টানা বৃষ্টিতে এ বার দুর্গোৎসবের আনন্দ অনেকটাই মাটি হয়েছে। তাই কালীপুজোর জুলুসে সেই ফিকে হওয়া আনন্দ ফিরে পেতে মরিয়া খাতড়াবাসী। পুজো উদ্যোক্তরাও দর্শকদের হরেক মজার স্বাদ দিতে নানারকম আয়োজন করেছেন।
যমপুরী থেকে ভগ্নপ্রায় জমিদারবাড়ি, ত্রিপুরার ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির থেকে পুরনো দিনের ঠাকুরদালান এমনই নানা থিমে সেজে উঠেছে বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের এই সদর শহরের পুজো মণ্ডপগুলো। রয়েছে বাঁশের কারুকার্যে ভরা সুদৃশ্য মণ্ডপ। সঙ্গে থাকছে প্রতিমার সাজে মানুষের প্রদর্শনীও। ফি বছরের মতো এ বারও খাতড়ায় ছোট-বড় মিলিয়ে ৪০টির বেশি কালীপুজো হচ্ছে। তার মধ্যে স্টার ক্লাব, নাইন স্টার, উত্তরপল্লি, মেধাবী সঙ্ঘ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ক্লাব, সূর্য সঙ্ঘ, রবীন্দ্র সরণি ফ্রেন্ডস ক্লাব ও গোল্ডেন ক্লাবের মতো সর্বজনীনগুলির মণ্ডপ ও আলোকসজ্জা এ বারেও দর্শনার্থীদের ভিড় টানবে বলে আশাবাদী উদ্যোক্তারা। অভিনব থিমের ভাবনায় চমক দিতে যাচ্ছে খাতড়া নাইন স্টার। তাদের থিম ‘যমপুরী’। পুজো কমিটির সম্পাদক নিতাই বাউরি জানান, প্রায় দু’হাজার বর্গফুট এলাকা জুড়ে দিয়ে মণ্ডপ তৈরি হয়েছে। মণ্ডপশিল্পী বাপি সূত্রধর বলেন, “জীবনে চলার পথে পাপ, অপকর্ম করলে ঈশ্বর যে সাজা দেবেন তার ছবিই তুলে ধরা হয়েছে এই মণ্ডপে।” |
ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির দর্শন হয়ে যাবে স্টার ক্লাবের মণ্ডপে। পুজো কমিটির সম্পাদক গৌতম দে জানান, ঝিনুকের গুঁড়ো দিয়ে তাঁরা মণ্ডপ তৈরি করেছেন কাঁথির শিল্পী পূর্ণ দাস ও নিমাই মাঝি। পুরনো জমিদার বাড়িকে মনে করিয়ে দেবে মেধাবী সঙ্ঘের মণ্ডপ। ক্লাব সম্পাদক বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায় জানান, জমিদারি প্রথা বিলুপ্তির পরে জমিদার বাড়ির ভগ্নদশাকেই তাঁরা তুলে ধরেছেন। ভাবনায় পিছিয়ে নেই খাতড়া উত্তরপল্লিও। রজত জয়ন্তী বর্ষে তাদের আকর্ষণ বাঁশের ঝুড়ি, কুলো দিয়ে সাজানো মণ্ডপ। ক্লাবের সম্পাদক টুটুল কর জানান, রাস্তার দু’ধারে থাকছে জামশেদপুরের আলো। জীবন্ত প্রতিমা তাদের অন্যতম আকর্ষণ। খাতড়া ইন্ডিপেন্ডেন্ট ক্লাব তুলে ধরেছে পুরনোদিনের ঠাকুর দালান।
তবে এ বারও দর্শকরা ভিড় করবেন খাতড়া মহাশ্মশান কালীর পুজোয়। পুজোর পরদিন মন্দির প্রাঙ্গনে এলাকার বহু মানুষকে খিচুড়ি ভোগ খাওয়ানো হয়। পুজো হয় খাতড়া আদি ষোলো আনার মন্দিরে। |