উত্তর দিনাজপুরের রূপাহার থেকে ডালখোলা পর্যন্ত প্রায় ৬০ কিলোমিটার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক মেরামতির দাবিতে আন্দোলনে নামল সিপিএম। বুধবার দলের কর্মী সমর্থকরা রায়গঞ্জের শিলিগুড়ি মোড়-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকার জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। সব জায়গায় সকাল ১০টা থেকে আধঘন্টা অবরোধ চলে। সিপিএমের দাবি, ইটাহার, রায়গঞ্জ, করণদিঘি, গোয়ালপোখর, চাকুলিয়া, ইসলামপুর ও চোপড়া থানার বিভিন্ন এলাকার ৩৬টি জায়গায় জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়েছিল। গত ২৫ অক্টোবর এই কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছিল সিপিএম। |
অবরোধের খবর পেয়ে এদিন প্রতিটি এলাকাতেই পুলিশ যায়। তবে কোথাও জোর করে অবরোধ তোলার চেষ্টা করেনি পুলিশ। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য সুবীর বিশ্বাস জানান, উত্তরপূর্ব ভারতের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের সড়ক যোগাযোগ ধরে রেখেছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। অথচ গত ৬ মাস ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ গুরুত্বপূর্ণ এই জাতীয় সড়কটি বেহাল। থাকলেও প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের হেলদোল নেই। গত সেপ্টেম্বর প্রশাসন আমাদের দ্রুত জাতীয় সড়ক মেরামতির আশ্বাস দিলেও এখনও পর্যন্ত সেই কাজ শুরু হয়নি। নিত্যযাত্রী, বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থে জেলাজুড়ে পথ অবরোধ করা হয়েছে। দলের জেলা সম্পাদক বীরেশ্বর লাহিড়ী বলেন, “এদিন প্রতীকি অবরোধ করা হল। অবিলম্বে সড়ক মেরামতির কাজ শুরু না হলে জেলাজুড়ে টানা ২৪ ঘন্টা জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হবে।”
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের মালদহ বিভাগের প্রকল্প অধিকর্তা মহম্মদ সইফুল্লা জানান, ওই রাস্তায় সংস্কারের টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে। খুব শীঘ্রই ৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দে মেরামতির কাজ শুরু হয়ে যাবে। চারলেন রাস্তা তৈরির কাজে জমি অধিগ্রহণে সমস্যার কারণেই সড়ক মেরামতির কাজ শুরু হতে দেরি হচ্ছে। রায়গঞ্জের কংগ্রেস সাংসদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা দাশমুন্সির দাবি, “জমি অধিগ্রহণে জটিলতা থাকলেও নভেম্বর মাসের মধ্যে জাতীয় সড়ক মেরামতির কাজ শুরু হবে। আমি সংশ্লিষ্ট দফতরে বহুবার কথা বলেছি।” সিপিএমের নাম না করে তাঁর কটাক্ষ, “সড়ক সারানোর সাফল্য দাবি করতেই কেউ কেউ আন্দোলনের নামে নাটক শুরু করেছে।” গত এপ্রিল মাস থেকে রূপাহার থেকে ডালখোলা পর্যন্ত জাতীয় সড়ক বেহাল। জাতীয় সড়কে এর হাত অন্তর অসংখ্য গর্ত ও খন্দে ভরে গিয়েছে। কোনও জায়গায় পিচের চাদর উঠে গিয়ে চাষের জমির চেহারা নিয়েছে। অভিযোগ, প্রতিদিন জাতীয় সড়কে যানজট ও দুর্ঘটনার জেরে নিত্যযাত্রীরা দুর্ভোগে পড়ছেন। বাস, ট্রাক ও ট্রেকার সহ বিভিন্ন গাড়ি বিকল হয়ে পড়ায় পরিবহণ মালিকেরাও ক্ষতির মুখে। ব্যবসায়ীরা ঠিকমতো পন্য আনা নেওয়ার কাজ করতে না পেরে লোকসানের মুখে পড়ছেন। জেলা বাস ও মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অশোক চন্দ ও জেলা চেম্বার অফ কর্মাসের সম্পাদক জয়ন্ত সোম বলেন, “নভেম্বর মাসের মধ্যে জাতীয় সড়ক মেরামতির কাজ শেষ না হলে বাস মালিক ও ব্যবসায়ীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেবে।” |