ফের মাটি ফুঁড়ে ধোঁয়া বেরোল বর্ধমানে কুলটির সাঁকতোড়িয়ায়। মাসখানেক আগে সেখানকার ১২ নম্বর বস্তি এলাকায় যেখানে বাড়ির উঠোন ফেটে জ্বলন্ত গহ্বরে তলিয়ে যান এক তরুণী, তার মিটার দুয়েক দূরেই সোমবার রাত থেকে ধোঁয়া বেরোয় বলে জানান বাসিন্দারা। ইসিএল কর্তৃপক্ষ জানান, ডোজার দিয়ে সেই ফাটল ভরাট করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সোমবার বিকেলেই এলাকায় নতুন করে কিছু ফাটল তাঁদের নজরে এসেছিল। ধসপ্রবণ এই এলাকায় এমন ঘটনা মাঝেমধ্যে ঘটে থাকে বলে বিষয়টিকে তাঁরা বিশেষ গুরুত্ব দেননি। কিন্তু রাতের দিকে সেই ফাটল দিয়ে সামান্য ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। তাতে চিন্তায় পড়ে যান এলাকার মানুষজন। মঙ্গলবার সেই ধোঁয়া বেশি মাত্রায় বেরোতে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তাঁরা। স্থানীয় বাসিন্দা অভিজিৎ আচার্য জানান, সঙ্গে সঙ্গে ইসিএলকে খবর পাঠানো হয়। ইসিএলের একটি বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। বিকেল থেকে ভরাটের কাজ শুরু হয়।
ঘটনাস্থল থেকে দু’কিলোমিটার দূরে ইসিএলের সদর কার্যালয়। ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় জানান, এক্ষেত্রে ডোজার দিয়ে মাটি ভরাট করাই একমাত্র বৈজ্ঞানিক পদক্ষেপ। কারণ, ফাটল দিয়ে বাইরের বাতাস ভূগর্ভে ঢোকা যত বন্ধ করা যাবে, ততই ভূগর্ভের আগুন আয়ত্তে আনা সম্ভব হবে। নীলাদ্রিবাবু বলেন, “গোটা এলাকাকে রক্ষা করতে আমরা ডোজার দিয়ে মাটি ভরাটের কাজ করছি।”
গত ২২ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা নাগাদ ওই ১২ নম্বর বস্তি এলাকার বাসিন্দা শেখ ইমতিয়াজের বাড়ির উঠোনে আচমকা মাটি ফেটে গর্ত তৈরি হয়। সেই সময়ে ঠিক সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিলেন ইমতিয়াজের মেয়ে বছর কুড়ির হেনা পারভিন। তিনি জ্বলন্ত ভূগর্ভে তলিয়ে যান। ইসিএল ও মহকুমা প্রশাসনের উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও ফাটল থেকে ৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপ ও কটূ গন্ধযুক্ত ধোঁয়া বেরিয়ে আসতে থাকায় তাঁরা কাজে নামতে পারেননি। চার দিন পরে ওই তরুণীর দেহ উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার ফের সেই এলাকায় ফাটলের ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকাবাসী। এ দিন পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যান আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস। তিনি বলেন, “বাসিন্দাদের ওই বিপজ্জনক জায়গা থেকে সরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। ইসিএলকে প্রয়োজন মতো ফাঁকা অংশে বালি ভরাট করার জন্য বলেছি।” |