|
|
|
|
জামিন মিললেও লালুর জন্য জেলেই আছেন রানা |
প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায় • রাঁচি |
দলনেতাকে জেলে বড় একা হয়ে যাবেন! তাই জামিন পাওয়ার সাত দিন পরেও জেলেই রয়ে গিয়েছেন আরজেডি নেতা, পশুখাদ্য মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত রবীন্দ্রকুমার রানা। অন্তত সেই রকমই মনে করছেন দলেরই একাংশ।
পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির চাইবাসা ট্রেজারি তছরুপের মামলায় অবিভক্ত বিহারের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ এবং জগন্নাথ মিশ্রর সঙ্গে রানাকেও দোষী সাব্যস্ত করে বিশেষ সিবিআই আদালত। রানাকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড আর ত্রিশ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে সিবিআই আদালত। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে আরজেডির প্রাক্তন বিধায়ক রানা রাঁচি হাইকোর্টে জামিনের জন্য আবেদন জানান। গত শুক্রবার হাইকোর্ট তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছে। কিন্তু রানা এখনও জেলেই রয়ে গিয়েছেন।
রাঁচির বিরসা মুন্ডা জেল প্রশাসন জানিয়েছে, রানার জন্য জামিনদার না মেলায় আদালত থেকে রানাকে ছাড়ার কোনও নির্দেশ আসেনি। ফলে তাঁকে ছাড়া যাচ্ছে না। জেল সুপার বীরেন্দ্র কুমারের কথায়, “নিয়ম মতো জামিন প্রাপ্ত বন্দির জন্য কাউকে জামিনদার হয়ে দাঁড়াতে হয়। জামিন পেয়ে সেই আসামি পালিয়ে গেলে জামিনদারকেই আর্থিক খেসারত গুনতে হয়। এ পর্যন্ত ওই বন্দির জন্য কোনও জামিনদার পাওয়া যায়নি বলেই আমরা শুনেছি। আর জামিনের অর্থ আদালতে জমা না পড়ায় এখনও রানাকে ছাড়ার কোনও নির্দেশ আসেনি।”
তবে জামিনের জন্য আবেদন জানিয়ে এবং জামিন পাওয়ার পরেও জেলে থেকে রানা না বেরোনয় জেলকর্মীরাও অনেকেই অবাক। এক জেল আধিকারিকের কথায়, “জামিনদার পাওয়া না গেলে অনেকই জামিনের পরে এক-দু’মাস জেলে থাকেন। কিন্তু রানার মতো বন্দিদের জন্য জামিনদার না পাওয়ার বিষয়টি সত্যিই বিস্ময়কর!” ওই জেলকর্তার কথায়, “হতে পারে, দলনেতা জেলে একেবারে একা হয়ে যাবেন। সেই কারণেই কৌশলগত কারণে রানা জেল থেকে বেরোচ্ছেন না।”
পশুখাদ্য মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ বিরসা মুণ্ডা জেলেই বন্দি রয়েছেন। লালু এবং রানার মধ্যে সখ্যতার কথা সকলেরই জানা। জেলসূত্রে খবর, জেলে লালু এবং রানার থাকার জায়গাও প্রায় পাশাপাশি। এবং জেলে থাকলেও, লালু সেখানে বসেই দলনেতাদের নিয়ে দরবার বসিয়ে যাচ্ছেন। জেলে থেকেই দল চালাচ্ছেন তিনি। নিয়ম করে দলীয় নেতারা তাঁর সঙ্গে গিয়ে দেখা করছেন।
আরজেডি নেতা-সাংসদ রামকৃপাল যাদব অবশ্য জানাচ্ছেন, রানার সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, “রানা কেন জেলের বাইরে আসছেন না সেটা দলের পক্ষে বলা সম্ভব নয়। রানার মামলার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নেই।” যদিও রাজনীতির কারবারিদের ব্যাখ্যা অন্য। তাঁদের বক্তব্য, বিহারের খগড়িয়ার এই নেতার আর্থিক অবস্থা এতটাই ভাল যে কোটি টাকার জামিন বন্ড হলেও তা পূরণ করা তার পরিবারের পক্ষে কোনও ব্যাপার নয়। তাই জামিনের অর্থ কোনও বাধাই নয়। আসলে, রানা লালুর ঘনিষ্ঠ। তিনি জেল থেকে বেরোলে লালু একা হয়ে যাবেন। দলের একাংশও অবশ্য একান্তে স্বীকার করছেন, লালুকে সঙ্গ দিতেই রানা জেলে রয়ে গিয়েছেন।
ঘটনা যাই হোক জামিন পেয়েও রানা এখনও জেলে। কতদিনে তাঁর জামিনদার পাওয়া এখন সেটাই দেখার। উল্লেখ্য, শীঘ্রই লালুপ্রসাদের জামিনের জন্য তাঁর আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করবেন বলে দলের তরফে জানানো হয়েছে। |
|
|
|
|
|