আসন্ন উপ-নির্বাচনের জন্য আসানসোল ও কুলটি পুরসভার চারটি আসনের সব ক’টিতে প্রার্থী দিল কংগ্রেস ও তৃণমূল, দু’পক্ষই। মঙ্গলবার ছিল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। বামফ্রন্টও সব আসনেই প্রার্থী দিয়েছে। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ১ নভেম্বর। কংগ্রেস-তৃণমূল জোট পরিচালিত এই দুই পুরসভায় দু’পক্ষই মনোনয়ন জমা দেওয়ায় উপ-নির্বাচনে তাদের মধ্যে আসন সমঝোতা নিয়ে সংশয় আরও বেড়েছে।
আসানসোল পুরসভার ১, ৬, ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের মৃত্যু হওয়ায় অনেক দিন ধরেই সেই পদগুলি খালি পড়ে আছে। সবচেয়ে আগে খালি হয়েছে তৃণমূলের দখলে থাকা ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের পদ। এখানকার কাউন্সিলর বিনয় সরকার সাফাই ও নিকাশি দফতরের মেয়র পারিষদ ছিলেন। ১ ও ৪৭ নম্বর ওয়ার্ড দু’টি বামেদের দখলে ছিল। জিতেছিলেন যথাক্রমে আরএসপি-র দুই প্রার্থী বীরেন কর ও গৌতম মাজি। বীরেনবাবু আট মাস ও গৌতমবাবু প্রায় দু’মাস আগে মারা যান। কুলটি পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দিলীপ ধীবর দু’বছর আগে মারা যান।
এই দুই পুরসভার চারটি ওয়ার্ড দীর্ঘদিন ধরেই কাউন্সিলরহীন অবস্থায় থাকায় বিপাকে পড়েছিলেন মানুষজন। অভিযোগ, নাগরিক পরিষেবা প্রায় শিকেয় উঠেছিল। জঞ্জাল সাফাই, নিকাশি, রাস্তার আলো, রাস্তা কোনও বিষয়েই ঠিকমতো পরিষেবা পাচ্ছিলেন এলাকার নাগরিকেরা। অবশেষে উপ-নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন এলাকার নাগরিকেরা। মাস কয়েক পরেই ফের পুরভোট হওয়ার কথা থাকলেও অন্তত এই ক’দিন নাগরিক পরিষেবা ঠিক মতো পাওয়া যাবে বলে আশায় তাঁরা।
২০০৯ সালে এই দুই পুরসভাই দখল করেছিল কংগ্রেস ও তৃণমূল জোট। সেই জোট এখনও অটুট রয়েছে। আসানসোল ও কুলটিতে বোর্ড চালানোর ক্ষেত্রে কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে মাঝেমাঝে চাপা লড়াই চলেছে। কখনও তা প্রকাশ্যেও এসেছে। কিন্তু জোট ভাঙার রাস্তায় যায়নি কোনও পক্ষই। কিন্তু এ বার উপনির্বাচনে কংগ্রেস ও তৃণমূল দু’দলই সম্মুখসমরে নামার উপক্রম। দু’পক্ষই আপাতত প্রার্থী দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্তে অনড়।
সম্প্রতি আসানসোলে দলীয় কর্মিসভায় যোগ দিতে এসে প্রদেশ কংগ্রেস নেতা তথা আসানসোল-কুলটির পর্যবেক্ষক মনোজ পাণ্ডে বলেন, “আমরা সব ক’টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মনোনয়ন পর্ব মেটার পরে পরবর্তী কৌশল ঠিক করব।” তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) কার্যকরী সভাপতি ভি শিবদাসন আবার বলে দিয়েছেন, “আমরা সব আসনেই প্রার্থী দিচ্ছি। লড়াইয়ের ময়দান খোলা আছে। সেখানে বুঝে নেব।”
প্রকাশ্যে এ ভাবে লড়াই হলে জোটধর্মের কী হবে, সে প্রশ্নে মনোনয়ন প্রত্যাহার পর্ব মেটার আগে মন্তব্য করবেন না বলে জানান শিবদাসন। তবে দু’দলেরই একটি করে অংশ সমঝোতার রাস্তায় হাঁটতে চাইছেন বলে কংগ্রেস ও তৃণমূল সূত্রে খবর। তাঁদের দাবি, শেষবেলায় একটা সম্মানজনক চুক্তি হলেও হতে পারে।
উপ-নির্বাচনে কংগ্রেস-তৃণমূল জোটে কোনও রফাসূত্র বেরোল কি না, তা জানতে তাই এখন অপেক্ষা ১ নভেম্বর পর্যন্ত। |