মুকুল রায়ের পর রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। রাজ্যের জন্য বিশেষ আর্থিক সাহায্যের দাবি জানিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের দ্বারস্থ হলেন অমিতবাবু। আগের মতোই আজও রাজ্যের দাবি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জানান, কেন্দ্র পশ্চিমবঙ্গের দাবির প্রতি সহানুভূতিশীল। দু’পক্ষই সম্ভাব্য সব পথ নিয়ে আলোচনা চালু রেখেছে।
সম্প্রতি রঘুরাম রাজনের নেতৃত্বাধীন কমিটি আর্থিক উন্নতির ভিত্তিতে রাজ্যগুলির একটি তালিকা তৈরি করেছিল। কমিটির সুপারিশ ছিল, ওই তালিকার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট রাজ্যকে কেন্দ্রীয় সাহায্য দেওয়া হোক। রাজনের সুপারিশে সব চেয়ে পিছিয়ে পড়া রাজ্য হিসেবে দেখানো হয়েছিল বিহার, ওড়িশা ও উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলিকে। তৃণমূলের অভিযোগ, লোকসভা ভোট-পরবর্তী জোটের কথা মাথায় রেখেই ওই রিপোর্টে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বিষয়টি সামনে আসার পর ক্ষুব্ধ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি চিঠিও লেখেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে। আজ চিদম্বরমের সঙ্গে বৈঠকের শেষে অমিতবাবু দাবি করেন, “প্রধানমন্ত্রী পাল্টা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন ওই রিপোর্ট চূড়ান্ত নয়। এ নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি কেন্দ্র।”
গত মাসে তৃণমূল সাংসদদের একটি প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে চিদম্বরমের কাছে রাজ্যের ঋণ ও সুদে ছাড় ও সামগ্রিক ভাবে ঋণ পুনর্বিন্যাসের দাবি জানানো হয়েছিল। মূলত গত মাসের ওই বৈঠকের নতুন করে পর্যালোচনা করতেই আজ আলোচনায় বসেন দুই অর্থমন্ত্রী। বৈঠকে অমিতবাবু তথ্য পরিসংখ্যান তুলে ধরে চিদম্বরমকে জানান, গত এক বছরে রাজ্যের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বেড়েছে ৭%। রাজস্ব খাতে আয় বৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৩১৭%। যা গোটা দেশে রেকর্ড। কিন্তু তা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় ঋণ ও তার সুদ মেটাতে রাজ্যের কোষাগার থেকে আগামী বছর যাবে প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা। ফলে ইচ্ছা থাকলেও কোনও বড় মাপের উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা হাতে নিতে পারছে না রাজ্য। অমিতবাবুদের দাবি, একমাত্র ঋণের উপরে ছাড় পেলেই আর্থিক ভাবে সাবলম্বী হতে পারবে পশ্চিমবঙ্গ।
তবে কেবল পশ্চিমবঙ্গকে ঋণ ও সুদে ছাড় দেওয়া সম্ভব নয় বলে আগেই জানিয়েছে কেন্দ্র। কারণ, সে ক্ষেত্রে সব রাজ্যই ঋণে ছাড় চাইবে। আজ চিদম্বরম বলেন, “অমিতবাবুকেই পাল্টা প্রশ্ন করে জানতে চেয়েছি যে বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামোয় এবং আমাদের কাছে যে সীমিত অর্থ রয়েছে তা দিয়ে কী ভাবে ওই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব?” |