|
|
|
|
|
|
|
মুখোমুখি... |
|
আমার তো অনিল কপূরের মতো বাবা নেই |
মুদিখানা থেকে নিজেই বাজার করেন। ওঁর ছবি কান উৎসবে প্রশংসা পায়।
রিচা চাড্ডা।
সঞ্জয় লীলা
বনশালির ‘রামলীলা’-র অভিনেত্রী। সুইডেনে টিঙের অবসরে তাঁকে ফোনে ধরলেন প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত। |
রিচা চাড্ডার ভারতীয় মোবাইলটা বেশ কিছু দিন হল গণ্ডগোল করছে। সুইডেনে এক মাস হল শ্যুটিং করছেন। মাঝেমধ্যে ‘ওয়ে লাকি লাকি ওয়ে’, ‘গ্যাংস অব ওয়াসেপুর’, ‘ফকরে’র নায়িকা তাই দেশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন টুইটারে। ওখানেই পোস্ট করছেন সুইডেনের নানান লোকেশনের ছবি। সামনে মুক্তি পেতে চলেছে রিচা-অভিনীত সঞ্জয় লীলা বনশালির ‘রামলীলা’। তার আগে আড্ডা বিদেশ থেকে।
পত্রিকা: দিওয়ালির সময় দেশের বাইরে। মিস করছেন না?
রিচা: ভীষণ। দেখা যাক এখানেই যদি কিছু ধামাকা করা যায় কি না!
পত্রিকা: প্রায় এক মাস তো হতে চলল সুইডেনে...
রিচা: হ্যাঁ, এখানে দারুণ ঠান্ডা। ঘুম থেকে উঠে আপনার ফোন পেলাম। আজ এত ঝড় হচ্ছে যে আমরা আউটডোর শু্যটিং করতেই পারলাম না। তাই গোটা দৃশ্যটা ইন্ডোরে শ্যুট করতে হবে।
পত্রিকা: তা দেশে তো ‘রামলীলা’ নিয়ে বেশ হইচই পড়ে গেছে। আপনি যে ধরনের সিনেমা করেছেন, তার থেকে তো ‘রামলীলা’ একেবারেই অন্য রকমের...
রিচা: হ্যাঁ, একদম ঠিক। যদিও এটা বলব যে এত দিন যাই করি না কেন, কেউ আমাকে স্লট করতে পারেননি। আমি যাকে বলে ‘লার্জলি অল্টারনেটিভ’ সিনেমা করেছি। যখন প্রথমে ‘রাম লীলা’র অডিশনে যাই, তখন বলা হয়েছিল যে একজন শ্যামলা মেয়েকে ওঁদের দরকার। লুক টেস্ট করা হয়েছিল আমার। আমি স্ক্রিপ্টটাও পড়িনি। শুধু জানতাম সঞ্জয় লীলা বনশালির সিনেমা। যে করেই হোক আমি সেই সিনেমায় অভিনয় করার সুযোগটা ছাড়তে চাইনি।
পত্রিকা: অডিশনের সময় সঞ্জয় লীলা বনশালি ছিলেন?
রিচা: না, ছিলেন না। প্রথম প্রথম বেশ নার্ভাস লাগছিল। আমি তো কোনও দিন এত বড় সিনেমা করিনি।
পত্রিকা: সে অর্থে হয়তো বড় সিনেমা করেননি, তবে আপনি তো কান চলচ্চিত্র উৎসবে গিয়েছেন। নিজের সিনেমার কাজের জন্য গিয়েছিলেন। সেটাও তো কম বড় নয়...
রিচা: হ্যাঁ, তা গিয়েছিলাম ‘গ্যাংস অব ওয়াসেপুর’য়ের ক্ষেত্রে। ‘রাম লীলা’তে রোলটা ফাইনালাইজ হওয়ার দু’সপ্তাহের মধ্যেই ‘গ্যাংস অব ওয়াসেপুর’ মুক্তি পেয়েছিল। সেখানে আমার অভিনয় খুব প্রশংসা পায়। তখন বুঝেছিলাম যে কোথাও দর্শকের বোধহয় আমার থেকে একটা প্রত্যাশা তৈরি হচ্ছে। এমন অনেক ক্ষেত্রে হয়েছে যে লোক আমাকে নাগমা (‘গ্যাংস অব ওয়াসেপুর’-য়ের চরিত্রের নাম) ধরেই ডেকেছেন। এটা আমার কাছে একটা বিশাল কমপ্লিমেন্ট।
|
|
‘রামলীলা’য় রিচা। |
পত্রিকা: তবে নাগমা চরিত্রটায় অনেক কিছুই করেছিলেন যা আমাদের দেশের অভিনেত্রীরা করার আগে দু’বার ভাববেন...
