ঢিসুম ঢিসুম নয়, স্রেফ হাত নাড়াতেই হাততালিতে ফেটে পড়ল জনতা। যে সে নয়, হাত নাড়ছেন স্বয়ং দেব। বাংলা সিনেমার হিরোকে এত কাছ থেকে দেখে নিজেদের সামলাতে পারছিলেন না গ্রামবাসীরা। কালী সর্দার, রত্না সর্দাররেরা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি যে তাঁদের একেবারে হাতের নাগালে দাঁড়িয়ে কথা বলবেন দেব।
সন্দেশখালির ন্যাজাটের দুখিরামপুর গ্রামের হাড়দাড়াপাড়ার বাসিন্দা শ্রীপদ দাসের মাটির দেওয়াল আর খড়ের ছাউনি দেওয়া ছোট্ট কুড়ে ঘর। বারান্দার চাঁচে সুন্দর করে আলপনা দেওয়া। উঠোনের এক পাশে তুলসীতলা। অন্য দিকে, ধানের গোলার মাথায় ঝুলছে লাউ। ঘরের চালের মাথায় লঙ্কা, ডালের বড়ি শুকোতে দেওয়া হয়েছে। বাড়ির উঠোনের পাশে পড়ে রয়েছে মাছ ধরার জাল। এখানেই লোকেশন বেছেছেন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ‘চাঁদের পাহাড়’ সিনেমার পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। বুধবার সকালে লাবণি সরকার এবং দেবিকাকে নিয়ে শুটিং শুরু হয়। ছবির অ্যাসিস্ট্যান্ট একজিকিউটিভ প্রডিউসার রাহুল সাহা এবং পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় বলেন, তেতাল্লিশ দিন ধরে ছবির অধিকাংশটাই শুটিং হয়েছে সাউথ আফ্রিকার বিভিন্ন এলাকায়। |
দেশে থাকার সময়ে শঙ্করের বাড়ির কিছু দৃশ্যের শুটিঙের জন্য বোলপুরে কাজ করার পর বাকি অংশ বসিরহাটের টাকি এবং সন্দেশখালিতে করা হচ্ছে। সে জন্য ৮০ জনের একটি দল নিয়ে পরিচালক এসেছেন বসিরহাটে। ক্যামেরায় সৌমিক হালদার।
কথা বলতে বলতে দ্বিতীয় পর্বের শুটিং শুরুর সময় হয়ে যাওয়ায় ডাক পড়ে পরিচালকের। তখন শেষ বিকেলের আলো দেবের মুখে। লোকেশনে আসতেই চার দিক থেকে ‘দেব দেব’ করে আওয়াজ উঠল। জনতার দিকে এগিয়ে গেলেন দেব। কালো পাড়ের ধুতির উপর ঘিয়ে রঙের পাঞ্জাবি। কাঁধে কাপড়ের ব্যাগ, হাতে বই। অন্য সাজে দেবকে দেখে জনতা তখন উদ্বেল। তাদের সংযত করতে হয়রান পুলিশ। তা দেখে এগিয়ে এলেন দেব। জনতার দিকে হাত নাড়লেন, কথা বললেন, ছবি তুললেন তাদের। খুশি কয়েক হাজার জনতা। দেবের কথায়, ‘বসিরহাটের টাকি কিংবা সন্দেশখালিতে আমার প্রথম আসা। এখানকার মানুষ যে ভাবে আমাদের সাহায্য করছেন তাতে আমি আপ্লুত।’ কথার ফাঁকে শুরু হল শট। ‘অ্যাকশান!’ চিৎকার করতেই বেড়ার ধার থেকে বই হাতে বাবা কালীকিঙ্করের (তমাল রায়চৌধুরী) দিকে এগিয়ে এল শঙ্কর (দেব)। দু’চারটে কথা বলার পর কাট। পরিচালক বলে ওঠেন ‘দারুণ হয়েছে’। এ দিনের মতো শুটিং শেষ। অল্প দেখা, কিন্তু তাতে কী? দেবকে তো কাছ থেকে দেখা গেছে। তাতেই খুব খুশি জনতা। |