বড়জোড়ার গ্রামে দেওয়াল ধসে মা-মেয়ের মৃত্যু, ক্ষোভ
লাগাতার বৃষ্টিতে নরম হয়ে যাওয়া মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হল মা ও শিশুকন্যার। রবিবার রাতে বড়জোড়ার সাহারজোড়া গ্রামের ঘোষপাড়ার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হলেন কাজল ঘোষ (২৬) ও তাঁর মাস ছ’মাসের মেয়ে তনুশ্রী। ওই ঘটনায় জখম হয়েছেন কাজলদেবীর স্বামী তারকনাথ ঘোষ এবং তাঁদের আর এক কন্যা ইতু।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই দম্পতি ও তাঁদের দুই মেয়ে মাটির দেওয়াল আর খড়ের ছাউনির বাড়িতে ঘুমোচ্ছিলেন। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে দেওয়াল নরম হয়ে গিয়েছিল। রাত ১টা নাগাদ তা ধসে পড়ে। খবর পেয়ে গ্রামবাসীরাই চার জনকে উদ্ধার করে প্রথমে বড়জোড়া ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও পরে বাঁকুড়া মেডিক্যালে নিয়ে যান। কাজলদেবী ও তনুশ্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান চিকিৎসকেরা। তারকনাথবাবু ও ইতু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সোমবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন বড়জোড়ার বিধায়ক আশুতোষ মুখোপাধ্যায়। তাঁকে দেখে ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

বৃষ্টিতে নরম হয়ে যাওয়া দেওয়াল ভেঙে পড়েছে। —নিজস্ব চিত্র।
এই গ্রামে বেশ কিছু বিপিএল পরিবারের বাস। প্রায় সকলেরই মাটির দেওয়াল ও খড় বা টালির চালার বাড়ি। তাঁদের অভিযোগ, গ্রামের কেউই বাড়ি বানানোর জন্য ইন্দিরা আবাস যোজনার টাকা পাননি। গ্রামের বাসিন্দা দিলীপ ঘোষের বাড়ির এক পাশের দেওয়ালও বৃষ্টিতে ভেঙে পড়েছে। তিনটি দেওয়ালের উপর ভর করে কোনও মতে টিকে রয়েছে বাড়ির চালা। পরিস্থিতি এমনই যে কোনও সময় ধসে পড়তে পারে বাড়ি। দিলীপবাবুর ক্ষোভ, “বাড়ি বানানোর সামর্থ আমাদের নেই। সরকারি টাকা পেলে হয়তো পারব। কিন্তু, বিপিএল হলেও আমরা বাড়ির টাকা পাইনি।” বৃষ্টিতে নরম হয়ে যাওয়া মাটির দেওয়ালের বাড়িতে রাত কাটাচ্ছেন রামপদ ঘোষ, নিখিল ঘোষ, কালীপদ ঘোষদেরও। কেউ কেউ ধস ঠেকাতে বাড়ির ছাউনিতে কাঠের ঠেক দিয়েছেন। কিন্তু, তাতেও ভরসা হচ্ছে না। তাঁদের কথায়, “যে কোনও সময় বাড়ি ধসে প্রাণ যেতে পারে। ঘরের বাইরে যে রাত কাটাব, তারও উপায় নেই। কারণ গ্রামে প্রায় রোজ রাতে হাতি হানা দে। আমাদের ঘরে-বাইরে বিপদ!” স্থানীয় বিধায়ক আশুতোষবাবু সঙ্গে এ দিন বারবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। বড়জোড়া বিডিও ইস্তেয়াক আহমেদ খান বলেন, “বিপিএল পরিবারগুলির মধ্যে যারা খুবই দরিদ্র, ইন্দিরা আবাস প্রকল্পে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়ে থাকে। এই গ্রামের বিপিএল পরিবারগুলি কেন ওই যোজনার টাকা পায়নি, তা খতিয়ে দেখব।”
জেলার বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দফতর সূত্রের খবর, নিম্নচাপের জেরে গোটা বাঁকুড়া জেলায় ৭৩৮টি বাড়ি পুরোপুরি ভেঙে গিয়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি বাড়ি। ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক বিজয় ভারতী।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.