনে রয়েছে পাঁঠা ও পায়রা বলি দেওয়ার প্রথাও। আবার বিসর্জনের সময় নদীর ঘাটে দেবী হাজির হওয়ার পর সেখানেও পুজো করে পাঁঠা বলি দেওয়া হয়। ৩০০ বছর আগে পুজো শুরু হয়েছিল পারিবারিক উদ্যোগে। এখন তা সর্বজনীন। তবে সর্বজনীন হলেও পুরনো সব রীতি মেনেই আজও পুজো হয় মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের বৈরাটে। ওই পুজোকে ঘিরেই কালী পুজোয় মেতে ওঠেন বৈরাট সহ লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা।
বৈরাট এলাকায় একসময় ওই পুজো শুরু করেছিলেন স্থানীয় দুর্গাকিঙ্কর সিংহের পরিবার। এখন স্থানীয় হলেও তাদের আদি নিবাস ছিল মেদিনীপুরের কাঁথিতে। চাঁচলের রাজা ওই এলাকায় তার এস্টেট দেখাশোনার জন্য তাদের নিয়ে এসেছিলেন। রাজার উদ্যোগেই বৈরাটে তাদের বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়। তখন এলাকাটি ছিল ঘন জঙ্গলে ভরা। কথিত রয়েছে যে, পরিবারের এক মহিলা এক বিরাট বটগাছের তলায় শিবলিঙ্গ দেখতে পেয়ে সেখানে নিয়মিত পুজো শুরু করেন। পরে মা কালী তাকে স্বপ্নাদেশ দিয়ে জানান শিবের সঙ্গে তারও পুজো করার নির্দেশ দেন। সেই থেকে ওই পরিবারের উদ্যোগে পুজো শুরু হয়।
এখন সর্বজনীন উদ্যোগে পুজো হয় স্থায়ী মন্দিরে। মৃন্ময়ী দেবীমূর্তির উচ্চতা ১২ ফুট। দেবী প্রতিমা তৈরির ক্ষেত্রও মেনে চলা হয় বংশপরম্পরা। উত্তর দিনাজপুরের ইন্দ্রান গ্রামের কুমোদ দাস প্রতিমা তৈরি করেন। পুজোয় পুরনো প্রথা মেনে খিচুড়ি প্রসাদ দেওয়া হয়। দুদিন ধরে জমাটি মেলাও বসে। পুজো কমিটির সম্পাদক জয়ন্ত সাহা বলেন, “সর্বজনীন হলেও পুরনো সব প্রথা মেনেই পুজো হয়। দেবী গোটা এলাকার বাসিন্দাদের কাছে মহা কল্যাণেশ্বরী হিসেবেই পরিচিত।” |