স্বপ্নাদেশ পেয়ে পুজো শুরু করেন স্থানীয় এক মুসলিম জমিদার। ১১৮০ বঙ্গাব্দের কথা। এখন ওই পুজোর আয়োজন হয় স্থানীয়দের উদ্যোগে। পুজোয় মেতে ওঠেন দুই সম্প্রদায়েরই মানুষ। ২৪০ বছর ধরে সম্প্রীতির আবহে অনুষ্ঠিত হয় মালদহের রতুয়ার লস্করপুরের পুজো। দেবী প্রতিমা গড়া হয় ১৩ হাতের। স্থানীয় ভাবে দেবী ড্যাডাং কালী বলেও পরিচিত।
রতুয়া ২ ব্লকে শ্রীপুর পঞ্চায়েতের লস্করপুরের ওই কালীপুজো সর্বজনীন হিসেবেই পরিচিত। এখন পুজো গাজল গামী ৮১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে হলেও শুরু হয়েছিল লাগোয়া পলাশতলা এলাকায়। কথিত রয়েছে, শ্রীপুর এলাকার জমিদার মহসিন চৌধুরী ওরফে কৌতু মিঁয়া স্বপ্নাদেশে জানতে পারেন যে মহানন্দায় মায়ের কাঠামো আটকে রয়েছে। তারপর সকালে ঘুম থেকে উঠেই তিনি নদী থেকে কাঠামো তুলে নিয়ে আসেন। ওই এলাকাটি তখন ছিল চাঁচল রাজার অধীনে। কালীপুজোর সময় প্রতিমা গড়ে পুজো শুরু করেন পলাশতলা এলাকায়। বহু বছর পুজো নিজের খরচেই করতেন জমিদার মহসিন চৌধুরী। তাঁর মৃত্যুর পর সেই পুজো বন্ধ হতে দেননি বাসিন্দারা। বাসিন্দারা পরে পুজো লস্করপুরে সরিয়ে নিয়ে যান। লস্করপুরে বিশাল এক গাছের তলায় তৈরি হয় মণ্ডপ। সেই গাছের নাম জানতে পারেনি বাসিন্দারা। তাই নিজেরাই নাম দিয়েছেন অচিন গাছ। সেই অচিন গাছের তলায় ১৩ হাতের ড্যাডাং কালীই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাঁধনে বেঁধে রেখেছেন বাসিন্দাদের।
স্থানীয় অধিকারী পরিবার সেই জমিদারের আমল থেকে প্রতিমা গড়ার কাজ করেন। রয়েছে পুজোর রাতে পাঁঠাবলির প্রাচীন সেই প্রথাও। পুজো কমিটির পক্ষে সম্পাদক অলক সরকার বলেন, “এখন কমিটি গড়ে ওই পুজো হয়। পুজোয় দু’দিন ধরে জমজমাট মেলা বসে। এছাড়া বাউল গান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকছে।” |