সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় মানুষের রোগ নির্ণয় ও তাঁদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে হোমিওপ্যাথি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকদের কাজে লাগাতে চায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় রাজ্য সরকারের অধীনে ৬৮ জন হোমিওপ্যাথি ও ১৪ জন আয়ুবের্দিক চিকিৎসক রয়েছেন। যদিও হোমিওপ্যাথি ও আযুবের্দিক চিকিৎসকের বেশ কয়েকটি শূন্যপদ এখনও খালি। জেলায় ৩১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। জেলা পরিষদের প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, সপ্তাহে তিনদিন চার ঘণ্টা করে প্রত্যেক চিকিৎসক নির্দিষ্ট একটি পঞ্চায়েত অফিসে বসবেন। সেখানে তিনি এলাকার বাসিন্দাদের রোগ নির্ণয় ও স্বাস্থ্য সচেতনতার নানা পরামর্শ দেবেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, “সুন্দরবন-সহ জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় অধিকাংশ মানুষই স্বাস্থ্য সচেতন নন। জল বাহিত ও অন্যভাবে জীবাণু সংক্রমণের জেরে বেশিরভাগই পেটের অসুখে ভোগেন। পাশাপাশি প্রত্যন্ত এলাকা হওয়ায় পরিবহণ ব্যবস্থার অপ্রতুলতা ও আর্থিক কারণে অধিকাংশ মানুষই মহকুমা ও ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে পৌঁছতে পারেন না। সেই কারণে সুন্দরবন এলাকার পঞ্চায়েত দফতরগুলিতে হোমিওপ্যাথি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকদের বসার ব্যবস্থা হতে চলেছে।” জেলা পরিষদ সূত্রের খবর, কোথায় কবে চিকিৎসকেরা বসবেন তার আগাম দিনক্ষণ সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতকে জানিয়ে দেওয়া হবে। নির্ঘন্ট অনুযায়ী পঞ্চায়েত প্রধান ও সদস্যরা তা প্রচারের মাধ্যমে এলাকার মানুষকে জানিয়ে দেবেন।
প্রাথমিক পরিকল্পনায়, ওই চিকিৎসকরা রোগের লক্ষণ নির্ণয় করবেন। তারপর যদি তা জটিল অবস্থায় থাকে তা হলে ব্লক, মহকুমা ও জেলা হাসপাতালে ‘রেফার’ করবেন। শুধু রোগ নির্ণয় নয়। পুকুরের জল যাতে রান্নার কাজে ব্যবহার না করা, শৌচালয় ব্যবহারের উপর জোর দেওয়ার মতো বিষয়ে ওই সব প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাসিন্দাদের সচেতনতা বাড়াতে সাহায্য করবেন ওই চিকিৎসকেরা।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, হোমিওপ্যাথি ও আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরা মাসিক ১১ হাজার টাকা সান্মানিক পেয়ে থাকেন। তাঁদের রোগ নির্ণয়ের প্রাথমিক পাঠ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে সাধারণ রোগ নিণর্র্য় ও রোগের জটিল পরিস্থিতি দুটো বিষয়ই তাঁরা যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। তা ছাড়া জীবাণুবাহিত নানা রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থার বিষয়ে তাঁদের অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেই কারণেই সুন্দরবন এলাকার পঞ্চায়েতগুলিতে গিয়ে এঁরা রোগীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন।
জেলা স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ তরুণ রায় বলেন, “বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় কী ধরনের রোগের প্রকোপ রয়েছে এবং ওই সব অঞ্চলে স্বাস্থ্য সচেতনতার ক্ষেত্রে পঞ্চায়েতগুলি কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, সেই বিষয়ে ওই চিকিৎসকদের কাছে মাসিক রিপোর্ট নেওয়া হবে। পরে চিকিৎসকদের ওই রিপোর্ট পর্যালোচনা করে পরিস্থিতি অনুযায়ী পরবর্তী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।” |