|
|
|
|
বেহাল ডেবরা-সবং রাস্তা |
টাকা অমিল, কাজ বন্ধ ঠিকাদারের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ডেবরা |
একবার কাজ শুরু হয়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। স্থানীয় দুষ্কৃতীরা তোলা চাইছে অভিযোগে ফিরে গিয়েছিল ঠিকাদারি সংস্থা। ফের নতুন ঠিকাদারি সংস্থাকে কাজ দেওয়া হয়েছে। এ বার টাকার অভাবে কাজের গতি রুদ্ধ। পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা থেকে সবং যাওয়ার রাস্তার হাল আর ফিরল না।
ঠিকাদারি সংস্থার দাবি, পূর্ত দফতরের কাছে তাঁদের ২৫ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। বকেয়া টাকা না পেলে কাজ করা যাচ্ছে না। বকেয়া থাকার কথা অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন পূর্ত দফতরের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার তপন সাহা। তাঁর কথায়, “ওদের ২২ কোটি টাকা পাওনা। আরও ৬ কোটি টাকার কাজ হয়ে গিয়েছে। মাসখানেক আগেই আমরা টাকা চেয়েছি। টাকা না পাওয়ায় দিতে পারিনি।”
রাস্তাটি কিন্তু যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। এই রাস্তা দিয়েই সবং, পিংলা, ময়না রুটের বাস চলাচল করে। এছাড়াও ওই সমস্ত এলাকার পণ্যবাহী লরিও যাতায়াত করে। খানাখন্দে ভরা রাস্তায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটত। অবশেষে সবংয়ের বিধায়ক মানস ভুঁইয়ার হস্তক্ষেপে ‘সেন্ট্রাল রোড ফান্ডে’ ডেবরা থেকে সবং থানা পর্যন্ত ২৬.৭০ কিলোমিটার রাস্তা নতুন করে তৈরির জন্য ১০৪ কোটি টাকা বরাদ্দ হয় বছর খানেক আগে। রাস্তার পাশাপাশি গোদাবাজার, ফতেপুর ও বাড়জীবনে তিনটি সেতুও করার কথা। |
|
ডেবরা কলেজের সামনে রামপ্রসাদ সাউয়ের তোলা ছবি। |
বছর খানেক আগে কাজ শুরু হলেও ঠিকাদারি সংস্থা ‘স্যাক্স বি’র সঙ্গে স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতীর ঝামেলায় তা বন্ধ হয়ে যায়। ফের নতুন করে ‘ভারত বাণিজ্য’ নামে একটি সংস্থাকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়। চার মাস আগে ওই ঠিকাদারি সংস্থা কাজ শুরু করে। সবং থেকে বালিচক পর্যন্ত রাস্তার বেশিরভাগটাই সংস্কার হয়েছে। তবে এখনও পিচ দেওয়ার কাজ বাকি। অর্থাত্ আসল কাজটাই বাকি থেকে গিয়েছে। দ্রুত পিচ না দিলে বৃষ্টির জলে ফের খানাখন্দ তৈরি হবে। আবার নতুন করে সংস্কারের পর পিচ দিতে হবে। এতে খরচও বাড়বে।
এ দিকে, বালিচক থেকে ডেবরা পর্যন্ত রাস্তার কোনও কাজই হয়নি। সংস্কারের জন্য রাস্তার ধারে বালি রাখা রয়েছে। ফলে ওই রাস্তাটি পুরোটাই খানাখন্দে ভরা। খন্দ এড়িয়ে চলার উপায় নেই। বৃষ্টির সময় জলে ভরে যাওয়ায় বোঝা কঠিন কোথায় কত বড় গর্ত রয়েছে। ডেবরার বাসিন্দা বাদল রানা, চঞ্চল প্রধানেরা বলেন, “এক বছর ধরে শুনছি রাস্তা হবে, হবে। কাজ শুরুও হল। কিন্তু এগোচ্ছে কোথায়? এ ভাবে চলতে থাকলে তো কয়েক বছর লেগে যাবে।”
ঠিকাদারি সংস্থার দাবি, তাঁরাও দ্রুত গতিতেই কাজ করতে চান। সংস্থার এক কর্তার কথায়, “টাকা না থাকলে পাথর দেবে কে? দিনে কমপক্ষে ১৫০ লরি পাথর প্রয়োজন। খাদানে কোটি কোটি টাকা দেনা। ফলে এখন ৫০-৬০ লরির বেশি পাথর আনতে পারছি না। পিচ তো কেউ ধারে দেবে না। সেখানে অন্তত ১০ কোটি টাকা প্রয়োজন।” সংস্থাটি দাবি করেছে, যদিও কাজটি ২০১৫ সালের মার্চ মাসে শেষ করার কথা, তবু সময়ে টাকা পেলে ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসের মধ্যেই রাস্তা সংস্কারের কাজ শেষ হয়ে যাবে।
টাকার অভাবে রাস্তার কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার অভিযোগ ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী অস্কার ফার্নান্ডেজকে অভিযোগ জানিয়েছেন মানসবাবু। রাজ্যের পূর্ত দফতরের সচিব ইন্দিবর পান্ডের সঙ্গেও তিনি কথা বলেছেন বলে জানিয়েছেন মানসবাবু।
রাজ্যের পূর্ত দফতরের এক সূত্রে জানা গিয়েছে, যে ঠিকাদার সংস্থাকে কাজের ভার দেওয়া হয়েছিল তারা এক বছরের মধ্যে কাজ শুরু করতে পারিনি। সেই ঠিকাদার সংস্থাকে কালো তালিকা ভুক্ত করা হয়েছে। নতুন দরপত্র আহাবান করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই ডেবরা-সবং সড়ক তৈরির কাজ শুরু হবে। |
|
|
|
|
|