একটি বেসরকারি বাসের কর্মীদের মারধরের অভিযোগে কালনা -মেমারি ভায়া বাঘনাপাড়া রুটের সমস্ত বেসরকারি বাস চালানো বন্ধ করলেন কর্মীরা। পুলিশ দোষীদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত তাঁরা বাস চালাবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বাসকর্মীরা জানিয়েছেন, সোমবার সকাল ৮টা কুড়ি নাগাদ মাতিশ্বর বাজার থেকে ওই বাসটি কালনা বাসস্ট্যান্ডের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। বাঘনাপাড়া পঞ্চায়েতের বিজাড়া এলাকায় বাসটিকে অতিক্রম করতে যায় একটি মোটরবাইক। কাঁচা রাস্তা থেকে পাকা রাস্তায় উঠতে গিয়ে চলন্ত বাসের সামনে এসে পড়ে মোটরবাইক চালক। বাসচালক কোনওরকমে বাসের ব্রেক চেপে বাসটি দাঁড় করালে বেঁচে যান মোটরবাইক আরোহী। বাসকর্মীরা দাবি করেছেন, ওই ব্যক্তির বাসটিকে অতিক্রম করার বিষয়টি বাসযাত্রীরা ভালো ভাবে নিতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে এক জন মোটরবাইক চালককে চড় মারেন বলে অভিযোগ।
|
বাসকর্মীরা আরও জানান, বাসটি কালনা বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছনোর পরই মোটরবাইক আরোহীর কিছু আত্মীয় জানতে চান বাস কখন স্ট্যান্ড ছেড়ে যাবে। বাসটি বেলা ১০টা ৪০ নাগাদ বিজাড়া এলাকার একটি লেদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কয়েকজন বাসটিকে দাঁড় করায়। অভিযোগ, এর পর বাঁশ নিয়ে এসে তাঁরা বাসের খালাসি স্বপন সর্দার, কন্ডাক্টর সন্দীপ রায় এবং চালক শম্ভু পাত্রকে মারধর করে। স্বপনবাবুর আঘাত ছিল সব চেয়ে বেশি। তাঁকে কালনা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কালনা -মেমারি রুটের বাসকর্মী আনসার আলি শেখ বলেন, “স্বপনের চোখে বিপজ্জনক ভাবে খোঁচা মারা হয়। এর আগেও ওই এলাকায় বাসকর্মীদের মারধর করা হয়েছিল। সোমবারের ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয়েছে। যতদিন না দোষীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত রুটে কোনও বাসই চালানো হবে না।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই রুটে সরকারি বাস চলাচল করে না। ফলে সারাদিন ধরে চলা ১০টি বেসরকারি বাসই ভরসা নিত্যযাত্রীদের। এই পরিস্থিতিতে বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। নিত্যযাত্রী সঞ্জীব ঘোষের কথায়, “কালনা শহরের একটি দোকানে প্রতিদিন ছানা বিক্রি করি। এর জন্য দুপুরে বাস ধরতে হয়। ফিরি রাতে শেষ বাসে। বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দীর্ঘ পথ সাইকেলে যাতায়াত করতে হচ্ছে।”
তৃণমূল প্রভাবিত আইএনটিটিইউসি -র কালনা ইউনিটের সভাপতি অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ঘটনায় বাসকর্মীরা ভীত। তাঁরা বাস চালাতে সাহস পাচ্ছে না। গোটা ঘটনা পুলিশের নজরে আনা হয়েছে। পুলিশ কী ব্যবস্থা নেয় তার জন্য একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করব। পুলিশ সক্রিয় না হলে বড়সড় আন্দোলনের কথা ভাবা হবে।” কালনা থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। |