মন্দির ঘিরে থাকবে রকমারি আলো। মাঠে বসবে যাত্রার আসর। চলবে কুসান গান, ভাওইইয়া গানের আসর। সারাদিন চলবে নামসংকীর্তন। এ বার ১২৫ বছরে পা দিয়েছে কোচবিহারের মদনমোহন মন্দির। আর সে উপলক্ষে রাসমেলায় সেজে উঠবে মন্দির। এখন থেকেই মন্দির চত্বরে সে সবের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। মন্দিরের সাদা রং ফুটিয়ে তুলতে দিন রাত এক করে কাজ করছেন শিল্পীরা। মন্দিরের ভিতর থেকে আগাছা পরিষ্কার করে চারদিক পরিছন্ন করে তোলা হচ্ছে। বাজেট প্রায় ২ লক্ষ্য টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড সূত্রের খবর, গত বছর মন্দির চত্বরে অনুষ্ঠান, ধর্মশালায় দর্শনার্থীদের থাকার ব্যবস্থা নিয়ে বাজেট ছিল ৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। বোর্ড চেয়ারম্যান কোচবিহারের জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “প্রতি বছরই রাসমেলার সময় সেজে ওঠে মদনমোহন মন্দির। রীতি মেনে সব কিছুর আয়োজন করা হয়।” ১৬ নভেম্বর থেকে শুরু হবে রাসমেলা।
বোর্ড সূত্রের খবর, মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ ব্রাহ্ম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা কেশবচন্দ্র সেনের কন্যা সুনীতি দেবীকে বিয়ে করেন। এর পরেই ১৯৮৯ সালে রাজবাড়ি থেকে মদনমোহনের বিগ্রহ এনে কোচবিহার শহরে বৈরাগী দিঘির পাড়ে মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেন মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ। সেই সময় মা কালী, মা ভবানী, মা তারার বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করা হয়। সেই সময় থেকেই মন্দিরে শুরু হয় রাসযাত্রা উৎসব। রাসমেলা সেই সময় থেকে ওই দিঘির পাড়েই হয়ে আসছে। তার আগে অন্যত্র মেলা হত। প্রতি বছরই রাস মেলার সময় সেজে ওঠে মন্দির। মন্দিরের ভিতরে রাসচক্র তৈরি হয়। মন্দিরের মাঠে যাত্রা, গানের আসর বসে। ৫-৬টি যাত্রাপালার আসর, কীর্তন, বাঊল গান, ভাওইয়া গানের আসর বসে। সারা রাত ধরে মানুষ সে সব অনুষ্ঠান শোনেন। কোচবিহার ছাড়াও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা এবং অসম থেকে প্রচুর ভক্তের সমাগম হয় মেলায়। অনুষ্ঠান শেষে অনেকেই মন্দিরের ধর্মশালায় আশ্রয় নেন। দুপুরে মদনমোহনের প্রসাদ বিলি করা হয়। এ ছাড়াও ভগবান শ্রী কৃষ্ণের বিভিন্ন ঘটনা মূর্তির মাধ্যমে দেখানো হয়। ট্রাস্টি বোর্ডের অফিস কর্মী জয়ন্ত চক্রবর্তী জানান, ইতিমধ্যে মন্দির সংস্কারের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। গোটা মন্দির চত্বরকে নতুন করে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। |