প্রায় ২০ বছর পর খড়িবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির বামেদের হাতছাড়া হল। শুক্রবার পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএমের সভাপতি পার্বতী সিংহ অনাস্থা ভোটে পরাজিত হয়েছেন। সমিতির কংগ্রেস এবং সিপিএমের সদস্যরা সম্প্রতি তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় শিলিগুড়ি মহকুমার নকশালবাড়ি, ফাঁসিদেওয়া এবং মাটিগাড়ার পর এই পঞ্চায়েত সমিতিও তৃণমূলের দখলে আসল। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এদিন সকালে স্থানীয় বিডিও অফিসে অনাস্থা ভোট হয়। তাতে ৭-০ ভোটে পরাজিত হন সিপিএমের সভাপতি। অনাস্থার পক্ষে ভোট দেন দলত্যাগী ৪ জন কংগ্রেসের এবং ৩ জন সিপিএম সদস্য। অনাস্থায় জয়ের পর এলাকায় বিজয় মিছিল করেন তৃণমূল। ১৯৯৪ সাল থেকে পঞ্চায়েত সমিতিটি বামেদের দখলে ছিল।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “গোটা শিলিগুড়ি মহকুমায় তৃণমূলের আধিপত্য বাড়ছে। মহকুমার অন্য তিনটি পঞ্চায়েত সমিতিও আমরা দখল করেছি। জনপ্রতিনিধি এবং অন্য দলের নেতা কর্মীরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে উন্নয়নে কাজে সামিল হচ্ছেন।” তবে গোটা ঘটনাটিকে ‘জবরদখল’ বলে মন্তব্য করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “মহকুমা পরিষদ থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তর অবধি তৃণমূল জবরদখল শুরু করেছে। কোথাও ওঁরা ভোটে না জিতে অন্য দলের সদস্যদের প্রলোভন, ভয় দেখিয়ে দলে টানছে।”
খড়িবাড়ির প্রসঙ্গে অশোকবাবু বলেন, “আমরা খড়িবাড়ির দলত্যাগী সদস্যদের বিরুদ্ধে দলত্যাগ আইনে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানাব।” আর কংগ্রেসের সদস্যদের তৃণমূলে যোগ দিয়ে অনাস্থাকে সমর্থন করার প্রসঙ্গে কংগ্রেসের জেলা সভাপতি শঙ্কর মালাকার বলেন, “ওঁরা বিশ্বাসঘাতক, বেইমান। আগামীদিনে এলাকার মানুষ এর জবাব দেবে। আর তৃণমূল তো এখন দল ভাঙার খেলাতেই ব্যস্ত।”
১১ আসন বিশিষ্ট খড়িবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতিতে কংগ্রেস ৫ জন, সিপিএমের ৪ জন এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের ২ জন সদস্য ছিলেন। সভাপতি ছিলেন সিপিএমের পার্বতী সিংহ। কংগ্রেসের এক সদস্য দুই বছর আগে মারা যান। সম্প্রতি কংগ্রেসের ৪ জন এবং সিপিএমের ৩ জন তৃণমূলে যোগ দেন। গত ২১ অক্টোবর সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়। নকশালবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা তৃণমূল নেতা অমর সিংহ বলেন, “ওই ৭ জনই অনাস্থায় পক্ষে ভোট দিয়েছেন। সভাপতি এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের সদস্যরা আসেননি। নতুন সভাপতি নির্বাচনের দিনক্ষণ প্রশাসন ঘোষণা করবে।” এ দিন দুপুরে শিলিগুড়ির পূর্ত দফতরের বাংলোয় কালচিনির আরএসপি গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য ডম্বু প্রধান- ছাড়াও দলের দুই যুব নেতা পাশাং শেরপা ও যুবরাজ কার্নি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী জানিয়েছেন। কালচিনির আরএসপি-র জোনাল সম্পাদক গৌরী সেন জানান, পাশাং শেরপা পঞ্চায়েত ভোটের আগেই দল ছেড়ে দিয়েছিল। বাকি দু’জনকে চিনি না। খোঁজ নিতে হবে। |