মহাষ্টমীর রাতে দুর্গামন্ডপে মহিলার উপর যৌন নির্যাতন ও খুনের ঘটনায় উদ্বিগ্ন দেশের নারী নির্যাতন প্রতিরোধ টাস্ক ফোর্সের চেয়ারপার্সন শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী। শুক্রবার দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি ঘটনার তদন্ত নিয়ে পুলিশের কাছে জানতে চান। সভা মঞ্চে দাঁড়িয়ে গঙ্গারামপুর থানার আইসি অসীম গোপকে তদন্তের অগ্রগতি ব্যাখ্যা করতে হয়। আইসি তাঁকে জানান, নবমীর সকালে মন্ডপ থেকে মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় জড়িত মূল দুই অভিযুক্ত টিঙ্কু ওরফে দেবাশিস সিংহ এবং পলাশ চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মন্ডপের ঢাকি ও নৈশপ্রহরীকেও ধরা হয়েছে। শীঘ্রই চার্জশিট দেওয়া হবে।
এদিন বালুরঘাটের মন্মথ নাট্যমঞ্চে জেলায় ধর্ষণ, নারী পাচার ও নির্যাতন প্রতিরোধে নির্ভয় গ্রাম গড়ে তুলতে জেলাস্তরে বিশেষ আলোচনা চক্রের আয়োজন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন জেলার সমস্ত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, পুরসভরার চেয়ারপার্সন, জেলাপরিষদের সভাধিপতি, সহ সভাধিপতি, সবগুলি থানার আইসি এবং ওসি সহ জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার এবং প্রশাসনের আধিকারিকেরা। সভায় গঙ্গারামপুরের কালদিঘি এলাকায় মন্ডপ কান্ডের প্রসঙ্গ উঠে এলে টাস্ক ফোর্সের চেয়ারপার্সন মালদহে একটি অপরাধের ঘটনায় পুলিশ ২৪ দিনের মধ্যে চার্জশিট দিয়ে দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করে পুরস্কৃত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। সেই সময় ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে গঙ্গারামপুরের আইসি চেয়ার মামলার গতিপ্রকৃতি ব্যাখ্যা করেন। |
দক্ষিণ দিনাজপুরের মতো সীমান্তবর্তী জেলায় উত্তরোত্তর নারী নির্যাতন ও নারী পাচার বেড়ে চলায় গ্রামে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বাসিন্দা, পঞ্চায়েত, পুলিশ ও বিএসএফকে নিয়ে গঠিত নির্ভয় গোষ্ঠী তৈরির উপর গুরুত্ব দিয়েছে সংশ্লিষ্ট টাস্ক ফোর্স। কমিটি আলোচনায় অংশ নিয়ে কুমারগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি উমা রায় মহিলাদের উপর অত্যাচার বন্ধে পুলিশ ও আদালতের সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার কথা উল্লেখ করেন। কুশমন্ডি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মিঠু জোয়ারদার বলেন, “স্কুল স্তরে ছাত্রছাত্রীদের এই কর্মসূচিতে সামিল করতে হবে।” দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাপরিষদ এই উদ্যোগকে সব রকম সহায়তা করবে বলে সভাধিপতি ললিতা তিগ্গা এবং সহকারী সভাধিপতি কল্যাণ কুন্ডু আশ্বাস দেন।
দক্ষিণ দিনাজপুরে এক একটি থানার অধীন ৩০০ থেকে ৭০০ গ্রামের আইনশৃঙ্খলা রোধে ৩০ থেকে ৩৫ জন পুলিশ কর্মী রয়েছেন। টাস্ক ফোর্সের চেয়ারপার্সন বলেন, “সারা দেশেই ৩০০ থেকে ৮০০ গ্রাম পিছু একটি থানা এবং ওই একটি থানার ৩৫ থেকে ৪০ জন পুলিশ কর্মীকে সমস্ত গ্রামের আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব সামলাতে হয়। নির্ভয় গ্রামের মাধ্যমে পুলিশ-জনতা সম্পর্ক তৈরি হবে। তাতে নারী নির্যাতন, নারী পাচারের মতো অপরাধ প্রতিরোধের কাজে সাফল্য আসবে শীঘ্রই এ জেলায় এসে তিনি নির্ভয় গ্রাম তৈরির কাজ শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন। |