রিচা: সত্যি বলব? আমি নিশ্চয়ই অনেক কিছু করেছিলাম। প্রসথেটিক্স ব্যবহার করে এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলার চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম। পরদায় নাগমার চরিত্রের বয়স বাড়তে থাকে। শেষের দিকে নাগমার বয়স ছিল ৬০। এগুলো সব সাহস করে করেছিলাম ঠিকই, তবু বলব যে আমি তো ঠিক অনুপম খেরের মতো অত সাহস দেখাইনি যেটা তিনি ‘সারাংশ’-এ দেখিয়েছিলেন। প্রথম সিনেমাতেই ওই রকম এক বৃদ্ধের চরিত্রে অভিনয় করা চাট্টিখানি কথা নয়। নিজের সম্পর্কে এটা বলব যে ২৪-২৫ বছর বয়সে নাগমার মতো চরিত্র করে যেটা হয়েছে তা হল মেক আপ ছাড়া আমাকে দেখে অনেকেই বলেন: ‘ও মা, তোমার বয়স এত কম!’ শুধু তাই নয়, আমার সম্পর্কে আরও অনেক ধারণা আছে লোকের, যার সঙ্গে বাস্তবের কোনও যোগ নেই।
পত্রিকা: যেমন?
রিচা: একবার একজন আমার সঙ্গে দেখা করে বললেন, “আপনি তো অশ্লীল কথা একেবারে ব্যবহার করেন না!” বুঝলাম বাস্তবের রিচার সঙ্গে পরদার নাগমার চরিত্রটা গুলিয়ে ফেলেছেন। ‘গ্যাংস অব ওয়াসেপুর’ তো এক রকম। ‘ফুকরে’ বলে যে সিনেমাটা করেছি, সেখানেও আমার চরিত্রটা ছকে বাঁধা নয়। মহিলা ডনের চরিত্র। করার আগে ভেবেছিলাম শু্যটিংয়ে মজা হবে। করে দেখি লোকের সিনেমাটা ভাল লাগল। দিল্লিতে একবার আমার বাবার সঙ্গে একটা অনুষ্ঠানে গিয়েছি। একজন এসে আমাকে বললেন, “ভোলি পঞ্জাবন কে পাস পাপা ভি হ্যায়!” ‘ফুকরে’-তে আমার চরিত্রের নাম ছিল ভোলি পঞ্জাবন। আর ভদ্রলোক আমার বাবাকে দেখে আশ্চর্য হয়ে বললেন, “ভোলি পঞ্জাবন’য়ের বাবাও আছে! কী আশ্চর্য বলুন তো?” আমি একটা চরিত্র করলাম, তা সে ডন হোক বা অন্য কিছু, তার কেন বাবা থাকবে না? বাবার সামনে কী যে অস্বস্তিতে পড়েছিলাম!
পত্রিকা: এই যে সঞ্জয় লীলা বনশালি সম্পর্কে শোনা যায় যে তিনি খুব বদমেজাজি। এটা কি মিথ না সত্যি?
রিচা: সঞ্জয় লীলা বনশালি ইজ আ স্পেশাল ম্যান। উনি একজন সংবেদনশীল মানুষ। ডাই-হার্ড রোম্যান্টিক আর গভীর ভাবে ‘ফেমিনিস্ট’। নিজের মায়ের নামটা নিজের নামের সঙ্গে জুড়ে লেখেন। মা আর বোনকে সব সময় কত সম্মান দেন। কেন যে ওঁর রাগ নিয়ে কথা হয়! এক-একজনের কাজের ধারণাটা এক-একরকম থাকে। কেউ খুব ইমোশনাল। কেউ আবার হঠাৎ করে মাথা গরম করে ফেলেন।
পত্রিকা: কোনও দিন বকুনি খেয়েছেন ওঁর কাছে?
রিচা: না। আমাকে উনি যত্ন করে প্রায় হাতের তালুর মধ্যে রেখে দিয়েছিলেন।
পত্রিকা: অনেকে বলে দুই অভিনেত্রী একসঙ্গে কাজ করলে অনেক ক্ষেত্রে গণ্ডগোল হয়। দীপিকা পাড়ুকোনের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক আপনার?
রিচা: আমি কোনও অভিনেত্রীকে হিংসে করি না। দীপিকাকে ‘ককটেল’ থেকে দেখছি। প্রতিটা ফিল্মে ও ইমপ্রুভ
করেছে। সহঅভিনেত্রী ভাল কাজ
করলে আমার মনে হয় সেটা আমার
পক্ষে মঙ্গলের।
পত্রিকা: দিবাকর আর অনুরাগ কাশ্যপের কাজের ধরনের মধ্যে পার্থক্যটা কোথায়?
