১৯৯ আর ২০০ জীবনের শেষ দু’টো টেস্টে সচিন তেন্ডুলকর বড় রান পান কি না পান, তাতে তাঁর এককালের এক দীর্ঘ সতীর্থের কিস্যু এসে যায় না! তিনি— রাহুল দ্রাবিড় আজ বলে দিলেন, সচিন গত চব্বিশ বছর ধরে যে দায়বদ্ধতা নিয়ে নাগাড়ে ভারতীয় ক্রিকেটের সেবা করেছেন, নিজের শেষ টেস্ট সিরিজে তিনি যেন তার যোগ্য বিদায়-সম্মান পান। “আমি শুধু চাই ও যেন ওর শেষ দু’টো টেস্ট ম্যাচ চুটিয়ে উপভোগ করে। শেষ দু’টো টেস্টে সচিন কত রান করল সেটা কোনও ব্যাপারই নয়। আশা করব, ওই দুটো টেস্ট ওর কাছে দুর্দান্ত মুহূর্ত হয়ে থাকবে। আর প্রচুর আনন্দ দেবে ওকে। আমি ওকে শুধু বলতে চাই সচিন, অল দ্য বেস্ট। চব্বিশ বছর ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য যা-যা করেছ তার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ বন্ধু,” বলেছেন দ্রাবিড়। যাঁর সঙ্গে জাতীয় জার্সিতে সচিন তাঁর সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন।
শেষ দু’টেস্টে সচিনের সম্ভাব্য স্কোর নিয়ে দ্রাবিড় কেন আদৌ চিন্তিত নন? “ও এমনই একজন প্লেয়ার, যে কোনও দিন নিজের স্ট্যান্ডার্ড নীচে নামতে দেয়নি। সেই পনেরো থেকে চল্লিশ বছরে পৌঁছেও ক্রিকেটের প্রতি সচিনের ভালবাসা একই রকম অফুরন্ত। সামনের মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ওর স্কোর নিয়ে আমি মাথা ঘামাতে চাই না। তবে ও যদি শেষ দু’টেস্টে ভাল পারফরম্যান্স করে ক্রিকেটজীবনকে বিদায় জানায় তা হলে আমার খুব ভাল লাগবে।” সঙ্গে দ্রাবিড় আরও যোগ করেছেন, “ওর পরিবার, এমনকী মা-ও এই সিরিজ দেখতে মাঠে আসবেন। ফলে এই দু’টো টেস্টের তাৎপর্য ওর কাছে আরও বেশি।”
সচিন তাঁর নিজের প্রজন্মের তো বটেই, সম্ভবত ক্রিকেটের ইতিহাসেই সবচেয়ে আলোচিত ক্রিকেটার, সবচেয়ে বেশি কথা লেখা হয়েছে সচিনকে নিয়েই, জানিয়ে দ্রাবিড়ের ইঙ্গিত সচিনের অবসরের পর তাঁর বিশাল জুতোয় পা গলানোর মতো প্রতিভা ভারতীয় ক্রিকেটে হয়তো আছে বিরাট কোহলির। “বেশ কিছু তরুণ প্রতিভা এই মুহূর্তে ভারতীয় ক্রিকেটে আছে। বিশেষ করে বিরাটের দিকে তাকালে মনে হয়, ও একটা আলাদা ধরনের শক্তি। একদিনের ম্যাচে তো বটেই, এখন এমনকী টেস্ট ম্যাচেও চমকপ্রদ ওর ব্যাটিং পারফরম্যান্স।”
সচিন যে আজ বা কাল ব্যাট তুলে রাখতে চলেছেন সেটা শেষ কয়েক বার তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতে আন্দাজ করেছিলেন বলে জানাচ্ছেন দ্রাবিড়। বলেছেন, “এ রকম একটা সিদ্ধান্ত ও খুব তাড়াতাড়ি নিতে চলেছে সম্প্রতি বুঝতে পারছিলাম। সচিনের অবসর আমার কাছে অপ্রত্যাশিত নয়। একজন এত খেলার পর, চল্লিশ বছরে পৌঁছে তো বুট জোড়া তুলে রাখার কথা ভাববেই। এটাই খেলোয়াড়দের জীবন। একটা নির্দিষ্ট সময়ের পরে থামতেই হয়।” তবে সচিনের সেরা ইনিংস বাছতে গিয়ে কুলকিনারা পাচ্ছেন না দ্রাবিড়। “যে লোকটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি করেছে, তার থেকে একটাকে স্পেশ্যাল বেছে নেওয়া অসম্ভব। আমার কাছে সচিনের পুরো কেরিয়ারটাই স্পেশ্যাল!” |