|
|
|
|
ছুটির বহর ঠিক রাখতে নতুন তিন
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ক্যালেন্ডারের হিসেবে ২০১৪ সালে সরকারি ছুটি কমে যাওয়ারই কথা ছিল। কিন্তু তিনটি নতুন ছুটির দিন ঘোষণা করে সেই ঘাটতি পুষিয়ে দিল রাজ্য সরকার।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে সরকারি ছুটির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ২০১০ সালে বাম জমানায় সরকারি ছুটি ছিল ২৭টি। নতুন সরকার ২০১২ সালের জন্য ২৮টি ছুটি ঘোষণা করে। ২০১৩ সালে সংখ্যাটা বেড়ে হয় ৩০। আগামী বছরের জন্য সরকারের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যাচ্ছে, ছুটির সংখ্যা (৩০) এক থাকলেও আসলে এ বারেও ছুটি বাড়ানো হয়েছে।
কী ভাবে? ২০১২-য় দুর্গাপুজোয় টানা ১০ দিন ছুটি পেয়েছিলেন সরকারি কর্মীরা। ক্যালেন্ডার অনুযায়ী দুর্গা ও লক্ষ্মীপুজোর মধ্যে দ্বাদশীর দিন সরকারি অফিস খোলা থাকার কথা ছিল। মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছায় সে-দিন বিশেষ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এ বছর ওই দুই পুজোর মধ্যে ত্রয়োদশীর দিন অফিস খোলা থাকার কথা ছিল। কিন্তু টানা ১০ দিন ছুটি দিতে ত্রয়োদশীতে অফিস বন্ধ রাখা হয়।
ছুটির দিনের হেরফের ঘটিয়ে আগামী বছরেও দুর্গাপুজোয় টানা ন’দিন অফিস বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছে সরকার। আর কালীপুজোয় টানা চার দিন ছুটির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠীর দিন থেকে ৮ অক্টোবর লক্ষ্মীপুজোর পরের দিন পর্যন্ত টানা ছুটি থাকবে। প্রশাসনের বক্তব্য, আগামী বার মহাষ্টমীর দিনেই গাঁধীজয়ন্তী। সরকারি ক্যালেন্ডারে গাঁধীজয়ন্তীতে লাল কালির দাগ থাকে। আবার তিথি অনুযায়ী নবমী-দশমী পড়েছে একই দিনে। এই দু’দিনের ঘাটতি মেটাতে ষষ্ঠী ও লক্ষ্মীপুজোর পরের দিন ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
আগামী বছর কালীপুজোর পরের দিন পড়েছে শুক্রবার। ওই দিন অফিস খোলা থাকার কথা। পরের দু’দিন শনি ও রবিবার এমনিতেই ছুটি। বিজ্ঞপ্তিতে জানাচ্ছে, ‘কালীপ্রতিমা বিসর্জন’ বলে শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সরকারি অফিস ছুটি থাকবে। এটা অতীতে কখনও হয়নি। এর ফলে টানা চার দিন ছুটি ভোগ করবেন সরকারি কর্মীরা।
পালাপার্বণের হিসেবে ছুটি কমে যাওয়ার কথা থাকলেও অন্য দিন ছুটি দিয়ে কর্মীদের খুশি করার ব্যবস্থা হল। তবু মুখ্যমন্ত্রীর একটি প্রতিশ্রুতি রক্ষার উপায় না-হওয়ায় আফসোস করছেন কর্মীরা। আগামী ইংরেজি বছরের প্রথম দিন সরকারি কর্মীরা ছুটি পাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মমতা। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে তার উল্লেখ না-দেখে কর্মীরা খানিকটা হতাশ।
সরকারি কর্মীদের বিভিন্ন সংগঠন অবশ্য ছুটি বাড়িয়ে চলার সমালোচনা করেছে। সিপিএম প্রভাবিত সরকারি কর্মী সংগঠন কো-অর্ডিনেশন কমিটির নেতা অনন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সরকার কী ছুটি দেবে! গোটা প্রশাসনই তো ছুটিতে চলে গিয়েছে।” কংগ্রেস অনুমোদিত কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের নেতা মলয় মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “সরকারি কর্মীদের ৩৮% মহার্ঘ ভাতা বাকি। তার বদলে তিন দিন বাড়তি ছুটি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সরকারি কর্মীদের মন জয়ের চেষ্টা করছেন!” |
|
|
|
|
|