রিচা: দিবাকর হল ক্যালকুলেটেড। ও যা চায়, সেটা ওঁর মাথার ভেতর পরিষ্কার। আর অনুরাগ হল ইমপ্রোভাইজেশনাল। আমার সৌভাগ্য যে এই রকম পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করে নিজের ট্যালেন্ট নানা ভাবে আবিষ্কার করছি।
পত্রিকা: কলকি, মানে অনুরাগ কাশ্যপের স্ত্রীর সঙ্গে আপনার তো বেশ ভাব, তাই না?
রিচা: সুইডেনে একসঙ্গে সিনেমা করছি। তবে সহ-অভিনেত্রী বলে বলছি না, ও যতটা ট্যালেন্টেড, ঠিক ততটাই কুল। ওর মেলামেশাতে বেশ উষ্ণতা রয়েছে। খুব এনার্জেটিক। এক্ষুনি যদি ওকে বলি, চলো ডিপ সি ড্রাইভিং করবে? ও এক পায়ে খাড়া হয়ে যাবে। এটাই কলকি। এক ফোঁটা ঘ্যাম নেই। ওর সঙ্গে ‘জিয়া অওর জিয়া’ ছবির শ্যুটিং করতে গিয়ে দারুণ ভাল অভিজ্ঞতা হল। ফিল্মটা দু’টি মেয়ের গল্প। দু’জনের নামই জিয়া। ওরা একসঙ্গে বেড়াতে যায়... গল্পটা ওদের এই বেড়ানোটা ঘিরেই।
পত্রিকা: মধ্যবিত্ত পরিবারে বড় হয়েছেন। সেখান থেকে বলিউডে জায়গা করে নেওয়াটা শক্ত হয়নি?
রিচা: আজও ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেকে বহিরাগত বলে মনে করি। আমার অনিল কপূরের মতো বাবা নেই। একটা সিনেমা ফ্লপ করলে আমাকে আরও পাঁচটা ছবি করার জন্য কেউ ডাকবে না। কেউ বলবে না, আচ্ছা অভিনয়টা হল না, চলো ওকে দিয়ে একটা আইটেম নাম্বার করিয়ে নিই। আমি মুম্বইতে মানুষ হইনি। আজও এখানকার স্থানীয় ভাষা বুঝতে একটু একটু অসুবিধে হয়। আমি খুব ভাল করে জানি যে, যেটুকু আমি ইন্ডাস্ট্রিতে পাব, সেটা আমার ট্যালেন্টের জোরে পাব। আর একটা কথা, আমি আজও ভীষণই মধ্যবিত্ত হয়েই থাকতে চাই। গাড়িটা পালটেছি। কিছু নতুন গ্যাজেটস কিনেছি। কিন্তু মুদিখানা থেকে নিজে বাজারটা করি।
পত্রিকা: কোনও দিন শোনেননি স্টার হতে গেলে এই মুদিখানার দোকান, মাছের বাজারে রোজ দেখা যাওয়াটা উচিত না?
রিচা: কেউ কেউ বলেছেন। কিন্তু পাগল নাকি যে আমি তাঁদের কথা শুনব?
পত্রিকা: কেন নয়? কান-এ গিয়েছেন সিনেমা নিয়ে। এত নামী পরিচালকদের সঙ্গে সিনেমা করেছেন...
রিচা: আরে পাড়ার সবজিওয়ালা কি কান বোঝেন? তা হলে কেন ভুল-ভাল ধারণা নিয়ে থাকব? হলিউড দেখুন। বহু তারকা আছেন ওখানে যাঁরা আজও নিজের বাজারটা করেন।
পত্রিকা: রাসেল ক্রো তো এই নিয়ে লিখেওছেন টুইটারে...
রিচা: যদি কোনও স্টারলেট ‘বিগ বস’-এ অভিনয় করে প্রচুর জনপ্রিয়তা পেয়ে গিয়ে আর পাবলিক প্লেসে একলা যেতে না পারেন, তা’ও একরকম। প্রত্যেকের বাড়ির ড্রইং রুমে নব্বই দিন ঢুকে পড়ার পর হয়তো আবার সবজির বাজারে যাওয়া যায় না। ওঁদের মতো তো আমার সেরকম কোনও কারণ নেই, তা হলে হঠাৎ করে অন্য রকম আচরণ করবই বা কেন? এ কথা বলতে পারি... যদি কোনও দিন রাসেল ক্রোর মতো জনপ্রিয় হয়ে যাই, তবু নিজের বাজারটা নিজেই করব। এটাই রিচা চাড্ডা।
পত্রিকা: পরদায় আপনি অনেক সময় বোল্ড রোল করেছেন। আপনার নিজের অভিধানে ‘বোল্ড’ মহিলার সংজ্ঞাটা কী?
