রাত পোহালেই দীপাবলি। আলোর উৎসবে ভাসবে সারা দেশ। অথচ পুরুলিয়ার প্রদীপ শিল্পীদের মুখে আঁধার। যে সময় তাঁদের পসরার সামনে থিকথিকে ভিড় থাকত, এখন দীপাবলির আগে সেই ক্রেতাদেরও দেখা নেই। পসরা সাজিয়ে কার্যত মাছি তাড়াতে হচ্ছে তাঁদের।
অন্য বছরগুলি এই সময়ে পুরুলিয়া শহরের বড়হাটের মোড়, লাগোয়া চাইবাসা রোড, মানভূম ক্রীড়া সংস্থার অফিসের সামনের রাস্তায় বিক্রেতারা গা ঘেঁষাঘেঁষি করে নানা আকারের মাটির প্রদীপ সাজিয়ে বসে থাকতেন। এ বার সেই বড়বাজারেই উল্টো ছবি। বিক্রেতারা আছেন, রাস্তায় ভিড়ও রয়েছে কিন্তু খদ্দের নেই। |
বড়বাজারে প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে মাটির প্রদীপ বিক্রি করেন পুরুলিয়া ১ ব্লকের কোটলুই গ্রামের চৌধুরী কুমার। তাঁর কথায়, “এ বার বৃষ্টি পিছু ছাড়েনি। কষ্ট করে তৈরি করেছি। প্রদীপ শুকোতেও বেশ বেগ পেতে হয়েছে। কিন্তু রোজগার তো দূরের কথা, পরিশ্রমের দামও উঠছে না। এ বার বিক্রিই নেই।” অন্য বিক্রেতা পরশুরাম কুমার বলেন, “সকাল থেকে বসে রয়েছি। বেলা পড়ে এল। বিক্রির পরিমাণ খুবই কম।” আরও এক বিক্রেতা নুনকা কুমারের কথায়, “আমিও এই বাজারে দীর্ঘদিন মাটির জিনিসপত্র বিক্রি করছি। বেশ কয়েক বছর থেকেই দেখছি বিক্রি কমছে। এ বার তো সারাদিন বসে থাকার দামটুকুও পাচ্ছি না।”
বিক্রি না থাকলেও প্রতিদিনই সকালে আশা নিয়েই তাঁরা পসরা সঙ্গে করে বাজারে আসেন। কিন্তু কালীপুজোর আগের দিনেও ছবিটা বিশেষ বদলায়নি। ভরত কুমার নামে আর এক বিক্রেতা জানান, অন্য বছরগুলোতে বাজারে আসার সময় রাস্তাতেই অনেকটা মাল শেষ হয়ে যেত। ছোট প্রদীপের দাম মাত্র পঞ্চাশ পয়সা, তার চেয়ে একটু বড় এক টাকা, আরও বড়র দাম দু’টাকা। তবু বিক্রি নেই। এখন নতুন প্রজন্মের ক্রেতাদের কাছে প্রদীপের চাহিদা তেমন নেই।” |