রোমান ভাস্কর্যের খোঁজ লন্ডনে
বানানো হচ্ছিল ১৬ তলা হোটেল। টাওয়ার অব লন্ডনের কাছে মিনোরিসে কয়েক মাস ধরে তার জন্য চলছিল মাটি খোঁড়াখুঁড়ি। কাজ যখন প্রায় শেষের পথে, তার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে লোকজনের চোখ পড়ে অসাধারণ একটি জিনিসের দিকে। মাটির প্রলেপ থেকে উঁকি দিচ্ছে অসাধারণ একটি ভাস্কর্য।
একটি ঈগল তার ঠোঁটে চেপে ধরে রেখেছে একটি সাপকে। উচ্চতায় ২৬ ইঞ্চি, নিখুঁত ভাস্কর্য। লন্ডনের ব্যস্ত রাস্তার নীচে সযত্নে যা রাখা ছিল অন্তত ১৯০০ বছর ধরে। প্রত্নতত্ত্ববিদদের দাবি, চুনাপাথরের তৈরি এই ভাস্কর্যটিকে প্রথম ঝলকে দেখে কারও মনেই হবে না ওটা অত পুরনো। বরং মূর্তির প্রতিটি আঁচড়, কারুকাজ দেখে মনে হবে সেটি সবে বানানো হয়েছে। ঈগলের প্রতিটি পালক, মায় সাপের চেরা জিভটিও চুনাপাথরের খোদাইয়ে স্পষ্ট।
পূর্ব লন্ডনের মিনোরিসে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে একটি সৌধের ভিতও। প্রথম বা দ্বিতীয় শতাব্দীতে সম্ভবত সেটি তৈরি করা হয়েছিল। ফিরে যেতে হবে অনেক যুগ আগে। যে সময় ব্রিটেনে ছিল রোমান সাম্রাজ্যের আধিপত্য। কিন্তু সৌধটি কার, তা নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি বিশেষজ্ঞরা। কারণ সেই সময়ে ব্রিটেনে অনেক সম্পন্ন রোমানের বাস ছিল। হতে পারে কোনও ব্যবসায়ী অথবা সেনা অফিসার বা সরকারি অফিসারের মৃত্যুর পরে ওই সৌধটি তৈরি করা হয়েছিল।

এই সেই ঈগল মূর্তি। ছবি: ডেলি মেলের সৌজন্যে।
প্রত্নত্ত্ববিদদের ধারণা, ঈগলের মূর্তিটি যে ভাবে সাপটিকে ঠোঁটে চেপে রয়েছে, সেটা হয়তো কোনও প্রতীক। যেন অশুভ শক্তির (সাপ) বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছে ঈগলটি। এই ভাস্কর্য ওই সৌধেরই অংশ।
মিউজিয়াম অব লন্ডন আর্কিওলজির বিশেষজ্ঞ মাইকেল মার্শাল বলেছেন, জুপিটার দেবতাকে তুষ্ট করতে সম্ভবত ওই মূর্তিটি তৈরি করা হয়েছিল। মৃত্যুর পরেও সে মানুষটি যেন সুরক্ষিত থাকে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা সেটাই। রোমান পুরাণে জুপিটার দেবতাদের রাজা হিসেবে পরিচিত। মার্শালের মতে, আবার এটাও হতে পারে অভিজাত পরিবার নিজেদের গরিমা বোঝাতে এবং মৃতের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সৌধে অসাধারণ মূর্তিটি রেখে দিয়েছিল।
মার্শাল জানিয়েছেন, ঈগল রোমান সভ্যতার আদি প্রতীক। সাপ-ও তাই। রোমান লন্ডনে মানুষ কী ধরনের রীতিনীতি মেনে চলত, তার একটা চিত্র পাওয়া যায় ঈগলের ভাস্কর্য থেকে। বোঝা যায়, সেই সময়ে ব্রিটেনে রোমানরা শহরের বাইরে কোনও রাস্তার সার দিয়ে পর পর সৌধ বা সমাধিক্ষেত্র সাজানোর জন্য এতটা চিন্তাভাবনা করত।
গত কাল থেকে প্রদর্শনীর জন্য ওই মূর্তি রাখা হয়েছে লন্ডন মিউজিয়ামে। থাকবে আগামী ছ’মাস। সেখানকার কিউরেটর ক্যারোলিন ম্যাকডোনাল্ড বলেন, “১৯০০ বছর আগের লন্ডনকে জানতে পারছি। এই শহরে ছড়িয়ে আছে পুরাণের ঐতিহ্য। এটা ভাবলেই রোমাঞ্চ হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.