রিচা: ‘বোল্ড’ শব্দটা অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়, কেননা লোকের ‘সেক্সি’ বলতে অসুবিধে হয় তাই। যে মহিলা নিজের মনের কথা বলতে পারে, এই ইন্ডাস্ট্রিতে একটা স্ট্যান্ড নিতে পারে, তাঁকেই আমি ‘বোল্ড’ বলব। কথা বললে অনেক ঝামেলায় জড়িয়ে পড়বেন ভেবে অনেকেই আর মনের কথা স্পষ্ট করে প্রকাশ করেন না। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিটা ভীষণই ইনসিকিওর একটা জায়গা। এখানে পারফরমেন্সই শেষ কথা নয়। ক্রিকেটে দেখুন। যদি একজন ব্যাটসম্যান ভাল স্কোর করার পরও দল ম্যাচটা হেরে যায়, টিমে কিন্তু তাঁর জায়গাটা পাকা থাকে। কিন্তু অভিনেতাদের ক্ষেত্রে? ভাল অভিনয় করে সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েও কেউ কি গ্যারান্টি দিতে পারেন পরে আরও ভাল ছবিতে তাঁর জায়গা হবেই? লাক, ডেসটিনি, নেটওয়ার্কিং কাজ পেতে গেলে কত কী থাকতে হয়!
পত্রিকা: এই রকম একটা অনিশ্চিত কেরিয়ারে কোনও বেশি-টাকা-অফার করা ছবিকে না বলতে অসুবিধে হয় না?
রিচা: অবশ্যই হয়। শুধু বড় ফিল্ম নয়, অনেক সময় ছোট ফিল্মেও অনেক টাকা পাওয়া যায়। কিন্তু না বলার জন্যও সাহস লাগে। ভাবতে হয়, কী ধরনের রোল করতে চাই আর সেটা এই ছবি দিচ্ছে কি না। সিনেমার সঙ্গে আমি একটা লম্বা রিলেশনশিপ চাই। ওয়ান-নাইট স্ট্যান্ড নয়। তাই না বলতে শিখতে হয়। ভাগ্যক্রমে আমার একটা ডিসেন্ট লাইফস্টাইল রয়েছে। বাড়িতে চারজনকে খাওয়ানোর দরকার পড়ে না, যে তাঁদের মুখ চেয়ে আমাকে সব সিনেমা করতে হবে। আমার অন্য কোনও দায়-দায়িত্বও তেমন নেই।
পত্রিকা: বহিরাগত, আর তার ওপর মহিলা। এই পরিচয় নিয়ে বলিউডে কাজ করাটা কতটা কঠিন?
রিচা: কাউকে তো শুরুটা করতেই হত। একটা সময় ছিল, যখন মহিলারা সিনেমাতে অভিনয় করলে অনেকেই ভাবতেন তিনি ‘বাজারের মেয়ে’। আজ আর সে প্রশ্ন কেউ করেন না। এখন কোনও রিয়্যালিটি শো দেখুন। কত বাবা-মা একটা স্বপ্ন নিয়ে বসে থাকেন। মেয়েকে অভিনেত্রী করতেই হবে। জোয়া আখতার, গৌরী সিন্ধে, রীমা কাগতি এই মহিলা পরিচালকরা কত নতুন নতুন ভাবনা নিয়ে কাজ করছেন। মীরা নায়ারের সঙ্গে শর্ট ফিল্ম করেছি আমি। আমার স্বপ্ন যে এমন একটা দিন আসবে, যখন এই প্রশ্নটা আর করা হবে না। কেউ জিজ্ঞেস করবে না, মহিলা হয়ে কাজ করাটা কতটা অসুবিধের!
পত্রিকা: সঞ্জয় লীলা বনশালির জন্মদিনের পার্টিতে আপনি আমন্ত্রিত। সইফ আলি খান আর অভিষেক বচ্চন আপনার সঙ্গে আড্ডা দেন। এখনও ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেকে বহিরাগত বলবেন?
রিচা: হ্যা। বলব। আমি তো ওদের মতো ছোটবেলা থেকে ইন্ডাস্ট্রিতে বড় হইনি। এক সময়ে আমি একটা ম্যাগাজিনে ইন্টার্নশিপও করেছি। তারকাদের পিছনে দৌড়তে হয়েছে আমাকেও। আজ আমার অবস্থাটা ঠিক তার উলটো। এটুকুই শুধু বলব, আমি এখন একদম স্টার-স্ট্রাক নয়। বলতে পারেন, তারকাদের আজকে কলিগ হিসেবে দেখি। |
|
|
|
|
|