ক্লাসঘরের ছাদ ভেঙে যাওয়ায় তিন দিন ধরে পঠনপাঠন বন্ধ পুরুলিয়ার নিতুড়িয়া ব্লকের হিজুলি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ছাত্রছাত্রীদের পড়ানোর বিকল্প ব্যবস্থা করে উঠতে পারেনি জেলা স্কুল শিক্ষা দফতর। জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) বৃন্দাবন দাস বলেন, “নিতুড়িয়া চক্রের অবর স্কুল পরিদর্শককে পঠনপাঠন শুরু করার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। সমস্যা মেটাতে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত সমিতি, সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।”
হিজুলি প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ১৪১। পুজোর ছুটির শেষ দিকে টানা বৃষ্টিতে তৃতীয় শ্রেণির ঘরের ছাদের বেশির ভাগ অংশই ভেঙে পড়েছিল। শুক্রবার স্কুল খুলে শিক্ষকেরা পরিস্থিতি দেখে পঠনপাঠন বন্ধ করতে বাধ্য হন। স্কুলের অবস্থা দেখে এসেছেন নিতুড়িয়ার অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সত্যজিৎ রায়। স্কুলটির প্রধান শিক্ষিকা তৃপ্তি পাঠক জানান, স্কুলের চারটি ক্লাসরুমই বেহাল। তার মধ্যে তৃতীয় শ্রেণির ঘরের ছাদের বেশির ভাগ অংশ ভেঙে যাওয়ায় অন্যান্য ক্লাসঘরেও পড়ুয়াদের পড়ানোর ঝুঁকি নেওয়া সম্ভব নয়। তাঁর কথায়, “একটি ঘরের ছাদ ভেঙেছে। কোন ভরসায় অন্য ক্লাসরুমে পড়ুয়াদের বসানো হবে? তাই শুক্রবার থেকে শিক্ষকেরা স্কুলে এলেও ছাত্রছাত্রীদের আপাতত আসতে বারণ করা হয়েছে।”
প্রায় তিন দশক আগে স্কুলের ওই চারটি ক্লাসঘর নির্মাণ করা হয়েছিল। তার পরে আর সংস্কার হয়নি। তৃপ্তিদেবী বলেন, “বিষয়টি জানিয়ে টানা দুই বছর ধরে সব মহলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে।” গ্রামবাসী তথা অভিভাবক পশুপতি রজক, চন্দন চট্টোপাধ্যায়দের ক্ষোভ, “আগেই স্কুলের ভবন সংস্কারের ব্যবস্থা করা হলে এই অবস্থা হত না।” কিছু অভিভাবক বলছেন, “ভাগ্যিস স্কুল ছুটির সময় ছাদ ভেঙেছিল! তাই রক্ষা পেয়েছে পড়ুয়ারা।” স্কুলের এই শোচনীয় দশার কথা জানে শিক্ষা দফতর। কিন্তু, প্রয়োজনীয় জমির অভাবে নতুন ভবন তৈরির কাজ করা যায়নি। অবর স্কুল পরিদর্শক সত্যজিৎবাবু জানান, স্কুলের মধ্যে বা পাশে জমি না থাকায় নতুন ভবন নির্মাণ করা সম্ভব নয়। একমাত্র উপায় পুরানো ক্লাসঘর ভেঙে নতুন ভাবে গড়া। তাঁর দাবি, ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে প্রস্তাব সর্বশিক্ষা মিশনের কাছে দেওয়া হয়েছে। যদিও অভিভাবকদের বক্তব্য, কবে পুরনো ঘর ভেঙে নতুন ঘর গড়া হবে, সেই অপেক্ষায় থেকে তো অনির্দিষ্ট কাল ধরে বাচ্চাদের পড়াশোনা বন্ধ করে রাখা যায় না। সত্যজিৎবাবু বলেন, “আজ, মঙ্গলবার গ্রামে অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দারে সঙ্গে আলোচনায় বসে বিকল্প পথ খোঁজা হবে।” জেলা স্কুল পরিদর্শকের অবশ্য আশ্বাস, “উপযুক্ত ঘর পাওয়া গেলে তার ভাড়ার ব্যবস্থা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ থেকে করা হবে।” |