প্রায় ৪০ বছরের পুরসভার সব ওয়ার্ডে আজও পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছয়নি। দুবরাজপুরে ভোটের প্রচারেও বার বার এই প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। বিরোধী দলের নেতারা ক্ষমতাসীন বোর্ডের ব্যর্থতাকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। অবশেষে সেই ব্যর্থতা অপবাদ ঘুচতে চলেছে বলে দাবি পুরসভার। জল প্রকল্প দেখভালের দায়িত্বে থাকা পুর-কারিগরি দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র(বর্ধমান ডিভিশন) দিলীপকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পরিকল্পনা মাফিক সব কিছু ঠিকঠাক চললে মাস খানেকের মধ্যেই কাজ শুরু হবে যাবে বলে অশা করি।”
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, দুবরাজপুরে যে যে ওয়ার্ডে এখনও জল পৌঁছয়নি, সেই ওয়ার্ডগুলিতে পানীয় জল সরবরাহ করার জন্য প্রকল্প অনুমোদতি হয়েছিল আগেই। কেন্দ্রীয় প্রকল্প ‘শহর পরিকাঠামো উন্নয়নে’র (ইউআইডিএসএসএসটি) সেই টাকা পুরসভার হাতে পৌঁছে যাওয়া নিশ্চিত হওয়ার পর পরই শুরু হতে যাচ্ছে ২৩ কোটি ১৬ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা ব্যয়ে জল প্রকল্পের কাজ। প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালে অজয় নদের গর্ভ থেকে জল তুলে বাড়ি বড়ি পাইপ লাইনের মাধ্যমে সরবারাহ করার জন্য একটি প্রকল্প চালু হয়। তবে সেই প্রকল্পে এই পুরসভার সব ওয়ার্ডে জল পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়নি। পুরসভার ১, ২, ৯ ও আংশিক ভাবে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে জল পৌঁছয়নি। এমন কী যে সব ওয়ার্ডে জল পৌঁছেছে, সেই সব ওয়ার্ডে জলের জোগান নিয়ে ক্ষোভ আছে। ফলে নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে ৩৮,০৩৭ লোকসংখ্যা বিশিষ্ট শহরের প্রতিটি প্রান্তে জল পৌঁছে যাবে বলে আশ্বাস দিয়েছে সদ্য পুরসভার ক্ষমতা দখল করা শাসকদলও। পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডে বলেন, “এই প্রকল্প রূপায়িত হলে মোট ৮৩৩১টি বাড়িতে জল পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।”
দুবরাজপুর পুরসভা ও পুর-কারিগরি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চারটি গভীর নলকূপের সাহায্যে অজয় নদ থেকে জল তুলে ১৭ কিলোমিটার দূরত্বের দুবরাজপুর শহরে পাইপের মাধ্যমে পরিস্রুত জল সরবরাহ করা হবে। সে জন্য অজয় নদের পাড়ে রতনপুর মৌজায় তৈরি হবে পাম্প হাউস ও ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট। পাইপ লাইনের মাধ্যমে আসা সেই জল জমা করার জন্য (একটি বড় ও একটি ছোট) দু’টি জলাধার তৈরি হচ্ছে দুবরাজপুর শহরে। ১১ লক্ষ ৯০ হাজার লিটার ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন জলাধারটি তৈরি হবে পাহাড়েশ্বরের কাছে। ১ লক্ষ ৫০ হাজার লিটার ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন অন্য জলাধারটি তৈরি হবে সিনেমাহলের কাছাকাছি। ওই প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা তিন বছর। পুর-কারিগরি দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র দিলীপবাবু বলেন, “নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ কারার ব্যাপারে আমরা আন্তরিক থাকব।” |