জল নেমেছে খানাকুলের দুই ব্লকে, টান গোখাদ্যে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খানাকুল |
খানাকুলের দু’টি ব্লকের প্লাবিত এলাকায় সবুজ ঘাস উধাও। খড়ও পচে নষ্ট হয়েছে। প্রয়োজনীয় খাবার মিলছে না গবাদি পশুর। গোখাদ্যের অভাবের পাশাপাশি বিক্ষিপ্ত ভাবে দেখা দিয়েছে রোগ-বালাই। কমে গিয়েছে দুধ উত্পাদন। পশু খাদ্যের জোগান এবং চিকিত্সা পরিষেবা নিয়ে উদ্বিগ্ন গোপালকেরা। সমস্যার সুরাহার দাবিতে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরে ভিড় করছেন তাঁরা।
দফতরের হুগলি জেলা উপ অধিকর্তা সোমনাথ মাইতি বলেন, “বানভাসি এলাকাগুলিতে পর্যাপ্ত ওষুধ, ভ্যাকসিন এবং পশুখাদ্য বরাদ্দ করা হয়েছে। বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু অসুখ হলেও সংক্রমণের ঘটনা ঘটেনি। বিভিন্ন গ্রামে শিবির করে চিকিত্সা এবং টিকাকরণ চলছে।” প্রাণিসম্পদ দফতর সূত্রের খবর, বন্যা পরবর্তী সময়ে গরুর হেঁসো রোগের আশঙ্কার কথা বিবেচনা করে প্রায় ১০ হাজার ভ্যাকসিন বরাদ্দ করা হয়েছে। এই ভ্যাকসিন-পিছু ২ টাকা করে দিতে হত। কিন্তু বন্যাকালীন পরিস্থতিতে সেটুকুও মুকুব করা হয়েছে।
দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, খানাকুল ১ ব্লকের ১৩টি পঞ্চায়েত এলাকায় গরুর সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার। তার মধ্যে প্লাবিত এলাকায় গরুর সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার। খানাকুল ২ ব্লকের ৯টি পঞ্চায়েত এলাকায় গরুর সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। যাদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার গরু বানভাসি এলাকার বলে দফতর সূত্রের খবর।
দুই ব্লকের প্রাণিসম্পদ দফতরের আধিকারিক সঞ্জয় মণ্ডল এবং কল্যাণ দে জানান, সবুজ ঘাস বা খড়ের চাহিদা না মিটলেও ব্লক-পিছু ২০০ বস্তা (বস্তা পিছু ৫০ কেজি) করে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার পাওয়া গিয়েছে। যেগুলি সংশ্লিষ্ট গোপালকদের দেওয়া হচ্ছে।
যদিও খানাকুল ২ ব্লকের মাড়োখানা গ্রামের এক গোপালক মানিক দলুইয়ের অভিযোগ, একটি গরুর জন্য সারা দিনে খাবার লাগে কম করে ১০-১২ কিলোগ্রাম। সরকারি ত্রাণ যে হারে পাওয়া যাচ্ছে, তাতে খড় বা অন্য খাবারের সঙ্গে গরু-পিছু ৪০০ গ্রাম করে দিতে বলছে প্রাণিসম্পদ দফতর। এ দিকে খড় অধিকাংশ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কয়েক দিন জলের তলায় থাকার ফলে মাঠঘাটে সবুজ ঘাসও নেই। গাছ-পালার পাতা খাইয়ে সামাল দেওয়া হচ্ছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ খড়ের দাবি করেছেন গোপালকদের অনেকেই। একই চাহিদার কথা বলেছেন খানাকুল ২ ব্লকের বানভাসি এলাকার অধিকাংশ গোপালকেরা।
বন্যা হলেই এই এলাকায় গোখাদ্যের সমস্যা হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় মানুষ। খানাকুল ২ প্রাণিসম্পদ দফতরের কর্তাদের অবশ্য দাবি, খড় বেশি নষ্ট হয়নি। তবুও খড়ের চাহিদার হিসাব নেওয়া হচ্ছে। |