বাড়ির রান্নায় ব্যবহারের গ্যাস সিলিন্ডার হোটেলের কাজে ব্যবহারের অভিযোগে তা বাজেয়াপ্ত করল টাস্ক ফোর্স। মঙ্গলবার শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডে মৈনাক ট্যুরিস্ট লজের কাছে একটি খাবারের হোটেল থেকে ওই গ্যাস সিলিন্ডার বাজেয়াপ্ত করা হয়। এ দিন বিভিন্ন বাজারে অভিযান চালানোর পর ওই দোকানে গিয়েছিলেন টাস্ক ফোর্সের নেতৃত্বে থাকা ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সপ্তর্ষি নাগ এবং অন্যান্য প্রতিনিধিরা। হোটেলের রান্নায় বাড়ির গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার হচ্ছে দেখে তাঁরা তা বাজেয়াপ্ত করেছেন।
দোকানের মালিক বাসুমণি সিংহ বলেন, “বাড়ির রান্না হোটেলেই হয় বলে ওই সিলিন্ডার এখানে কখনও ব্যবহার করা হয়। তবে হোটেলের কাজে ব্যবহারের জন্য বড় সিলিন্ডার রাখার অনুমোদন তাদের রয়েছে।” সেই নথি অবশ্য এনে দেখাতে পারেননি। তা ছাড়া হোটেলের জন্য যে গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহ হয় তা অন্য ধরনের। এর পরেই টাস্ক ফোর্সের প্রতিনিধিরা সিলিন্ডারটি বাজেয়াপ্ত করেন। ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সপ্তর্ষি নাগ বলেন, “বাড়িতে ব্যবহারের জন্য অনেকেই চাহিদা মতো গ্যাস পান না। অথচ বাড়িতে ব্যবহারের গ্যাস হোটেলে রান্নার কাজে ব্যবহার হচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছিল। সে কারণেই এ দিন বিষয়টি ধরা হয়।”
পুজোর মরসুমে বাড়ির রান্নার কাজে ব্যবহার করার গ্যাস সিলিন্ডার হোটেলে ব্যবহারের ঝোঁক বাড়ে। বিভিন্ন ডিস্ট্রিবিউটর সংস্থা থেকে বাড়িতে যাঁরা গ্যাস সরবরাহ করেন তাদের কাছ থেকেও হোটেল মালিকদের অনেকে অবৈধ ভাবে সিলিন্ডার সংগ্রহ করেন। অথচ অনেকে বাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার সঠিক সময়ে পান না বলে অভিযোগ। হোটেলের কাজে বাড়ির গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবহার রুখতে পুলিশ প্রশাসনের তরফে তাই অভিযান জরুরি বলে মনে করেন ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন এবং গ্যাসের ডিস্ট্রিবিউটররা। ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের সিনিয়র এরিয়া ম্যানেজার সব্যসাচী মুখোপাধ্যায় জানান, বাড়ির রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার হোটেলের কাজে ব্যবহারের প্রবণতা রুখতেই বাড়ির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সংখ্যক সিলিন্ডার দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কারও বেশি লাগলে তাঁকে অতিরিক্ত দামে বাড়তি সিলিন্ডার কিনতে হবে। তিনি বলেন, “তার পরেও ডিস্ট্রিবিউটরের অফিসের কর্মী বা সিলিন্ডার সরবরাহকারীদের হাত হয়ে অনেক ক্ষেত্রে হোটেলে ব্যবহারের জন্য বাড়ির গ্যাস সিলিন্ডার যাচ্ছে। তা রুখতে প্রশাসনের তরফে এ ধরনের অভিযান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সব ক্ষেত্রে ডিস্ট্রিবিউটরদের গাফিলতি থাকলে আমরাও জরিমানা ধার্য করি।” খুব শীঘ্রই আইওসি’র তরফেও এ ব্যাপারে নজরদারি চালানো হবে বলে জানান ওই আধিকারিক। ডিস্ট্রিবিউটররাও প্রশাসনের ওই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। নর্থবেঙ্গল এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটর অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কৌশিক সরকার জানান, বাড়ির গ্যাস হোটেলের কাজে ব্যবহারের অনুমতি নেই। কিন্তু এই প্রবণতার জন্য কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা হয়ে থাকে। প্রশাসন এ দিন যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তা মাঝেমধ্যে হলে আরও ভাল হবে।” |