বন্দর করুণাময়ী আদি কালীবাড়ির পুজো ৫৪৪ বছরে পা দিল। একসময়ে পুজো পারিবারিক হিসেবে প্রচলিত থাকলেও বর্তমানে তা সর্বজনীন। কথিত আছে, কালীপুজোর রাতে দেবীকে পুজো দিয়ে অঞ্জলি দিলে মনস্কামনা পূরণ হয়। সেই টানে প্রতিবছর কালীপুজোর রাতে কয়েক হাজার ভক্ত ওই পুজোয় অংশ নেন। কষ্টিপাথরের প্রাচীন স্থায়ী কালীমূর্তিটিকে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার সোনার অলঙ্কার পরিয়ে পুজো করা হয়। পুজো দায়িত্বে থাকা দুই পুরোহিত মৃত্যুঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়, পিন্টু চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পাঁচ পুরুষ ধরে আমাদের পরিবারের সদস্যরাই এই পুজো করে আসছেন। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। এ বছর দূরদূরান্ত থেকে আসা ভক্তদের জন্য মন্দির চত্বরেই থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
মৃত্যুঞ্জয়বাবু জানান, ১৪৭০ সালে কালীপুজোর রাতে পঞ্জাবের এক সাধু স্বপ্নাদেশ পান। তিনি হেঁটে রায়গঞ্জের বন্দর এলাকায় পৌঁছে একটি বটগাছের নীচে পঞ্চমুন্ডের আসন প্রতিষ্ঠা করে তান্ত্রিক মতে কালীপুজো শুরু করেন। সেই সময় সেখানে মূর্তি বা মন্দির ছিল না। ১৫২০ সালে ওই সাধুর মৃত্যুর পর তাঁর শিষ্যরা পুজো শুরু করেন। ১৮০৯ সালে সাধক বামাখ্যামার উত্তরসূরি জানকীনাথ চট্টোপাধ্যায় স্বপ্নাদেশ পেয়ে মন্দির তৈরি করে কষ্টিপাথরের কালীমূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেন। আদি কালীবাড়িতে সারাবছর ধরেই পুজো হলেও কালীপুজোর রাতে তান্ত্রিক মতে পুজোর আয়োজন করা হয়। ওই দিন সকাল ৬টা থেকে পুজো শুরু হয়। দিনভর মঙ্গলারতি, চণ্ডীপাঠ, রুদ্র চণ্ডীপাঠের পর লুচি, পায়েস, মিষ্টি ও খিচুড়ি দিয়ে অন্নভোগ দেওয়া হয়। সন্ধ্যায় সোনার মুকুট ও অলঙ্কারে সাজিয়ে মঙ্গলারতি। ভক্তরা অঞ্জলী দেন। রাত ১০টা ৫-এ মৃত্যুঞ্জয় ও পিন্টু তান্ত্রিক মতে পুজো শুরু করেন। রাত ১২টায় বলি। দু’টোয় খিচুড়ি, পায়েস, লুচি, চাটনি, পাঁচ ভাজা, শোল ও বোয়াল মাছের ঝাল রান্না দিয়ে বিশেষ ভোগ। ভোর ৬টা পর্যন্ত পুজো চলে। |