স্থায়ী চিকিত্সক নেই। নেই ফার্মাসিস্টও। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপি ব্লকের রামকিশোর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এই দশায় কার্যত নাকাল অবস্থা স্বাস্থ্যকর্মীদের। অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ সব জানা সত্ত্বেও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
বহুবছর আগে একটি একতলা ভবনে তৈরি হয়েছিল রামকিশোর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। সে সময়ে পাঁচ শয্যার এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে সব সময়ের জন্য এক জন চিকিত্সক ও স্বাস্থ্যকর্মী থাকতেন। সব ঠিকই চলছিল। কিন্তু বেশ কিছুদিন পর থেকে চিকিত্সক ও স্বাস্থ্য পরিষেবা খারাপ হতে শুরু করে। চিকিত্সক ও কর্মীর অভাবে বন্ধ রয়েছে রোগী ভর্তি করানো। অথচ এক সময়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মী ও চিকিত্সকদের জন্য তৈরি হয়েছিল ছ’টি একতলা ভবনের আবাসন। বর্তমানে সেই আবাসনও ভুতুড়ে বাড়ির চেহারা নিয়েছে। |
প্রায় এক বছর ধরে চিকিত্সক ও কর্মীর অভাবে ভুগছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টো অবধি খোলা থাকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে ১৫০ জন ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসে ভিড় করেন। নিয়মিত চিকিত্সক না পেয়ে সমস্যায় পড়ছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দা রহিমা বিবি, প্রদীপ হালদার, মমতা হালদারদের ক্ষোভ, রামকিশোর ও রাজারামপুর পঞ্চায়েতের কয়েক হাজার বাসিন্দা ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু স্থায়ী চিকিত্সক না থাকায় রাতদুপুরে রোগীকে নিয়ে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে ডায়মন্ডহারবার মহকুমা হাসপাতালে ছুটতে হচ্ছে। অন্য দিকে, ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে নার্সদের। রাখি দাস নামে এক নার্স জানান, প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মজুত থাকলেও সঠিক রোগ নির্ণয় না করে তা দেওয়া যাচ্ছে না রোগীদের। পরিষেবা দিতে সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। |
তবে অনেক আবেদনের পর ব্লক থেকে সপ্তাহে তিন দিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসছেন তিন চিকিত্সক। বাকি তিন দিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তিন জন নার্স স্বাস্থ্য পরিষেবা দিচ্ছেন। তাঁরা ছাড়া এখন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রয়েছেন এক জন আয়া ও এক জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। কিন্তু স্থায়ী চিকিত্সক এখনও অমিল। কুলপির ব্লক মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দুলাল সর্দার সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, “স্থায়ী চিকিত্সক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করার জন্য স্বাস্থ্য ভবন থেকে শুরু করে অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এখনও কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।” |