কালীপুজোর রাতে দোদমা, কালীপটকা বা চকোলেট বোমা ফাটাতে চাইলে নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন করে দিন। বাজির দাম আর গাড়ি ভাড়া অগ্রিম পাঠিয়ে দিন নির্দিষ্ট ঠিকানায়। তার পরে নিশ্চিন্তে বাড়িতে বসে থাকুন। ডেলিভারি-ম্যান মোটরসাইকেলে করে পৌঁছে যাবে আপনার বাড়ির দোরগোড়ায়। যেন নামী কোম্পানির পিৎজা!
পুলিশের চোখ এড়িয়ে ক্রেতাদের বাড়িতে বা বাজির দোকান থেকে বেশ খানিকটা দূরে দাঁড়িয়ে থাকা ক্রেতাদের হাতে শব্দবাজি পৌঁছে দেওয়ার জন্য এমন ব্যবস্থাই করেছেন দক্ষিণ শহরতলির বাজি ব্যবসায়ীদের একাংশ। ক্রেতা আতসবাজির দামের সঙ্গে শব্দবাজির দাম মিটিয়ে দিচ্ছেন বিক্রেতাকে। বিক্রেতা চিরকুটে লিখে দিচ্ছেন মোবাইল নম্বর। নির্দিষ্ট সময়ের পরে ক্রেতা ফোন করছেন ওই নম্বরে। ডেলিভারি-ম্যান জেনে নিচ্ছেন ক্রেতার বাড়ির ঠিকানা অথবা বাজির দোকান থেকে কত দূরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ক্রেতা। সেই মতো হাতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে বাজির প্যাকেট (শব্দবাজি-সহ)।
শব্দবাজি বিক্রির জন্য মোটরসাইকেল কেন? দক্ষিণ শহরতলির এক বাজি ব্যবসায়ীর কথায়, “পুলিশের হ্যাপা সামলাতেই আমাদের ওই ব্যবস্থা।”
কী ভাবে কাজ করছেন ডেলিভারি-ম্যানেরা? |
ব্যবসায়ীদের একাংশ জানান, এক-একটি মোটরসাইকেলে তিন জন থাকছেন। দু’জনের কাছে থাকছে খদ্দেরের জিনিসপত্র (এ ক্ষেত্রে শব্দবাজি)। এক জন চালাচ্ছেন মোটরসাইকেলটি। পুলিশকে দেখতে পেলেই এলাকা ছেড়ে চম্পট দিচ্ছেন তারা। ক্রেতাকে ফোন করে বলে দেওয়া হচ্ছে, কোন রাস্তায় অপেক্ষা করতে হবে অথবা বলা হচ্ছে বাড়িতে আরও কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করতে। ঘুরপথে ডেলিভারি-ম্যান খানিক বাদে পৌঁছে যাচ্ছেন ক্রেতার কাছে।
শব্দবাজির বিক্রেতাদের দোকান থেকেই গ্রেফতার করতে পারছে না কেন পুলিশ?
দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক পুলিশকর্তা বলেন, “শব্দবাজি যাঁরা বিক্রি করছেন, তাঁরা দোকানের ভিতরে বাজি রাখছেন না। দোকান থেকে কিছুটা দূরে রাস্তায় বা কোনও বাড়ির সামনে বস্তায় রাখা থাকছে শব্দবাজি। সেই বাজির মালিক কে, তা জানাই যাচ্ছে না। আমরা কেবল শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করছি। শব্দবাজি কে তৈরি করেছে, তা-ও জানা নেই। শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করে বিক্রেতাদের একটু চাপে রাখা ছাড়া আর কিছু করার নেই পুলিশের।”
পুলিশের একাংশই জানাচ্ছে, দক্ষিণ শহরতলির চম্পাহাটি, নুঙ্গি, বজবজ এলাকার বাজির বাজারে লুকোছাপায় বিক্রি হচ্ছে চকোলেট বোমা-সহ অন্য শব্দবাজি। ১০০ পিস চকোলেট বোমের দাম ৮০ টাকা। ওই দামের সঙ্গে দোকানদার জুড়ে নিচ্ছেন মোটরসাইকেল বাহিনীর যাতায়াতের খরচ। খদ্দের বাড়িতে বসে পেয়ে যাচ্ছেন পছন্দের শব্দবাজি। |