দক্ষিণে দুর্যোগের কারণে উত্তরের একাধিক ট্রেন অস্বাভাবিক দেরিতে চলছে। সমস্যায় পড়েছেন কয়েক হাজার যাত্রী। কখন ট্রেন আসবে সে ব্যাপারে স্পষ্ট তথ্য না মেলায় নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের বাইরে অস্থায়ী আস্তানা বানিয়ে ফেলেছেন অনেক যাত্রীই। অপেক্ষারত দূরপাল্লার ট্রেনের যাত্রীদের ভিড়ে স্টেশনে পা ফেলাই প্রায় দায় হয়ে পড়েছে নিত্যযাত্রীদের। অনুসন্ধান কাউন্টারের সামনে উপচে পড়ছে ভিড়। সবারই প্রশ্ন তাঁর ট্রেনটির আর কত দেরি? এর সদুত্তর মিলছে না রেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকেও। তাতে ক্ষোভ বাড়ছে যাত্রীদের মধ্যে।
নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন এরিয়া ম্যানেজার পার্থসারথি শীল সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “দক্ষিণের দুর্যোগের কারণেই ট্রেনগুলি দেরিতে চলছে। দক্ষিণ ভারতগামী ট্রেনেই এই সমস্যা বেশি। দুর্যোগের প্রথম দিনেই ট্রেনগুলি যে দেরিতে চলেছে, সেই সময়ের ঘাটতি পূরণ করতে না পারায় সমস্যা রয়ে গিয়েছে। ট্রেনগুলিকে ওড়িশার বালাসোর হয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।” যাত্রীদের মধ্যে বেশির ভাগের বেঙ্গালুরু কিংবা চেন্নাই কিংবা হায়দরাবাদ যাওয়ার কথা। এর মধ্যে পরিবার নিয়ে গ্যাংটক ঘুরতে যান চেন্নাইয়ের আমোল সুব্রহ্মণ্যম। তিনি বলেন, “ডিব্রুগড়-যশবন্তপুরে হাওড়া যাব বলে ঠিক ছিল। সেখান থেকে বিমানে বেঙ্গালুরু যাওয়ার কথা থাকলেও সব ছকই ভেস্তে যাবে।”
যেমন গুয়াহাটি-বেঙ্গালুরু সুপার ফাস্ট ট্রেনটি সোমবার দুপুর ২টোয় আসার কথা ছিল। ট্রেনটি স্টেশনে পৌঁছেছে রাত ১ টায়। ওই ট্রেনে মাকে উঠিয়ে দিলেন বিশ্বজয় রাউত। কিন্তু দুশ্চিন্তা পিছু ছাড়ছে না তাঁর। তিনি জানালেন, ভাইয়ের বেঙ্গালুরুতে মাকে নামিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও, ওখানে পৌঁছাতে রাত হয়ে যাবে। সেটাই মূল চিন্তার কারণ তাঁদের।
দেরিতে চলছে গুয়াহাটি-এগমোর ট্রেনটিও। চেন্নাইতে চাকরির পরীক্ষা দিতে যাওয়ার কথা বাপন নন্দীর। তিনি দুশ্চিন্তায় ট্রেনের কারণে তাঁর চাকরি ভেস্তে না যায়। তিনি বললেন, “বার বার ফোন করে আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তবু সময় মত না পৌঁছলে কি যে হবে তা বুঝতে পারছি না।” রেল অনুসন্ধানের দায়িত্বে থাকা এক আধিকারিক জানালেন, “নিঃশ্বাস ফেলার সময় পাচ্ছি না। কাউন্টারের সমানে থেকে যাত্রীদের ভিড় সরছে না আজ তিন দিন হয়ে গেল।”
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন নয়, গুয়াহাটি সহ এই রুটের সমস্ত স্টেশনেরই একই হাল। এ দিকে যাত্রীর ভিড় রয়েছে নিউ কোচবিহার, আলিপুর দুয়ার সহ একাধিক স্টেশনে। উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের পক্ষ থেকে সমস্ত স্টেশনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বলে এ দিন জানানো হয়েছে।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website
may be copied or reproduced without permission.