বিজয়া দশমীর পরেও মানবাজারের মধুপুরের ঘোষমেলায় দুর্গা প্রতিমার বিসর্জন করা হয় না। তিন সপ্তাহ ধরে মন্দিরেই থাকে প্রতিমা। সেই মন্দিরেই কালী প্রতিমা গড়ে পুজোপাঠ হয়। তার পর কালী ও দুর্গা প্রতিমা এক সঙ্গে বিসর্জন দেওয়া হয়। এমনটাই গত দু’দশক ধরে ঘোষ পরিবারের পুজোয় চলে আসছে।
কেন এই নিয়ম? সদুত্তর মেলেনি পরিবারের প্রবীণ সদস্যদের কাছেও। ঘোষ পরিবারের এক কর্তা চন্দ্রশেখর ঘোষ বলেন, “কালী পুজোর পরে শুভদিন দেখে দুর্গা প্রতিমার সঙ্গে বিসর্জন দেওয়া হয়। এমনটাই বরাবার হয়ে আসছে।” পরিবারের অন্য দুই সদস্য সুরজিৎ ঘোষ, কৌশিক ঘোষ বলেন, “কেন এই নিয়ম আমরা জানি না। পূর্ব পুরুষদের প্রথা আমরা বিনা বাক্য ব্যয়ে মেনে আসছি।” পরিবার সূত্রে জানা যায়, এই পরিবারে আগে দুর্গাপুজো হত। পরে এখানে কালীপুজো শুরু হয়।
বর্তমানে বিজয়া দশমীর পর থেকে দুর্গা প্রতিমার নিত্য পুজোপাঠ হয়। কালীপুজোর দিন সকালে দুর্গার বিশেষ পুজো করেন পুরোহিত। রাতে হয় কালীপুজো। মন্দিরের পুরোহিত সমর চট্টোপাধ্যায় জানান, বংশ পরাম্পরায় তাঁরা ঘোষ মেলায় দুর্গা এবং কালীপুজো করে আসছেন। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে এ ধরনের পুজোর নজির রয়েছে। ভাইফোঁটার পরে শুভদিন দেখে এক সঙ্গে দু’টি প্রতিমার বিসর্জন করা হয়। ঘোষ পরিবারের বয়োঃজ্যেষ্ঠ বটকৃষ্ণ ঘোষ, রামচন্দ্র ঘোষ, অজিত ঘোষদের মতে, “ওই প্রথার জন্য মন্দির চত্বরে সপ্তাহ তিনেক ধরে কত লোকের আনাগোনা থাকে। কত গল্প হয়। অনেককে দেখে ছেলেবেলার স্মৃতিও মনে পড়ে যায়।” খুশি ছোটরাও। ওই ক’টা দিন ধরে এলাকায় পুজোর রেশ থেকে যায়। তাই হই হট্টগোলে তারা মেতে ওঠে। |