চব্বিশ ঘণ্টা আগেই তিনি বুদ্ধ সার্কিটে স্টিয়ারিং হাতে আগুন ছুটিয়েছেন। কিন্তু কলকাতার ট্র্যাফ্রিকে স্টিয়ারিং হাতে থাকা ড্রাইভারদের দেখে সোমবার চক্ষু চড়কগাছ তাঁর! ফর্মুলা ওয়ানের ট্র্যাকের ধাঁধায় অভ্যস্ত চোখ দুটোয় বিস্ময় ধরা পড়ছিল স্পষ্ট। ঝুঁকি নিয়ে শহরের ব্যস্ত রাস্তায় অন্য ড্রাইভারদের গতি তোলার ‘স্কিল’ বেশ উপভোগও করলেন তিনি লুইস হ্যামিল্টন।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’-এর দূত হয়ে রবিবার রাতেই শহরে পৌঁছে গিয়েছিলেন ফর্মুলা ওয়ানের প্রাক্তন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। দুঃস্থ বাচ্চাদের শিক্ষার মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনাই সংস্থাটির লক্ষ্য। গোটা দেশে তাঁদের ১৩টি শাখা। যার একটি সিটি অব জয়-এ। এ দিনই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি তাদের ‘গ্লোবাল অ্যাম্বাসাডর’ করল হ্যামিল্টনকে। |
আট বছর হয়ে গেল ভারতে আসছেন ফর্মুলা ওয়ানের ব্রিটিশ মহাতারকা। বুদ্ধ সার্কিটের জন্মের আগে থেকেই। তবে মাদার টেরিজা-র শহরে পা রাখা এ বারই প্রথম। হ্যামিল্টনের বাবাও ইংল্যান্ডে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। নিজে সমাজসেবায় জড়িত থাকতে চাইলেও সময়াভাবই ছিল বড় বাধা। রবিবার নয়ডার রেস শেষ হওয়ার পর কিছুটা সময় পেয়েই সুযোগটা তাই আর নষ্ট করতে চাননি। রাতেই সটান চলে আসেন কলকাতায়।
এবং সোমবার সকাল সাতটা থেকেই ছুটলেন শহরের তিন প্রান্তে। কখনও বারাসতের গোয়ালঘাটায় এক ইটভাঁটায়, তো ঘণ্টাকয়েক পরেই সেন্টস জেমস স্কুলে। তারাতলা রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন বস্তিতেও যান। রেললাইনের পাশেই ঝুপড়িতে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বড় হয়ে ওঠা শিশুদের কাছে তখন তিনি ‘লুইসদা’। যে শিশুদের অন্ধকার থেকে একটু একটু করে শিক্ষার আলোয় আনতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে চান বিখ্যাত ফর্মুলা ওয়ান চালক। বস্তির এক শিশু রাধার সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন হ্যামিল্টন। হলুদ বাসের মধ্যে গড়ে তোলা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির ভ্রাম্যমান শিক্ষা কেন্দ্রও পরিদর্শন করেন।
পরে সাংবাদিকদের হ্যামিল্টন বলেন, “এ রকম কিছু কাজ করার সব সময় ইচ্ছে ছিল আমার। চাই এ রকম কাজে নিজের ভাবমূর্তিকে কাজে লাগাতে। আমার মতো অন্যরাও এগিয়ে আসুক। আগে খুব বেশি সময় পেতাম না। চেষ্টা করব এ বার সময় বার করার। ভবিষ্যতে এ রকম আরও কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে।” |