মঙ্গলবার বর্ধমান শহর থেকে কিছু দূরে নবাবহাটের বাড়িতে বসে কাঁদতে-কাঁদতে ছাত্রীটির মা বলেন, “ছেলেগুলোকে দেখে তো আমার বেশ ভালই মনে হয়েছিল। কী করে বুঝব, ওরাই এমন করবে?” সোমবার পুলিশ যে তিন জনকে ধরেছে তাদের মধ্যে দু’জন, হাকিম আনসার ও শেখ সাবির নির্মীয়মাণ নার্সিংহোমে পাহারা দিত। তাদের বাড়ি নবাবহাটে। তৃতীয় জন, শেখ মিলন ওরফে ফরিদুদ্দিন কমলসায়রের বাসিন্দা। পুলিশের দাবি, এরা যে ধর্ষণ ও খুনে জড়িত, জেরাতেই তা স্পষ্ট। সাবিরের বাঁ হাতে একটি নখের আঁচড় রয়েছে। সেটি ওই ছাত্রীর নখের দাগ কি না, তা বুঝতে পরীক্ষা করানো হচ্ছে। |
দোষীদের শাস্তি চেয়ে মঙ্গলবার বিক্ষোভ হল শহরে। |
ময়নাতদন্তের যে প্রাথমিক রিপোর্ট পুলিশের কাছে এসেছে, তাতে বলা হয়েছে, ধর্ষণের পরে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় মেয়েটিকে। তবে কত জন ধর্ষণ করেছিল, তা বোঝার জন্য ফরেন্সিক পরীক্ষা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, ধর্ষণ করে খুনের এই ঘটনায় মোট ১২ জন জড়িত। তবে পুলিশ তা মানতে নারাজ। এ দিন তিন ধৃতকে বর্ধমান সিজেএম আদালতে তুলে ১২ দিনের জন্য হেফাজতে চায় পুলিশ। বিচারক আট দিনের পুলিশ হেফাজতে মঞ্জুর করেছেন।
পুলিশের দাবি, শুক্রবার রাতে নির্মীয়মাণ নার্সিংহোমে বসে দলবল জুটিয়ে তাস খেলছিল হাকিম আর সাবির। তাদের সামনে দিয়েই সাইকেল নিয়ে সেচবাঁধের রাস্তা ধরে ছাত্রীটি। সেখান থেকে মাত্র শ’চারেক মিটার গেলেই তার বাড়ি। কিন্তু নার্সিংহোমের পিছনের একটি পথ ধরে ছুটে গিয়ে মেয়েটিকে ধরে ফেলে ছ’জন। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। তার আর্ত চিৎকার কানে গিয়েছিল কাছাকাছি একটি সাবান কারখানার কর্মীদের। কিন্তু তাঁরা এসে কাউকে দেখতে পাননি। শনিবার খালে ছাত্রীটির সাইকেল, বইয়ের ব্যাগ, তার কাছেই মদের বোতল আর গুটখার প্যাকেট মেলে। রবিবার খালের জলেই বিবস্ত্র মৃতদেহ মেলে। ছাত্রীটিকে নির্মীয়মাণ নার্সিংহোমে টেনে এনে ধর্ষণ করা হয়েছিল না কি খালের পাড়েই, সে বিষয়ে পুলিশ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেনি। পুলিশ ওই নার্সিংহোমে তল্লাশি চালায়।
|