তসলিমা নাসরিনের লেখায় (‘পুং পুজো’, রবিবাসরীয়, ২৭-১০) সিঁদুর খেলার কথা পড়ে একটা পুরনো অভিজ্ঞতা মনে পড়ে গেল। ঘটনাটা ২০০৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশভিল শহরে দুর্গাপুজোয় ঘটেছিল। ন্যাশভিল-এ পুজোর আয়োজন আমায় চমৎকৃত করেছিল। হিন্দু-মুসলিম-খ্রিস্টান সব ধর্মের সমন্বয় হয়েছিল হিন্দুদের এক উৎসবকে কেন্দ্র করে। কিন্তু হতবাক হয়েছিলাম উচ্চশিক্ষিত ও মার্কিন মুলুকে বসবাসকারী ওই ‘আধুনিক’ ললনাদের সিঁদুর খেলা দেখে। বুঝেছিলাম, মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার কাজে ব্যাপৃত থাকলেও বঙ্গললনারা আসলে বঙ্গললনাই। এই নিয়ে কলকাতার একটি সংবাদপত্রে একটি চিঠি পাঠাই। সেটি ছাপা হয় এবং ন্যাশভিল-এর বঙ্গতনয়-তনয়াদের গোচরে আসে। |
কালী পুজোয় আবার যখন আমি সেই মন্দিরে সেই জনতার মাঝে গিয়ে পড়ি, তখন আমার দিকে অজস্র বাক্যবাণ ছুটে আসতে থাকে এই মর্মে যে, দেশে সর্বত্র শিক্ষিত-অশিক্ষিত নির্বিশেষে মেয়েরা সিঁদুর খেলে থাকে ইত্যাদি। এমন গঞ্জনার তিরে তখন আমি বস্তুত ধরাশায়ী। আমার দীনতা কবুল করেছিলাম। বলেছিলাম, কলকাতার পুজো প্যান্ডেল বাইরে থেকে দেখি। শিক্ষিত রুচিশীল মানুষ সিঁদুর খেলায় মাততে পারে, এটা আমার বোধ ও বুদ্ধির অগম্য বলেই এমনটা লিখেছি। এ কথা বলার পর ছাড় পেয়েছিলাম, তা-ও এই শর্তে যে, কলকাতায় ফিরে দুর্গাপুজোয় আমি যেন মনোনিবেশ করি এবং ভুল স্বীকার করে লিখি।
আমাকে তার পর প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে সিঁদুর খেলার দেখার জন্য ছুটতে হয়নি। প্রায় সব চ্যানেলের ছোট পর্দায় নানান কায়দায় সিঁদুর খেলার ধাষ্টামিতে আমি লজ্জা পেতেও ভুলে গেছি এখন। একটা কুৎসিত ন্যাকামো যখন মার্কেটিংয়ে সর্বত্রগামী গ্রহণযোগ্যতা পায়, টি আর পি বাড়াবার উপায় হিসেবে স্বীকৃত হয়, তখন ভয় হয় আমাদের সাংস্কৃতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে।
পাচু রায়। কলকাতা-৫৫
|
সম্প্রতি সাঁত্রাগাছি থেকে ফিরছিলাম রাত ১০-১৫ মিনিটের ডাউন আমতা-হাওড়া লোকাল ট্রেনে। ১০-৩৫ মিনিট নাগাদ ট্রেনটি যখন হাওড়া স্টেশনের ১৫ নং প্ল্যাটফর্মে ঢোকে, তখন তুমুল বৃষ্টি হচ্ছে। গোটা প্ল্যাটফর্মে সামান্য একটু অংশ বাদে কোথাও ছাউনি নেই। বাধ্য হয়েই শিবপুরগামী রোড-ব্রিজের নীচে দাঁড়িয়ে থাকি। এ দিকে রাত বেড়ে চলেছে, শ্রীরামপুরের ট্রেন ধরতে হবে। শেষে প্ল্যাটফর্মে নেমে পুরো ভিজতে ভিজতেই ১৪ নং প্ল্যাটফর্মের আচ্ছাদিত অংশে ঢুকে পড়ি।
১৯৮৩ থেকে ১৯৯৪ পর্যন্ত খড়্গপুর কলেজে অধ্যাপনা করেছি। এই সময়ের মধ্যেই ১৪ নং প্ল্যাটফর্মের আধুনিকীকরণ ও ১৫ নং প্ল্যাটফর্ম চালু হয়। অথচ ১৯৯৪ থেকে ধরলেও আজ প্রায় কুড়ি বছর হতে চলল, ১৪ নং প্ল্যাটফর্মের একটি বৃহদংশের এবং ১৫ নং প্ল্যাটফর্মটির জন্য কোনও বিস্তৃত ছাউনি তৈরি হল না। শীত-গ্রীষ্মে এবং বিশেষত সে দিনের মতো প্রবল বৃষ্টিতে যাত্রীদের মাথার উপর আচ্ছাদন তৈরি করতে এত বিলম্বের কারণ কী? সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষ এই ন্যূনতম চাহিদা পূরণের জন্য সত্বর ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
সৌমিত্রশংকর দাশগুপ্ত। শ্রীরামপুর, হুগলি
|
যশোধরা রায়চৌধুরী মেয়েদের দিকে ছেলেদের তাকানো নিয়ে কটাক্ষ করেছেন। (‘ওই দৃষ্টি থেকে...’, ৩-৯) লিখেছেন, ধর্ষণের সঙ্গে পথে-ঘাটে মেয়েদের দিকে ছেলেদের ওই তাকানোর মধ্যে কোনও তফাত নেই। মেয়েদের দিকে ছেলেদের সব তাকানোই কিন্তু অসৎ নয়। কোনও সুন্দরী মেয়ের দিকে রোমান্টিক দৃষ্টিতে তাকানো এবং তার সৌন্দর্য উপভোগ করার মধ্যে কি সত্যিই কোনও পাপ লুকিয়ে আছে?
অতীশচন্দ্র ভাওয়াল। কোন্নগর, হুগলি
|
‘স্মরণ’ প্রতিবেদনে (কলকাতার কড়চা, ৯-৭) লেখা হয়েছে, শেখর চট্টোপাধ্যায় থিয়েটার কমিউন-এর কর্ণধার ছিলেন। এটি ঠিক নয়। তিনি ছিলেন থিয়েটার ইউনিট-এর কর্ণধার।
মানসকুমার রায়চৌধুরী। কলকাতা-২৬ |